
নিউজ ডেস্ক :: ঈশ্বরদী ইপিজেডের চারটি পোশাক কারখানায় দুপুরের খাবার খেয়ে শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। শুক্রবার বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
অসুস্থ শ্রমিকদের ঈশ্বরদী ইপিজেডের নিজস্ব হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পাবনা ও রাজশাহীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে নাকানো ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি, আইএমবিডি কোম্পানি, ভিনটেজ ডেনিম স্টুডিও লিমিটেড ও রেনেসাঁ বারিন্দ লিমিটেড নামের চারটি প্রতিষ্ঠানের শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ম অনুযায়ী তাদের সব শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার দুপুরেও খাবার দেওয়া হয়। খাবার খাওয়ার কিছু সময় পর একজন দু’জন করে বেশ কয়েক শ্রমিক পেটে ব্যথা অনুভব করেন। সন্ধ্যায় ছুটির সময় শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের প্রথমে ইপিজেডের নিজস্ব হাসপাতাল ও ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে গুরুতর আহতদের পাবনা ও রাজশাহীতে পাঠানো হয়।
পোশাক শ্রমিক মনোয়ারা খাতুন বলেন, প্রতিদিনের মতো দুপুরের খাবার খেয়ে তারা কাজ শুরু করেন। বিকেলের দিকে পেটে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করার পর থেকে বারবার পায়খানা ও বমি হতে থাকে। কিছুক্ষণের মধ্যে অন্য সহকর্মীরাও অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে ভর্তি আরও বেশ কয়েক শ্রমিকের সঙ্গে কথা বললে তারাও একই ধরনের কথা বলেন।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নাকানো ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির ম্যানেজার (এইচআর) মেহেদী হাসান বলেন, এ ঘটনায় ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত করার পর বোঝা যাবে কী কারণে একসঙ্গে এত মানুষ অসুস্থ হলো।
রেনেসাঁ বারিন্দ লিমিটেডের লজিস্টিক অফিসার আব্দুল্লাহ্-আল-মামুন বলেন, ইপিজেডের চারটি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা প্রায় একযোগে অসুস্থ হয়েছেন বলে তিনি জেনেছেন। কী কারণে এত শ্রমিক অসুস্থ হয়েছেন, তা ধারণা করতে পারছেন না তিনি।
এ ঘটনায় ঈশ্বরদীর ভারপ্রাপ্ত ইউএনও শাহাদাত হোসেন খান, ওসি আ স ম আব্দুন নূরসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা হাসপাতালে গিয়ে অসুস্থ শ্রমিকদের খোঁজখবর নিয়েছেন।
ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার রকিবুল হাসান বলেন, শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৪৫ শ্রমিককে ভর্তি রাখা হয়েছে। বাকিদের অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাদের পাবনা ও রাজশাহীতে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে শুক্রবার দুপুরে এক শ্রমিক মারা গেছেন। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আসা শ্রমিকের সংখ্যা বেড়ে চলেছে।
ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলী এহসান জানান, সাপ্লাই লাইনে লিকেজের ফলে পানি দূষিত হয়ে ও খাবারে বিষক্রিয়ার কারণে শ্রমিকরা অসুস্থ হয়েছেন বলে তিনি ধারণা করছেন। প্রাথমিকভাবে তারা সবাই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
ভারপ্রাপ্ত ইউএনও শাহাদাত হোসেন খান বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া ও তদন্তের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।