নিউজ ডেস্ক :: নবজাতককে নিয়ে কিছু কুসংস্কার
আমাদের দেশের বেশির ভাগ শিশুর জন্ম হয় বাড়িতে। পরিসংখ্যানে দেখা যায় শতকরা ৮০ ভাগেরও বেশি নবজাতক জন্মগ্রহণ করে পেশাজীবী দাইয়ের মাধ্যমে বা পরিবারের বয়স্ক সদস্য যেমন- দাদি, নানী বা অন্যান্য আত্মীয় স্বজনদের মাধ্যমে। প্রতি বছর যত শিশু ভূমিষ্ঠ হয় তার মধ্যে শতকরা ৫০ ভাগের বেশি শিশু কম ওজনের বা সঠিক সময়ের আগে জন্মগ্রহণ করে। কম ওজনের শিশু বা সঠিক সময়ের আগে জন্মগ্রহণকারী শিশুরা এমনিতেই ঝুঁকির মধ্যে থাকে, তার উপর অশিক্ষিত বা স্বল্প শিক্ষিত দাইয়ের হাতে জন্মগ্রহণের ফলে তাদের মৃত্যু ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।
এছাড়া অশিক্ষা, অজ্ঞতা ও কুসংস্কারের ফলে নবজাতকের সঠিক যত্ন তো হয়ই না, বরং এমন কিছু সামাজিক প্রথা আছে-যা চর্চার ফলে নবজাতকের জীবন বিপন্ন হয়। আমাদের দেশে নবজাতকের মৃত্যুর হার এসব কারণেই বেশি। আমাদের দেশ বা দেশসমূহে প্রচলিত কিছু সামাজিক রীতি ও কুসংস্কারের একটি বিবরণ দেয়া হলোঃ
১. গর্ভকালে মাকে কম খেতে দেয়া, যাতে গর্ভস্থ শিশু বেশি বড় না হতে পারে। কারণ বড় শিশু ডেলিভারিতে অসুবিধা বেশি।
২. গর্ভবতী মায়ের পেটে নাভির উপরে গামছা বা কাপড় শক্ত করে বেঁধে রাখা, যাতে শিশু বড় না হয়।
৩. আলো-বাতাসহীন অন্ধকার ঘরে ডেলিভারি করা।
৪. ডেলিভারির পর নবজাতকের পা উপরে দিয়ে মাথা নিচের দিকে ঝুলিয়ে রেখে মুখে ঠাণ্ডা পানির ঝাপটা মারা।
৫. নাভি কাটার জন্য বাঁশের কঞ্চি বা জীবাণুমুক্ত নয় এমন ব্লেড ব্যবহার করা।
৬. নাভি কাটার পর নাভিতে ছাই, গোবর, হলুদ, পান খাওয়ার খয়ের,ঘি, ইত্যাদি লাগানো।
৭. জন্মের সাথে সাথে নবজাতককে গোসল করানো।
৮. শাল-দুধ ফেলে দেয়া বা দেরিতে বুকের দুধ খাওয়ানো।
৯. বুকের দুধ না দিয়ে মধু, মিছরির পানি, শরবত বা গ্লুকোজের পানি দেয়া।
১০. স্তন-দাত্রী মাকে ডাল, মটরশুঁটি জাতীয় খাবার না দেয়া।
১১. চোখে বা পায়ের নিচে কাজল দেয়া।
১২. যাতে নজর বা চোখ না লাগে এজন্য শিশুর বিছানায় দেয়াশলাই, রসুন বা লোহার টুকরা রাখা।
১৩. মুখে চুষনি দেয়া।
১৪. তাবিজ দেয়া, হাতে পায়ে কালো সুতা বেঁধে রাখা।