নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশাল মহিলা কলেজে অনুপস্থিতির কারনে নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি অনেক শিক্ষার্থীরা।
উপস্থিতির হার আশাব্যাঞ্জক না হওয়ায় বরিশাল সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষের নির্বাচনী পরীক্ষায় বেশিরভাগ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করতে পারেনি।
এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারা শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। যদিও এখন অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের বাহিরে প্রতিষ্ঠানের কারও পক্ষে কিছু করার সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা। তবে এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারলেও চূড়ান্ত পরীক্ষায় এর বিরূপ প্রভাব পড়বে না, তবে ইনকোর্স পরীক্ষায় যারা খারাপ করেছেন তারা অনুপস্থিতির কারণে কিছুটা সুযোগ হারিয়েছেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারা কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, গতকাল তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের টেস্ট পরীক্ষা ছিল। যেখানে আনুমানিক প্রায় দেড়শত শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি। আর যে সিদ্ধান্তের কারণে তাদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেয়া হয়নি, সেটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়, কলেজ কর্তৃপক্ষের একটি সিদ্ধান্ত।
এ বিষয়ে ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক প্রভাষ কুমার মন্ডল বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম রয়েছে শিক্ষার্থীরা ৭৫ শতাংশ ক্লাসে উপস্থিত না হলে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না, সেখানে আমরা কমিয়ে ৫০ শতাংশ উপস্থিতি থাকলে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের কথা বলেছি।তিনি বলেন, সেই ৫০ শতাংশ ক্লাশেও যারা উপস্থিত হয়নি, তারা নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছে না। আর এটা শুধু ইংরেজি বিভাগের পরীক্ষার বিষয় নয়। কলেজের ১৪ টি বিভাগের অনার্স তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষার ক্ষেত্রে একই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের মাধ্যমে। আর বিষয়টি বার বার শিক্ষার্থীদেরও অবগত করা হয়েছে।
অপরদিকে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, যারা নিয়মিত ক্লাশ করেন না, তাদের প্রথম বর্ষ থেকে ফেইস ডিটেকশন হয়ে যায়। ফলে তাদের বিভিন্নভাবে ক্লাসে উপস্থিত করানোর চেষ্টা চলে।
তিনি বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম হচ্ছে শিক্ষার্থীরা ৭৫ শতাংশ ক্লাসে উপস্থিত না হলে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না। তবে চলতি বছরে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে আমরা ৭৫ শতাংশের জায়গাতে ৫০ শতাংশের কথা বলেছি।
উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, শুধু আজ অর্থনীতি বিভাগে ৬০ জনের মতো শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৩ জন পরীক্ষা দিয়েছে। তার মানে এ বিভাগে ৫০ শতাংশের নিচে অনুপস্থিতির হারও উপস্থিতির থেকেও বেশি। আর এ রকম অবস্থা ১৫ টি বিভাগেই রয়েছে।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতেই নির্বাচনী পরীক্ষাটি নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। মূলত ইনকোর্স পরীক্ষা ৪৫ মিনিটের হওয়ায় শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল চূড়ান্ত পরীক্ষার মতো করে আগে একটি নির্বাচনী পরীক্ষা নেয়ার। এতে তাদের প্রস্তুতি ভালো হবে বলে তারাই দাবি করেছিল। ফলে চূড়ান্ত পরীক্ষার ৪ ঘণ্টার সময় বেধে নির্বাচনী পরীক্ষাও ৪ ঘণ্টার নেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সবসময় শিক্ষার্থী বান্ধব উদ্যোগ হাতে নেয়, আমরা বিভিন্ন সময় মোটামুটি উপস্থিত থাকা শিক্ষার্থীদেরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুযোগ সুবিধা দেই। তবে ইন্সটিটিউশনের নিয়ম ভাঙ্গলে সেখানে ব্যত্যয় ঘটানোর সুযোগ থাকে না।শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ৫০ শতাংশ থাকার বিষয়টি বার বার বলা হলেও হয়ত তারা বুঝতে পারেনি, তবে এখন সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করা সম্ভব নয়। আর এ কঠোরতার ফসল হিসেবে গত বছর থেকে আমরা দেখছি নতুনদের ক্লাসে উপস্থিতির হার ভালো। আর ক্লাসে উপস্থিত হলে শিক্ষার্থীদের জন্যই ভালো, তারা আরও বেশি শিখতে পারবে।
এদিকে কলেজ সূত্রে জানা গেছে, উপস্থিতির হারটা কোন কোন বিভাগে ২৩ শতাংশের মতো। সেইসাথে এবারে নির্বাচনী পরীক্ষায় যারা অংশ নিতে পারেননি তাদের চূড়ান্ত পরীক্ষায় তেমন কোন প্রভাব না পরলেও ভবিষ্যতে পরবে। ভবিষ্যতে ৫০ শতাংশের নিচে উপস্থিতি হলে ইনকোর্স পরীক্ষাতেও বসতে দিতে চান না কলেজ কর্তৃপক্ষ। এতে চূড়ান্ত পরীক্ষায় ফলাফলে বিরূপ প্রভাব পড়বে শিক্ষার্থীদের।