নিজস্ব প্রতিবেদক :: আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল বিভাগের ২১টি সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে। এ আসনগুলোতে মনোনয়ন পেতে আবেদন ফরম তুলেছেন ২৫৮ জন। এর মধ্যে শুধুমাত্র বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী একমাত্র আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ।
আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ বরিশাল-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য। এছাড়া বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিও তিনি।
এছাড়া তার বাবা শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ছিলেন বরিশাল-১ আসনের সংসদ সদস্য। ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট ঘাতকদের হাতে শহীদ হওয়ার পর এই আসনে রাজনীতির হাল ধরেন আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। সেখানে ১৯৯৬ এর সময় প্রথম সংসদ সদস্য ছিলেন তিনি। তাছাড়া বর্তমান সরকারের টানা তিন দফা মেয়াদের শেষের দুবার এ আসনেই সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন হাসান আবদুল্লাহ।
ইতিপূর্বে জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ ছিলেন তিনি। অশান্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির স্বাক্ষর করেছিলেন বরিশাল তথা দক্ষিণাঞ্চলে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অভিভাবক খ্যাত আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ।
স্থানীয়রা বলছেন, ‘বরিশাল-১ আসনে বিএনপি ছাড়া অন্য দলগুলোর শক্তিশালী কোন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নেই। যে কারণে টানা তৃতীয় দফায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে আবুল হাসানাত আবদুল্লাহই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবেন।
এদিকে, ‘বরিশালের একটি আসন ছাড়া বিভাগের বাকি ২০টি আসনেই মনোনয়ন প্রত্যাশী একের অধিকে। প্রতিটি আসনেই সর্বনিম্ন ৩ জন থেকে সর্বোচ্চ ২২ জন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন আবেদন ফরম তুলেছেন।
এদের মধ্যে ঝালকাঠি-২ আসনের টানা তিনবারের সংসদ সদস্য ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমুর আসনে মনোনয়ন ফরম তুলেছেন তিনজন। অপর দুজন হলেন- আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য গোলাম রব্বানি চিনু ও কেন্দ্রীয় ত্রাণ এবং সমাজকল্যাণ উপ-কমিটির সদস্য মিল্লাত হোসেন।
অপরদিকে, সর্বোচ্চ ২২টি মনোনয়ন আবেদন ফরম তোলা হয়েছে বরগুনা-১ আসনে। এ আসনটিতে বর্তমান সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। তিনি বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তার বিপক্ষে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানসহ মোট ২২ জন মনোনয়ন ফরম তুলেছেন।
এছাড়া আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা তোফায়েল আহম্মেদের ভোলা-১ আসনে মনোনয়ন ফরম তুলেছেন ৪ জন।
অপরদিকে, বিভাগের সদর দপ্তর বরিশাল সদর-৫ আসনে মনোনয়ন যুদ্ধে নেমেছেন ৯ জন প্রার্থী। যার মধ্যে সর্বোচ্চ আলোচনায় আছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম এবং বরিশাল সিটির সদ্য সাবেক মেয়র এবং মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ।
এছাড়াও প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন- বরিশাল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এসএম জাকির হোসেন, নৌযান মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহাবুব উদ্দিন আহমেদ-বীর বিক্রম এবং বরিশাল সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু। এর বাইরে আরও কয়েকজন প্রার্থী থাকলেও পাঁচ জনের মধ্যে থেকেই মনোনয়ন চূড়ান্ত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অপরদিকে, মনোনয়ন প্রত্যাশীরা মনে করছেন, দেশের প্রধান বিরোধীদল বিএনপি নির্বাচনে না আসলে আওয়ামী লীগের বিজয় সুনিশ্চিত। আর দলীয় মনোনয়ন যিনি পাবেন তিনিই হবেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য। তাই শেষ মুহূর্তে এসেও মনোনয়ন পেতে আটঘাট বেধে নেমেছেন তারা।