
নিজস্ব প্রতিবেদক :: নারায়ণগঞ্জ শহরের একটি ফ্ল্যাট থেকে শিশু সন্তানসহ এক দম্পতির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় শহরের বাবুরাইল বৌ বাজার এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে লাশ তিনটি উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ দেড়শ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা, স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে শ্বাসরোধে হত্যার পর গৃহকর্তা আত্মহত্যা করেছেন।
নিহতরা হলেন, হাবিব উল্লাহ শিপলু (৩৫), তার স্ত্রী মোহিনী আক্তার মিম (২৫) ও শিশু আফরান (৪)।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ বাবুরাইল এলাকার ঐ ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙ্গে ভেতর থেকে ৩ জনের লাশ উদ্ধার করে। চতুর্থ তলার একটি ফ্ল্যাটে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভাড়া থাকতেন শিপলু। দরজাটি বিকালে ভেতর থেকে বন্ধ পেয়ে স্থানীয়রা নিহতের আত্মীয়-স্বজনের উপস্থিতিতে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তিনজনের মরদেহ দেখতে পান।
২ কক্ষের ফ্ল্যাটের একটি কক্ষের মেঝেতে মিম ও আফরানের লাশ বালিশ চাপা দেওয়া অবস্থায় ছিল। অপর কক্ষে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় শিপলুর লাশ ঝুলছিল।
স্থানীয় ও নিহত শিপলুর স্বজনদের বরাত দিয়ে ওসি আরও বলেন, নিহত শিপলু বউবাজার এলাকার রমজান নামে এক ব্যক্তির মালিকানাধীন ‘বৌ বাজার সঞ্চয় তহবিল’ নামে একটি সমিতির ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার) ছিলেন। করোনা মহামারীর সময় সমিতিটি বন্ধ হয়ে যায়। সমিতির মালিক রমজান দীর্ঘদিন ধরে পলাতক। সদস্যদের টাকা দিতে না পারায় এ ব্যাপারে আদালতে একটি মামলাও চলমান রয়েছে। ফলে সমিতির গ্রাহকরা তাদের টাকা ফেরত পাবার দাবিতে নিহত শিপলুর ওপর চাপ সৃষ্টি করছিলেন। এদিকে, কোনো কাজ না থাকায় নিজেও ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন শিপলু। তিনি মানসিক অবসাদ থেকেই এই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে ধারণা পুলিশের।
ওসি আরও বলেন, শিপলু বাবুরাইলের স্থানীয় ছেলে। তাকে সবাই চেনে। সমিতির সমস্যা ছাড়া কারও সঙ্গে তার কোনো বিরোধ ছিল না বলে তার স্বজন ও প্রতিবেশীরা জানিয়েছে। তাছাড়া ফ্ল্যাটের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। স্থানীয়দের উপস্থিতিতে পুলিশ ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে।