
নিউজ ডেস্ক :: নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয়ে ঘুষ ছাড়া সরকারি চালের বরাদ্দ পাওয়া যায় না এমন অভিযোগ করেছেন একাধিক ভুক্তভোগী। তাদের অভিযোগ, ওই অফিসের অফিস সহকারী লিটন ইসলাম মোটা অঙ্কের ঘুষ ছাড়া বরাদ্দের আবেদন গ্রহণ করেন না। সরেজমিনে গিয়ে ও কয়েকজন সুবিধাভোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বিভিন্ন প্রকল্পে (টিআর, কাবিখা) এতিম ও দুস্থ শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দপ্রাপ্ত চাল তুলতে গেলে অফিস সহকারী লিটনের ঘুষ চাওয়া নিয়মে পরিণত হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, ঘুষ না দিলে বরাদ্দ আটকে রাখার পাশাপাশি কম দামে বরাদ্দ কিনে তা বেশি দামে ডিলারের কাছে বিক্রি করেন তিনি।
বড়ভিটা জান্নাতুল বানাত মহিলা মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা শোয়াইব ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি আমার মাদরাসার জন্য বরাদ্দ নিতে গেলে লিটন বলেন- একই মাদরাসায় বারবার বরাদ্দ দেওয়া যাবে না। একটা ভুয়া মাদরাসার নামে আবেদন করেন, কিছু খরচ লাগবে। পরে ৭০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে বরাদ্দ দেন তিন টন চালের। কিন্তু চাল তুলতে গেলে তিনি দেননি। পরে ভয়ভীতি দেখিয়ে ৭০ হাজার টাকা ফেরত নিয়েছি। আমি আর যাইনি। এতিমের চাল খেয়েছে, আমি আল্লাহর কাছে বিচার দিয়েছি।
ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ করেন পুটিমারী ইউনিয়নের নারী ইউপি সদস্য শ্যামলী রানী রায়ও। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাকে একটি প্রকল্পে সভাপতি করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কিছুদিন পর লিটন বারবার ঘুষ চায়। শেষে আমার স্বামীকে নিয়ে গিয়ে অল্প কাজ করে টাকা তুলে নেয়। প্রকল্পে কী কাজ হয়েছে জানিও না।
ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে বরাদ্দ আত্মসাতের অভিযোগও উঠেছে অফিস সহকারী লিটনের বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিন ওই কার্যালয়ে কর্মরত থাকায় স্থানীয় কিছু ডিলারের সঙ্গে জোট গড়ে বরাদ্দ বাণিজ্যে জড়িত বলেও দাবি করেছেন কয়েকজন।
অফিস সহকারী লিটন ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভাই, আমি ফোনে কিছু বলতে চাই না। আপনি একটু দেখা করেন। আমি আপনার এলাকার মানুষ, বিষয়টা বুঝায়ে বললে বুঝবেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) লতিফুর রহমানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।