ঢাকাসোমবার , ২৬ আগস্ট ২০২৪

প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় যে আমল করতেন নবীজি

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
আগস্ট ২৬, ২০২৪ ৬:৩৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

ধর্ম ডেস্ক :: প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় যে আমল করতেন নবীজি

দেশে চলমান বন্যায় ১১ জেলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৩ জনে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে বন্যায় মোট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫৫ লাখেরও বেশি মানুষ। সোমবার (২৬ আগস্ট) বেলা ১১টা পর্যন্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বন্যা পরিস্থিতির সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।এ ধরনের দুর্যোগে বিচলিত না হয়ে ধৈর্য ধারণ করা একজন মুমিনের জন্য কর্তব্য। মহান আল্লাহ কিছু কিছু বিপদ-আপদ দিয়ে মানুষকে সতর্ক করেন। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন,

 

আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জান, মাল ও ফলফলাদির ক্ষতির মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও। যারা, নিজেদের বিপদ-মুসিবতের সময় বলে, নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্য এবং নিশ্চয় আমরা আল্লাহরই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী, তাদের ওপরই রয়েছে তাদের রবের পক্ষ থেকে মাগফিরাত ও রহমত এবং তারাই হিদায়াতপ্রাপ্ত।(সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫৫-১৫৭)দুর্যোগের সময় করণীয় সুন্নত আমল
প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় কিছু সুন্নত আমল করার মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচার সুযোগ রয়েছে। হাদিস শরিফে আছে, যখন কোথাও ভূমিকম্প সংঘটিত হয় অথবা সূর্যগ্রহণ হয়, ঝোড়ো বাতাস বা বন্যা হয়, তখন সবার উচিত মহান আল্লাহর কাছে তওবা করা, তার কাছে নিরাপত্তার জন্য দোয়া করা, মহান আল্লাহকে স্মরণ করা এবং ক্ষমা প্রার্থনা করা। এ ক্ষেত্রে রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্দেশ দিয়ে বলেছেন,

দ্রুততার সঙ্গে মহান আল্লাহর জিকির করো, তার কাছে তওবা করো। (বুখারি: ২/৩০; মুসলিম: ২/৬২৮)

 

আল্লাহর জিকিরের সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে নামাজ পড়া, কোরআন তেলাওয়াত বা দোয়া-দরুদ পাঠ করা। দুর্যোগের সময় জিকিরের আরও উপায় হতে পারে ইস্তিগফার, তাসবিহ পাঠ ইত্যাদি। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, প্রচণ্ড ঝোড়ো হাওয়া বইলে রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে যেতেন এবং নামাজে মশগুল হতেন। (মিশকাত শরিফ: ৬৯৬)

 

হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, যখন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হতো এবং ঝোড়ো বাতাস বইত — তখন রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চেহারায় চিন্তার রেখা ফুটে উঠত। এ অবস্থা দেখে তিনি এদিক-সেদিক পায়চারি করতে থাকতেন এবং এ দোয়া পড়তেন, فِيهَا، وَخَيْرَ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا، وَشَرِّ مَا فِيهَا، وَشَرِّ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ (উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাহা ওয়া খাইরা মা-ফিহা ওয়া খাইরা মা-উরসিলাত বিহি, ওয়া আউজুবিকা মিন শাররিহা ওয়া শাররি মা-ফিহা ওয়া শাররি মা-উরসিলাত বিহি।)

 

অর্থ: হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে এ বৃষ্টির কল্যাণগুলো কামনা করছি, এই বৃষ্টিতে যেসব কল্যাণ রয়েছে সেগুলো কামনা করছি এবং এই বৃষ্টির মাধ্যমে প্রেরিত কল্যাণ প্রার্থনা করছি। আর  আর এ বৃষ্টি ও বৃষ্টির মাধ্যমে প্রেরিত সব রকম অকল্যাণ ও বিপদাপদ থেকে পরিত্রাণ চাই।এরপর যখন বৃষ্টি হতো– তখন রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শান্ত হতেন। আয়েশা (রা.) আরও বলেন, আমি রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছি যে লোকজন মেঘ দেখলে বৃষ্টির আশায় আনন্দিত হয়ে থাকে, আর আপনি তা দেখে চিন্তিত হয়ে পড়েন? এর জবাবে রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি এ ভেবে শঙ্কিত হই যে বৃষ্টি আমার উম্মতের ওপর আজাব হিসেবে পতিত হয় কি না। কেননা আগের উম্মতদের ওপর এ পদ্ধতিতে (বৃষ্টি বর্ষণের আকারে) আজাব পতিত হয়েছিল। (বুখারি: ৩২০৬; মুসলিম: ৮৯৯)