
নিজস্ব প্রতিবেদক :: আসন উদ্ধারে মরিয়া বিএনপি, আশাবাদী অন্যরাও।
বরিশাল-৬ (বাকেরগঞ্জ) আসনে দীর্ঘদিন রাজত্ব করেছে বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি। এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। এ অবস্থায় আসনটি পুনরুদ্ধারে মরিয়া বিএনপি। তবে থেমে নেই ইসলামি দলগুলো। নতুন করে আধিপত্য বিস্তার করতে চাচ্ছেন তারাও।
এ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বরিশাল দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবুল হোসেন খানকে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী অধ্যাপক মাওলানা মাহমুদুন্নবী তালুকদার। আলোচনায় আছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস মনোনীত প্রার্থী মুহাম্মদ মিজানুর রহমান। বাধা না থাকলে জাতীয় পার্টিও নির্বাচনে অংশ নেবে বলে জানা গেছে।
১৯৭৩ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এ আসনে একটি উপ-নির্বাচনসহ ১২টি নির্বাচন হয়েছে। এরমধ্যে বিএনপি পাঁচবার, জাতীয় পার্টি চারবার ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের প্রার্থী তিনবার বিজয়ী হয়েছে।
বিএনপির প্রার্থী আবুল হোসেন খান জাগো নিউজকে বলেন, ‘এখন একটি সুন্দর সময়। বর্তমানে আমাদের দলের মতো বড় দল মাঠে নেই। শুধু বাকেরগঞ্জ নয়, গোটা বাংলাদেশের সব আসন থেকেই বিএনপি জয়লাভ করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে নানা অন্যায়-অত্যাচার উপেক্ষা করেও মানুষের সঙ্গে ছিলাম, এখনো আছি। মানুষ আমাকে তাদের সেবা করার সুযোগ আবারও দেবে ইনশাআল্লাহ।’
জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীও এ আসনে বিজয়ী হতে শতভাগ আশাবাদী। দলটির প্রার্থী অধ্যাপক মাওলানা মাহমুদুন্নবী তালুকদার বলেন, ‘এবার যে ফ্রি-ফেয়ার নির্বাচন হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে ইতিহাসের সবচেয়ে সুন্দর নির্বাচন হবে, সেই প্রত্যাশাই আমাদের। ইনশাআল্লাহ জয় আমাদের হবে।’
নির্বাচনে অংশগ্রহণে কোনো বাধা না থাকলে জাতীয় পার্টির থেকে এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার ও নাসরিন জাহান রত্না আমিন দম্পতির যে কেউ এ আসন থেকে প্রার্থী হতে পারেন বলে জানা গেছে।
এ আসনের তরুণ ভোটার হাবিবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘বিগত দিনের মতো দিনের ভোট রাতে না হলে জেলার সবচেয়ে বড় উপজেলা বাকেরগঞ্জে ভোটের উৎসব দেখা যাবে। সেক্ষেত্রে জয়ী হতে হলে ভোটারদের মন জয় করতে হবে প্রার্থীদের। নিজেদের সৎ ও যোগ্য প্রার্থী হিসেবে উপস্থাপন করতে হবে।’
বাকেরগঞ্জ উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের বাসিন্দা প্রিন্স হাওলাদার জাগো নিউজকে বলেন, ‘গত ১৫ বছরে কেউ কোনো নির্বাচনে ভোট দিতে পারেনি। সবকিছু ঠিক থাকলে এবার ভোট কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি হবে আশানুরূপ।’
উপজেলার কলসকাঠি ইউনিয়নের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনে যে প্রার্থীই জয়ী হোক তাকে এলাকার উন্নয়নে কাজ করতে হবে। যিনি এলাকার উন্নয়নে কাজ করবেন জনগণ তাকেই বেছে নেবে।’
বরিশাল-৬ আসনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৯৭৩ সালে মোকিম হোসাইন হাওলাদার (আওয়ামী লীগ), ১৯৭৯ সালে সিরাজুল হক মন্টু (বিএনপি), ১৯৮৬ সালে এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার (জাতীয় পার্টি), ১৯৯১ সালে ইউনুস খান (বিএনপি), ১৯৯৫ সালের উপ-নির্বাচনে আব্দুর রশিদ খান (বিএনপি), ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে আনোয়ার হোসেন চৌধুরী (বিএনপি), জুনের নির্বাচনে সৈয়দ মাসুদ রেজা (আওয়ামী লীগ), ২০০১ সালে আবুল হোসেন খান (বিএনপি), ২০০৮ সালে এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার (জাতীয় পার্টি-এরশাদ), ২০১৪ ও ২০১৮ সালে এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারের স্ত্রী নাসরিন জাহান রত্না (জাতীয় পার্টি-এরশাদ) এবং সবশেষ ২০২৪ সালের নির্বাচনে মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ মল্লিক (আওয়ামী লীগ) নির্বাচিত হন।


