ঢাকাশুক্রবার , ১৮ জুলাই ২০২৫

কেন্দ্রীয় নির্দেশনা উ*পে*ক্ষা করে উজিরপুরে বিএনপি নে তা জিয়ার মোটর শোভাযাত্রা

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
জুলাই ১৮, ২০২৫ ৫:৫৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিউজ ডেস্ক :: মোটরসাইকেল বহর ও গাড়িসহ অন্য কোনো যানবাহনে শোভাযাত্রা না করার নির্দেশ দিয়েছিল বিএনপি। কিন্তু বিএনপির কেন্দ্রীয় সেই নির্দেশনা উপেক্ষা করে এখনো বিভিন্ন এলাকায় মোটর শোভাযাত্রা করে শোডাউন দিচ্ছেন নেতারা।

সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত মোটরসাইকেল নিয়ে শোডাউন করেছে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার বামরাইল ইউনিয়ন বিএনপির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ জিয়া আমিন রাড়ী। এরআগেও গত ২৯ জুন দিনভর মোটরসাইকেল শোডাউন করেছিলেন তিনি।

দলীয় সূত্র জানায়, দীর্ঘ একযুগ তিনি সাউথ আফ্রিকায় ছিলেন। গত ২২ জুন তিনি দেশে ফেরেন। এরপর বেশ কয়েকবার তিনি শতাধিক মোটর সাইকেল নিয়ে শোডাউন করেছেন।

বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান, দলীয় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও বার বার মোটরসাইকেল শোডাউন করেছেন মোঃ জিয়া আমিন রাড়ী। আর তার সাথে সহযোগীতা ও নেতাকর্মী নিয়ে অংশ গ্রহণ করছেন উজিরপুর উপজেলা জিয়া পরিষদের সভাপতি ও বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহাদুজ্জামান কমরেড। শোডাউনের সময় বিভিন্ন এলাকায় দাড়িয়ে নেতা-কর্মীরা শ্লোগান দিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা বিএনপির এক নেতা জানান, দেশের চলমান পরিস্থিতিতে দলীয় নেতাকর্মীদের মোটরসাইকেল বহর বা অন্য কোনো যানবাহনে শোডাউন না করতে কঠোরভাবে নির্দেশনা রয়েছে। গত ৮ সেপ্টেম্বর তৃণমূলসহ সব পর্যায়ের কমিটির কাছে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠায় বিএনপি। কিন্তু দলের কেন্দ্রীয় এই নির্দেশ আমলেই নেননি বামরাইল ইউনিয়ন বিএনপির অর্থ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ জিয়া আমিন রাড়ী।

তিনি বলেন, যে কোনো পরিস্থিতিতে দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে চলাই উত্তম। এভাবে দলের সিনিয়র নেতারা দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করলে তৃণমূলে বিএনপির রাজনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, ২০২৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটি, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও তৃণমূল পর্যায়ে চিঠি পাঠিয়ে শোডাউন বন্ধ করার নির্দেশনা দেয় বিএনপি।

দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা ওই চিঠিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি এবং এর সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাসহ সংশ্লিষ্ট সবার উদ্দেশে বলা হয়, ‘আপনাদের অধীনস্থ কোনো ইউনিটে সাংগঠনিক কাজের উদ্দেশ্যে সফরকালে কোনো মোটরসাইকেল বহর ও কারসহ অন্য কোনো যানবাহনে শোভাযাত্রা পরিহার করতে হবে। এসব শোভাযাত্রার কারণে পাশ দিয়ে চলাচলরত সাধারণ মানুষের যানবাহন বা পথচারীদের যাতায়াতে ভয়ানক বিঘ্ন ঘটে।

মোঃ জিয়া আমিন রাড়ীর একাধিক অনুসারী দাবি করেন, মূলত শোডাউনের কোনো পরিকল্পনা তাদের ছিল না। কিন্তু বিভিন্ন স্থানে কর্মসূচিতে যোগদানের জন্য মোটরসাইকেল নিয়ে যেতে হয়।

মোটরসাইকেল শোডাউনের বিষয়ে জানতে চাইলে বামরাইল ইউনিয়ন বিএনপির অর্থ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ জিয়া আমিন রাড়ী অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, আমাদের এলাকায় দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচি চলছে। স্বাভাবিকভাবে আমাদের নেতাকর্মীরা কর্মসূচি যাওয়ার সময় পরিবহন ব্যবহার করেছে। এটা কোনো মোটরসাইকেল শোডাউন বা শোভাযাত্রা নয়। কোনো ব্যক্তির শোডাউন হচ্ছে না।

এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সিনিয়ার যুগ্ন আহবায়ক এস এম আলাউদ্দিন বলেন- দেশের চলমান পরিস্থিতিতে দলীয় নেতাকর্মীদের মোটরসাইকেল বহর বা অন্য কোনো যানবাহনে শোডাউন না করতে কঠোরভাবে নির্দেশনা রয়েছে। মোঃ জিয়া আমিন রাড়ীর মোটর সাইকেল শোডাউনের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে তিনি মোটর সাইকেল শোডাউন করলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিএনপির দফতর সূত্র জানায়, বিগত কয়েক মাসে এক হাজারের বেশি নেতাকর্মীদেরকে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৫২৩ জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ, ৪৩৭ জনকে বহিষ্কার, ২৪ জনের পদ স্থগিত, ৩৫ জনকে সতর্ক এবং ৪ জনকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের নোটিশ দেওয়া হয়।