ঢাকাবুধবার , ১৭ জুলাই ২০২৪

দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা ইউজিসির, শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
জুলাই ১৭, ২০২৪ ১২:৪৮ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিজস্ব প্রতিবেদক :: দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা ইউজিসির, শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ।

অনির্দিষ্ট কালের জন্য দেশের সকল পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। পাশাপাশি এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত মেডিকেল, টেক্সটাইল, ইঞ্জিনিয়ারিং ও অন্যান্য কলেজগুলো বন্ধের ঘোষণাও দেয়া হয়। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশনাও দেয়া হয়।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় ইউজিসি। এতে বলা হয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ থাকবে। একইসাথে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে হল ত্যাগ করে নিরাপদ আবাস্থলে অবস্থানের নির্দেশ প্রদান করা হলো।

 

এর আগে, মঙ্গলবার অনির্দিষ্টকালের জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সকল কলেজ ও প্রতিষ্ঠানসমূহও বন্ধ ঘোষণা করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের পরিচালক মো. আতাউর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এছাড়া, অনির্দিষ্টকালের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটসমূহের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। মঙ্গলবার রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ দফতর থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

 

এদিকে, সকল শিক্ষা বোর্ডের আগামী বৃহস্পতিবারের (১৮ জুলাই) এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়েছে। এক বিজ্ঞপ্তিতে আন্ত শিক্ষাবোর্ড সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার এ তথ্য জানান।

 

প্রসঙ্গত, গত রোববার কোটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর একটি বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে আন্দোলন পরিস্থিতি। চীন সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা কোটা পাবে না, তো কি রাজাকারের নাতিরা পাবে? বিচিত্র আমাদের দেশ, বিচিত্র আমাদের মানসিকতা— বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে এদিন রাতেই প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের প্রতিবাদ ও প্রত্যাহারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা।

পরদিন সোমবার কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে দুই পক্ষের শতাধিক আহত হন। এদিন রাতেই তারা ঘোষণা দেয়, আজ মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করার। ছাত্রলীগও দুপুরে পাল্টা প্রতিবাদ সমাবেশ করার ঘোষণা দেয়।

তবে, আজ দুই পক্ষের কর্মসূচি ছাপিয়ে সারাদেশে সংঘর্ষের ঘটনা-ই আলোচনায় আসে। এখন পর্যন্ত অন্তত ৬ জনের নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ঢাকায় ২, চট্টগ্রামে ৩ ও রংপুরে ১ জন নিহত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বহালে গত ৫ জুনে রায় দেন হাইকোর্ট। তবে, কোটাব্যবস্থা বাতিলে ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবি তুলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। গত ৭ জুলাই থেকে শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কারের দাবিতে অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি পালন করে। পরে গত ১৪ জুলাই রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপিও দেন তারা।

গত ১০ জুলাই হাইকোর্টের রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতিবস্থাও দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আগামী ৭ আগস্ট এ বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও সরকার পক্ষ থেকে আজ লিভ টু আপিল করা হয়েছে।

কোটা সংস্কারে শিক্ষার্থীদের এক দফা দাবি হলো:

সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে সকল প্রকার অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাশ করে কোটা পদ্ধতিকে সংশোধন করতে হবে।