নিজস্ব প্রতিবেদক :: ঝালকাঠিতে প্রবাসীর স্ত্রীর ঘরে আ.লীগ নেতার মরদেহ, নারী আটক
ঝালকাঠিতে প্রবাসীর স্ত্রীর ঘরে এক আওয়ামী লীগ নেতা খুন হয়েছেন। এ ঘটনায় ওই নারীকে আটক করে পুলিশ। সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে জেলা শহরের কৃষ্ণকাঠি এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
নিহত শাহ আলম ওরফে রিপন মল্লিক (৫০) পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন বলে দলটির জেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তরুণ কুমার কর্মকার জানান।
স্থানীয়রা জানান, রাজনীতির পাশাপাশি রিপন মল্লিক জায়গা-জমি কেনাবেচাও করতেন। রিপন জমি বিক্রির দেড় লাখ টাকা পেতেন বলে আটক নারী পুলিশকে জানান।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মহিতুল ইসলাম জানান, জমি বেচাকেনাকে কেন্দ্র করে একই এলাকার সৌদি আরব প্রবাসী এক ব্যক্তির স্ত্রীর সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠে রিপন মল্লিকের। প্রায়ই ওই নারীর বাসায় যাতায়াত করতেন রিপন। তেমনি সোমবার রাতেও রিপন ওই নারীর বাসায় যান।
পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক ওই নারী দাবি করেছেন, ঘরে একা পেয়ে শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করলে নিজেকে বাঁচাতে দরজা আটকানোর লম্বা খিল দিয়ে রিপনের মাথায় আঘাত করেন তিনি। এতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন রিপন। ঘটনা আঁচ করতে পেরে এগিয়ে আসেন আশপাশের লোকজন। পরে রিপনকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
একই এলাকার হারিছ হোসেন বলেন, রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই নারী তার ঘরের ভেতর থেকে ডাক-চিৎকার দিচ্ছিল। এসময় আমিসহ আশপাশের মানুষ ঘরে ঢুকে দেখি, রিপন মল্লিক অর্ধ উলঙ্গ অবস্থায় মেঝেতে পড়ে আছেন। সবাই মিলে তারে সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। পরে ডাক্তার জানান, রিপন মারা গেছে।
নিহতের ভাই সমির মল্লিক বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে ফোনে আমার ভাইয়ের মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার খবর পাই। তারপর আমি ওই নারীর ঘরে এসে দেখি, মেঝেতে রক্ত লেগে আছে। আর আমার ভাইকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে। তখন ওই নারী তার ঘরেই বসা ছিল।”
নিহতের স্বজনদের দাবি, জমি কেনার টাকা না দেওয়ার জন্যই পরিকল্পিতভাবে বাসায় ডেকে নিয়ে রিপন মল্লিককে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেছেন স্বজনরা।
অপরদিকে ওই নারীর বোনের ছেলে জানান, তার খালা-খালু রিপন মল্লিকের কাছ থেকে জমি কেনেন। সে সুবাদে খালার বাসায় রিপন মল্লিকের আসা-যাওয়া ছিল।তিনি আরও বলেন, তবে ঘটনার দিন রিপন মল্লিক কেন খালার ঘরে গিয়েছিলেন তা আমাদের জানা নেই।
স্থানীয়রা জানান, প্রবাসীর স্ত্রীর এক ছেলে আছেন। পেশাগত কারণে তিনি প্রায়ই ঢাকায় থাকেন। তখন বাড়িতে ওই নারী একাই থাকতেন।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি জানিয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।