ঢাকাবুধবার , ১৮ অক্টোবর ২০২৩
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ইসরাইল-গাজা সংঘর্ষ কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূত্রপাত করতে পারে

admin
অক্টোবর ১৮, ২০২৩ ২:২৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

গাজা ভূখণ্ডে ইসরাইলের সম্ভাব্য অভিযানের দিকে এখন সবার নজর। এই সংঘাত কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে মোড় নেবে? হামাস কি টিকে থাকতে পারবে শেষ পর্যন্ত? মিসরই বা কেন মুসলমান প্রতিবেশীদের প্রবেশপথ বন্ধ করে রেখেছে?

সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা পাঠকদের কাছ থেকে এরকমই শত শত প্রশ্ন পেয়েছে বিবিসি। তারা জানতে চান, যে এই সংঘর্ষের পরিণাম কি হবে, এর প্রভাব কতখানি পড়তে পারে এবং অন্য দেশগুলো এই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তে পারে কিনা?

এই মুহূর্তে বিবিসির যে সাংবাদিকরা ইসরাইল-গাজার রণাঙ্গনে রয়েছেন, সেখান থেকেই তারা পাঠকদের সবচেয়ে বেশি জানতে চাওয়া কিছু প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।

ব্রিটেনের স্কেলমাসদেল থেকে ক্রেইগ জনসন জানতে চেয়েছেন, যদি ইরান সরাসরি এই সংঘর্ষে জড়িত হয়, তাহলে কি যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্র দেশগুলোও যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে? এর ফলে কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা হতে পারে?

জবাবে বিবিসির আন্তর্জাতিক সম্পাদক জেরেমি বোয়েন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে যখন জানতে চাওয়া হয়েছিল যে, ইরান বা তার লেবাননি মিত্র হেজবুল্লাহ গোষ্ঠীর এই যুদ্ধে অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা আছে কী না, তার উত্তরে তিনি বারবার বলেছেন যে, তারা যেন কিছুতেই এর মধ্যে না ঢোকে।

ইরানকে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত থাকার কড়া বার্তা দিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি দুটি যুদ্ধবিমান বহনকারী জাহাজ পাঠিয়েছে পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে।

যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, যদি কেউ এতে হস্তক্ষেপ করে, তাহলে তাদের শুধু ইসরাইল নয়, মার্কিন সৈন্যদের মোকাবিলাও করতে হবে।

মধ্যপ্রাচ্যের একটি অংশ যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্রদের দ্বারা পরিচালিত হয়। অন্য অংশটির ওপর প্রভাব রয়েছে ইরান ও তাদের সমর্থক গোষ্ঠীর।

যুদ্ধের ঝুঁকি সম্পর্কে উভয় পক্ষই সচেতন। তারা এও জানে, স্নায়ু যুদ্ধ থেকে যদি তা সম্মুখ সমরে পরিণত হয়, তাহলে তা মধ্যপ্রাচ্যের সংঘর্ষকে আরও বড় করে তুলবে এবং সারা বিশ্বেই তার প্রভাব পড়বে।

‘স্কটিশ বর্ডার্স’ এলাকা থেকে লুসিয়ানো সিসি জানতে চেয়েছেন, ‘যে স্থলযুদ্ধের আশঙ্কা করা হচ্ছে, তার পেছনে ইসরাইলের মূল উদ্দেশ্য কী?’

বিবিসির আন্তর্জাতিক সংবাদদাতা লিজ ডুসেট উত্তরে বলেন, অতীতের যুদ্ধগুলোতে ইসরাইল ‘হামাসকে কঠোরভাবে আঘাত করার’ অঙ্গীকার করেছিল, যাতে তাদের পক্ষে ইসরাইলে রকেট নিক্ষেপের ক্ষমতা ধ্বংস হয়ে যায়। সেই সঙ্গে তাদের ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গগুলোও যাতে ধ্বংস হয়।

কিন্তু এবারের ব্যাপারটা অন্যরকম। ইসরাইল ‘হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার’ অঙ্গীকার করছে এবং এমনভাবে তারা হামাসকে সমূলে উপড়িয়ে ফেলতে চায়, যেমনটা করা হয়েছির ইসলামিক স্টেটকে।

হামাসের অবকাঠামো ধ্বংস করা, সুড়ঙ্গ গুঁড়িয়ে দেওয়া এবং তাদের কমান্ড ও কন্ট্রোল নেটওয়ার্ককে পঙ্গু করে দেওয়ার মতো সামরিক শক্তি ইসরাইলের রয়েছে।

তবে গাজায় কী অপেক্ষা করছে সে সম্পর্কে ইসরাইল কতটুকু জানে তা স্পষ্ট নয়। ইসরাইলি নিরাপত্তা সম্পর্কে অভাবনীয় রকম নিখুঁত তথ্য, যা দিয়ে তারা ইসরায়েলের শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ভেঙ্গে দিতে পেরেছে, হামাসের সেই সামরিক শক্তি ইসরাইলিদের হতচকিত করে দিয়েছে।

হামাসও সম্ভবত একইরকমভাবে প্রস্তুত কারণ তারা ভাল করেই জানে যে ইসরাইলের দিক থেকে কী হিংস্র প্রতি আক্রমণ হবে।

তবে ইসলামিক স্টেট গ্রুপের থেকে হামাস কিছুটা আলাদা। হামাস হলো এমন একটি সংগঠন যারা রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবেই ফিলিস্তিনি সমাজের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে।

একটি সামরিক আক্রমণ হয়তো তাদের অবকাঠামো বা স্থাপনা বিধ্বস্ত করতে পারে কিন্তু তাদের পুরো শক্তিকে ধ্বংস করতে পারবে না। এর ফলে হামাসের অনেক সদস্য হয়তো আদর্শের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করার ইচ্ছা আরও জোরালো হয়ে উঠবে।