
নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশাল-৫ আসন : জামায়াত-চরমোনাই ঐক্য, কঠিন পরীক্ষায় বিএনপির সরোয়ার।
বরিশাল অঞ্চলের তিনটি আসনে শক্ত অবস্থান তৈরি করছে চরমোনাই পীরের দল ‘ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’। বিএনপি ও জাতীয় পার্টি থেকে আসা সাবেক দুই সংসদ সদস্যকে সামনে রেখে দলটি এবার বরিশাল-৫ (সদর), পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া) এবং পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ইসলামী আন্দোলনের এই ত্রিমুখী উপস্থিতি বিএনপির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
বিশেষ করে বরিশাল-৫ (সদর) আসনটি ঘিরে উত্তেজনা সবচেয়ে বেশি। বিএনপির ভোটের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এই আসনে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হচ্ছেন দলটির নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম। তার প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী পাঁচবারের সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক হুইপ ও সিটি মেয়র মজিবর রহমান সরোয়ার।
Advertisement
নিরপেক্ষ নির্বাচনে বরিশাল সদর আসনে কখনো পরাজিত হয়নি বিএনপি। তবে ইসলামী আন্দোলন এখানেও তাদের অবস্থান দৃঢ় করেছে। সাম্প্রতিক স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও সিটি ভোটে দলটির প্রার্থীরা নিয়মিতভাবে ৩০ থেকে ৩৩ হাজার ভোট পেয়েছেন। সর্বশেষ বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শেখ হাসিনার ফুপাতো ভাই খোকন সেরনিয়াবাতের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন ফয়জুল করিম। ভোট জালিয়াতি, হামলা ও মামলার মুখেও তিনি পান ৩৩ হাজারের বেশি ভোট।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এবার যদি ইসলামী আন্দোলনের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামী ও অন্যান্য ইসলামপন্থি দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়, তাহলে এই আসনে বিএনপির জয় পাওয়া কঠিন হতে পারে।
ইসলামী আন্দোলনের বরিশাল জেলা সভাপতি মাওলানা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী পাঁচবার সংসদ-সদস্য, মেয়র এবং হুইপ ছিলেন। সব মেলালে জনপ্রতিনিধি হিসাবে ২৫/৩০ বছর ছিলেন ক্ষমতায়। দীর্ঘ এই সময়ে কতটুকু উন্নয়ন হয়েছে বা বরিশালের জন্য কী করেছেন, এর উত্তর চাইবে এলাকার মানুষ। আমি মনে করি, এবার দল নয়, প্রার্থী দেখে ভোট দেবে ভোটাররা। ফয়জুল করিমের বিরুদ্ধে ঠিকাদারির পার্সেন্টেজ আদায়, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, হত্যার রাজনীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ নেই। বাকি সিদ্ধান্ত ভোটের মাঠে জনতার।’
মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব জিয়াউদ্দিন সিকদার বলেন, ‘নিরপেক্ষ নির্বাচনে এই আসনে কখনোই হারেনি বিএনপি। তাছাড়া সাধারণ মানুষ এবার স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিএনপির পক্ষে আছে। ইনশাল্লাহ এখানে ধানের শীষের বিজয় হবে।’
বরিশাল বিভাগে মোট ২১টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। এর মধ্যে অন্তত তিনটিতে তারা বিএনপির জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। বিশেষত বরিশাল সদর আসনে ‘জামায়াত-চরমোনাই ঐক্য’ যদি কার্যকর হয়, তবে সরোয়ারের জন্য এটি হবে রাজনৈতিক জীবনের অন্যতম কঠিন পরীক্ষা।


