ঢাকারবিবার , ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বরিশালে তীব্র শীতে শিশু রোগীর ঢল : বেড সংকটে শের-ই-বাংলা হাসপাতালে হাহাকার, ভর্তি ১,২২৮

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
ডিসেম্বর ২৮, ২০২৫ ১:২৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশালে তীব্র শীতে শিশু রোগীর ঢল : বেড সংকটে শের-ই-বাংলা হাসপাতালে হাহাকার, ভর্তি ১,২২৮।

 

শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বরিশালে শিশু রোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কিওলাইটিস, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া ও শ্বাসতন্ত্রের নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন গড়ে ৫০ থেকে ৬০ জন শিশু ভর্তি হচ্ছে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুটি শিশু ওয়ার্ডে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত ২১ ডিসেম্বর থেকে ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় দিনে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে মোট ১ হাজার ২২৮ জন শিশু। বর্তমানে দুটি ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে প্রায় ৩০০ শিশু, যেখানে বেডের সংখ্যা মাত্র ৪১টি। ফলে তীব্র বেড সংকটের কারণে একটি বেডে দুই থেকে তিনজন শিশুকে রেখেই চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।

শিশু ওয়ার্ডে দায়িত্বরত একাধিক নার্স জানান, নবজাতক থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের শিশু ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসছে। বেশিরভাগ রোগীই গ্রামাঞ্চল থেকে আসছে। অনেক ক্ষেত্রে গ্রামে ফার্মেসি বা গ্রাম্য চিকিৎসকের কাছ থেকে ওষুধ নিয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসা করেও সুস্থ না হয়ে শেষ পর্যন্ত হাসপাতালে আসছে শিশুরা। এতে রোগ জটিল আকার ধারণ করছে এবং চিকিৎসায় সময়ও বেশি লাগছে।
তারা জানান, যদি অভিভাবকরা শুরুতেই শিশুদের ঠান্ডাজনিত সমস্যায় হাসপাতালে আনতেন, তাহলে অনেক ক্ষেত্রে গুরুতর অবস্থা এড়ানো সম্ভব হতো। এজন্য শিশু অসুস্থ হলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।
শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন সানজিদার মা জানান, ঝালকাঠির কাঠালিয়া থেকে তারা হাসপাতালে এসেছেন। তার চার বছর বয়সী মেয়ের জ্বর কোনোভাবেই কমছিল না। গ্রাম্য চিকিৎসক ও ফার্মেসি থেকে ওষুধ নিয়েও কাজ না হওয়ায় শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিন দিনের চিকিৎসায় শিশুর অবস্থা অনেকটা ভালো হয়েছে বলে জানান তিনি।

একই অভিজ্ঞতার কথা জানান অভিভাবক আবু মুসা। তিনি বলেন, “গ্রামে চিকিৎসা করাতে গেলে তুলনামূলক কম খরচ হয় বলে প্রথমে সেখানেই যাই। কিন্তু ওষুধে কাজ না করলে পরে উপজেলা হাসপাতাল হয়ে বরিশালে আসতে হয়। এখানে আসার পর ভালো চিকিৎসা পাচ্ছি, যদিও কিছু ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হয়েছে।”

শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. একেএম মশিউল মুনীর বলেন, শীতের কারণে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে ৫০ থেকে ৬০ জন শিশু ভর্তি হচ্ছে। বেড সংকট থাকলেও চিকিৎসায় কোনো ধরনের গাফিলতি হচ্ছে না বলে তিনি দাবি করেন।

এদিকে বরিশাল আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক মিলন হাওলাদার জানান, শুক্রবার বরিশালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ ছিল ২৩ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত কয়েক দিন ধরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ দশমিক ১ ডিগ্রির আশপাশে থাকায় শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, শনিবার মধ্যরাত থেকে রোববার দুপুর পর্যন্ত মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা আগামী পাঁচ দিন অব্যাহত থাকতে পারে। তবে এ সময়ে বৃষ্টিপাত বা শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা নেই।