
নিজস্ব প্রতিবেদক ::: পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় অভাবগ্রস্ত ও দুস্থ নারীদের জন্য সরকারের বিশেষ বরাদ্দ করা ভিজিডির চাল বিতরণে অর্থ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দুই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্যের বিরুদ্ধে। সরেজমিন অনুসন্ধানে অভিযোগের সত্যতাও মিলেছে।
অভিযুক্ত দুজন হলেন- উপজেলার ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য বাবুল গাজী ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জসিম ফরাজী ওরফে লাদেন জসিম। বাবুল গাজী আওয়ামী লীগের ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। জসিম আওয়ামী লীগের ২ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতির পদপ্রত্যাশী ছিলেন।
ভিজিডির সুবিধাভোগীদের অভিযোগ, এই দুই ইউপি সদস্য ভিজিডি চাল দেওয়ার নামে সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে ৫০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন। অভিযোগ ওঠার পর বাবুল গাজী স্বীকার করেছেন, তিনি কিছু মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন এবং পরবর্তী সময়ে তা ফেরত দিয়েছেন। জসিম ফরাজীও জনপ্রতি ২০০ টাকা করে ‘গাড়িভাড়া বাবদ’ নিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন।
অভিযোগকারী ইসমাইল মোল্লা বলেন, ‘সরকার গরিবের জন্য চাল দেয়, অথচ বাবুল মেম্বার আমাদের কাছ থেকে ১ হাজার টাকা করে নিয়েছে।’
স্থানীয় এক গৃহবধূ আছিয়া বেগম (ছদ্মনাম) বলেন, ‘আমার স্বামী অসুস্থ। চাল পেতে জসিম মেম্বার ১ হাজার টাকা নিয়েছে। সে বলছে, এটা নাকি নিয়ম। তাই বাধ্য হয়ে ধার করে দিয়েছি।’
রফিক নামের আরেকজন অভিযোগকারী বলেন, ‘পাঁচ মাসের চাল দেওয়ার কথা বলে মেম্বার আমার স্ত্রীর কাছ থেকে ১ হাজার টাকা নিয়েছে।’
আরেক ভুক্তভোগী জামিলা খাতুন (ছদ্মনাম) বলেন, ‘প্রতি মাসে ২০০ টাকা করে চেয়েছে। ৫ মাসে ১,০০০ টাকা নিয়েছে, কিন্তু চাল পেয়েছি ৪ মাসের।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য বাবুল গাজী বলেন, ‘কয়েকজনের কাছ থেকে খরচ বাবদ ১ হাজার টাকা করে নিয়েছিলাম। পরে তাদের টাকা ফেরত দিয়েছি।’
অপর অভিযুক্ত ইউপি সদস্য জসিম ফরাজী বলেন, ‘গাড়িভাড়া বাবদ ২০০ টাকা করে নিয়েছি। ৫০০ থেকে ১ হাজারের বিষয়টি সঠিক নয়।’
এ বিষয়ে ডালবুগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা হেদায়েতুল্লাহ জোহাদী বলেন, ভিজিডি চাল দেওয়ার নামে টাকা নেওয়ার সুযোগ নেই। দুই ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে। তাদের নোটিশ করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, সরকারের ভিজিডি কার্যক্রমে কোনোভাবেই অর্থ নেওয়ার সুযোগ নেই। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।