
নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশাল নগরীর কাশিপুরের চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও বহু অপকর্মের হোতা রাসেল হাওলাদার আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। একের পর এক অপকর্ম করে পার পেয়ে যাওয়া বেশ কয়েকটি মামলার এ আসামি বর্তমানে কাশিপুর এলাকার মুর্তিমান আতঙ্কে পরিনত হয়েছে। তার নানামুখী অপতৎপরতায় জনপদের সাধারন ও নিরীহ মানুষ রীতিমত ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে উঠেছে।
বছরের পর বছর ধরে রাসেল বাহিনীর অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার স্থানীয়রা তার বিরুদ্ধে “টু” শব্দটি করার সাহস ও শক্তি পর্যন্ত হারিয়েছে ফেলেছে। নগরীর কাশিপুরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ভুক্তোভোগী ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে এমন তথ্য মিলেছে।
অল্প সময়ে বেশ কয়েকটি মামলায় পুলিশের খাতায় নাম লেখানো রাসেল হাওলাদার কাশিপুরের উত্তর টহঠা এলাকার মালেক ডাক্তারের ছেলে। সে একাধিকবার গ্রেফতার সত্ত্বেও বার বার জামিনে এসে একাধারে পুরানো অপকর্ম অব্যাহত রাখায় বর্তমানে স্থানীয়রা তার অপরাধমুলক কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়- রাসেল গোটা এলাকাজুড়ে একটি আতঙ্কের নাম। মাদক সেবন ও ব্যবস ও লুটতরাজ চালানো তার নিত্যকার কাজ।
রাসেলের বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক যুবক জানায়, তার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলবে না। মুখ খুললে তার কপালে খারাপ কিছু আছে। ঐ যুবক আরও জানায় রাসেল ‘বাবা’ (ইয়াবা) খায় এবং প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসা চালায়। যদিও এলাকার একজন দাপুটে সন্ত্রাসী হিসেবে গোটা জনপদজুড়ে রাসেলের ব্যাপক নাম-ডাক রয়েছে বলে তিনি জানান।
স্থানীয় একাধিক ব্যাক্তি বলেন- রাসেল তার সহযোগীদের মাধ্যমে আশপাশের এলাকায় ইয়াবা, ফেনসিডিল ও গাঁজা ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে। কেউ বাঁধা দিলে রাসেল ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা নানাভাবে টার্গেটকৃত ব্যক্তিকে নানাভাবে হয়রানি করে। এরআগে মাদক ব্যবসা করতে গিয়ে রাসেল পুলিশ, র্যাব ও ডিবি পুলিশের হাতে ফেনসিডিল ও ইয়াবাসহ আটক হয়েছে। বার বার জামিনে এসে একাধারে পুরানো মাদক বাণিজ্য অব্যাহত রেখেছে। রাসেল নিজে মাদক সেবনের পাশাপাশি এলাকায় মাদক সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণও এখন তার হাতে। প্রশাসন ম্যানেজ করেই রাসেল তার মাদক ব্যবসা অব্যহত রেখেছে। অন্যান্য জায়গায় অভিযান হলেও রাসেলের বাড়িতে প্রশাসন অভিযান দেয়না। কারণ মাস শেষে তারা মাসোহারা নিয়ে থাকেন রাসেলের কাছ থেকে।
অনুসন্ধানকালে জানা গেছে- রাসেলের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা হওয়ার পাশাপাশি মামলায় গ্রেফতারের পর জামিনে বের হয়ে আসা রাসেল পরবর্তীতে আর পিছনে ফিরে তাকায়নি। সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে নিজস্ব একটি বাহিনী গড়ে তুলে একের পর এক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন রাসেল। বর্তমানে নিজস্ব বাহিনীর উপর ভর করে রাসেল আত্মপ্রকাশ করেছে মুর্তিমান আতঙ্ক হিসেবে। বছরের পর বছর ধরে নির্যাতনের শিকার হলেও সাধারন মানুষ রাসেলের আক্রোশ থেকে রেহাই পেতে কখনও তার বিরুদ্ধে মুখ খোলে না। যার ফলে রাসেল দিনে দিনে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
বেশ কয়েকবার আটক করা হলেও কখনও তাকে দমানো যায়নি। বরং প্রতিবারই জেল থেকে বের হয়ে এসে রাসেল আরও বেপরোয়া আচারণ শুরু করে। ফলে তার অত্যাচার ও নির্যাতন থেকে দুরে থাকতে বর্তমানে অনেকেই রাসেল বা তার বাহিনীর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করা দুরে থাক, ‘উহফ’ শব্দটি পর্যন্ত করতে সাহস পায় না।
এ বিষয়ে জানতে মাদক ব্যবসায়ী রাসেল হাওলাদারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলে তিনি তা রিসিভ করেন নি।
এ বিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন সিকদার বলেন- মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে কোন আপোষ নেই। মাদকের বিষয়ে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি মেনে চলি। প্রতিনিয়তই মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান করে থাকি। আমার থানা এলাকায় কোন সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীকে মাথা চারা দিয়ে উঠতে দেয়া হবে না। খুব শীঘ্রই তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।’
স্থানীয় অনেকের অভিযোগ- রাসেলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। এই মাদক সন্ত্রাসীর কবল থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা।