ঢাকাবুধবার , ১১ ডিসেম্বর ২০২৪
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বরিশাল কারাগারের ভা*ঙা দেয়ালে টিনের বেড়া, হু*ম*কিতে নিরা*পত্তা

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
ডিসেম্বর ১১, ২০২৪ ১২:৫৬ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিজস্ব প্রতিবেদক  :: বরিশাল কারাগারের ভা*ঙা দেয়ালে টিনের বেড়া, হু*ম*কিতে নিরা*পত্তা।

অপ্রয়োজনীয় অনেক বিষয়ে বরাদ্দের অভাব নেই অথচ অতিপ্রয়োজনীয় উন্নয়নের বেলাই বরাদ্দ না থাকেনা। নানা অজুহাতে আটকে আছে কারাগারের উন্নয়ন। বর্তমানে ভাঙা দেয়ালে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে বরিশাল কারাগারের নিরাপত্তা। এছাড়াও কারাগারের ভিতরের কয়েকটি ভবনও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। অনায়াসে ছিদ্র করা যাচ্ছে দেয়াল। আর ছিদ্রপথে কয়েদিদের কাছে পান-সিগারেট বিক্রির মুখরোচক গল্প প্রচলিত নগরজুড়ে। সরেজমিনে সোমবার বিকালে এ চিত্র দেখা গেছে বরিশাল কারাগার সংলগ্ন থানা সড়ক বা লাইন রোড দিয়ে যাতায়াতের পথে। বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার সংলগ্ন পুকুর পাড়ের দেয়াল কয়েক জায়গায় ভেঙে পড়েছে। যা নিয়ে মাসচারেক আগে স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রচার করা হলে তড়িঘড়ি টিনের বেড়া দিয়ে জোড়া দেয়া হয়েছে বলে জানালেন স্থানীয় পুস্তক ব্যবসায়ী কামাল। জানা গেছে, এই দেয়ালটি কারাগারের প্রায় ২০ একর জায়গাকে বেষ্টন করে আছে। জেলখাল সংলগ্ন দেয়ালেরও একই অবস্থা। অহরহ টোকাই শ্রেণির ছেলেমেয়ে ভিতরে ঢুকে আবার বের হয়ে যাচ্ছে। যদিও কর্তৃপক্ষ বলছেন এই দেয়ালের সাথে জেলখানার কয়েদিদের কোনো সম্পর্ক নেই। তাদের বেষ্টনী আলাদা।

কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, ব্রিটিশ আমলে নগরীর হাসপাতাল রোডের নাজির মহল্লা সংলগ্ন ২০ একর জায়গার উপর প্রতিষ্ঠা করা হয় কেন্দ্রীয় কারাগার। ৬শ’ পুরুষ ও ৩৩ জন নারী বন্দি ধারণক্ষমতার এ কারাগারে রয়েছে ৪তলা ও ৩ তলা বিশিষ্ট দুটি ভবন। কারাগারে ৫টি বন্দি ভবন, ৫৮ বেডের ১টি কারা হাসপাতালে একজন চিকিৎসক সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রয়েছেন। ১টি কিশোর ওয়ার্ড, ১টি লাইব্রেরি, ১২টি সেল, ১টি ক্যান্টিন ও সিনিয়র জেল সুপার, জেলার, ডেপুটি জেলারের জন্য আবাসিক ভবন এবং পুরুষ ও নারী কারারক্ষীদের জন্য রয়েছে পৃথক পৃথক ব্যারাক। বর্তমানে এ কারাগারে সিনিয়র জেল সুপার, জেলারসহ মোট ৩৩৪ জন বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী দায়িত্বে রয়েছেন। এদের মধ্যে ২৫১ জন পুরুষ কারারক্ষী ও ১১ জন মহিলা কারারক্ষী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এসব কারাক্ষীসহ স্টাফদের বছরে ৪১ দিন ছুটিভোগ নিশ্চিতসহ তাদের ক্লাবঘরে টেলিভিশন, ফ্রিজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিগত সরকারের শাসনামলে এই কারাগারকে আধুনিকায়ন করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও তা আর খুব একটা এগোয়নি। বর্তমানে জেল সুপার ও জেলারদের বাসভবনও সংস্কার জরুরী বলে জানা গেছে। অনেক ভবনের পলেস্তারা খসে পড়ছে বলেও শোনা গেছে। এছাড়াও কয়েদিদের চাপ বেড়ে যাওয়ায় ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত কয়েদি রয়েছে বরিশাল কারাগারে। কয়েদিদের জন্য জরুরি ঘরের প্রয়োজন জানিয়ে জেলার জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া বলেন, জেলখানার নিরাপত্তা দেয়াল ভেঙে পড়া নিয়ে ইতিপূর্বেই গণপূর্ত দপ্তরে জানানো হয়েছে। তবে পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকায় এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে জানতে পেরেছি। ভিতরে ভবনের অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, মোটামুটি আছে। তবে কিছু কিছু সংষ্কারের প্রয়োজন রয়েছে।

 

বিষয়টি সম্পর্কে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বরিশাল সুশীল সমাজের বেশ কয়েকজন প্রতিনিধি। তারা বলেন, প্রতিদিন অসংখ্য দিবস পালিত হচ্ছে। এসব দিবস উদযাপন করতে কি টাকা লাগে না, এমনি এমনি হয়ে যায়। এসব খাতে বরাদ্দ আছে কিন্তু জরুরী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কিংবা সড়কের উন্নয়ন কথা বললেই সংশ্লিষ্ট প্রশাসন বলছেন বরাদ্দ নেই। এটা খুবই দুঃখজনক।

এ বিষয়ে গণপূর্ত এর নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়সাল আলম বলেন, দেশের পট পরিবর্তনের কারণে বেশকিছু সংকট তৈরি হয়েছে। যে কারণে ডিসেম্বর পর্যন্ত কোনো বরাদ্দ না থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে টিনের বেড়া দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছে। নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে খুব শীঘ্রই এটির জন্য বরাদ্দ আসার সম্ভাবনা রয়েছে।