ঢাকামঙ্গলবার , ১২ আগস্ট ২০২৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ভোলায় কাজ না করেই কোটি টাকা আ*ত্ম*সা*ৎ অভি*যোগ।

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
আগস্ট ১২, ২০২৫ ৪:২২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিউজ ডেস্ক :: ভোলার চরফ্যাশনে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কারে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে নেওয়া ১৮৮টি প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে কাজ না করেই বরাদ্দের টাকা ও গম উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় নামমাত্র কাজ করা হয়েছে। এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে সম্প্রতি নুরাবাদ ইউনিয়নের লোকজন মানববন্ধন করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চরফ্যাশনে গত অর্থবছরে টিআর (টেস্ট রিলিফ), কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) ও কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচির আওতায় ১৮৮টি প্রকল্পের জন্য প্রায় ৬ কোটি ২৫ লাখ ৮৩ হাজার টাকা এবং ২৫৫ টনের বেশি গম বরাদ্দ দেওয়া হয়। চলতি বছরের ১৫ মার্চের মধ্যে এসব প্রকল্পের কাজ শতভাগ শেষ করার সরকারি নির্দেশ ছিল।
কয়েকটি প্রকল্প ঘুরে দেখা গেছে, এওয়াজপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ মাদ্রাজ মাধ্যমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন রাস্তা সংস্কারের জন্য কাবিটার বরাদ্দ দেওয়া হয় ৮ লাখ ১০ হাজার টাকা। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু জাফর মোহাম্মদ আলাউদ্দিন ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান সোহেল জানিয়েছেন, রাস্তায় কোনো কাজ হয়নি। ফলে স্কুলের শিক্ষার্থীদের আসা-যাওয়ার সমস্যা হচ্ছে।
হাজারীগঞ্জের মোজাফফরিয়া নুরানি হাফেজিয়া মাদ্রাসা সংস্কারে টিআরের ৩ লাখ ৭৮ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও সরেজমিনে দেখা গেছে কোনো কাজ হয়নি। দাঁড়িয়ে আছে জরাজীর্ণ টিনশেড ঘর। জানতে চাইলে মাদ্রাসার পরিচালক হাফেজ মাওলানা মোতাহার বলেন, ‘মাদ্রাসার জন্য আমি ১ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। সেই টাকা দিয়ে ইট কিনে রেখেছি। বর্ষার পর কাজ শুরু করব।’
হাজারীগঞ্জ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে কাবিটার আওতায় ৪ লাখ ৪১ হাজার টাকা বরাদ্দ হলেও দেওয়া হয়েছে মাত্র ৫০ হাজার টাকা। কিন্তু তা দিয়ে স্কুলের সামনে কিছু অংশের দেয়াল নির্মাণ করতে গিয়ে ৬০ হাজার টাকা চলে গেলে বলে জানান প্রধান শিক্ষক মো. সফিউল্লাহ। তিনি বলেন, ‘এই প্রকল্প করতে গিয়ে আমাদের নিজেদের অনেক অর্থ ব্যয় হয়েছে।’
নুরাবাদ ইউনিয়নের পূর্ব চর তফাজ্জল এ ছালাম দাখিল মাদ্রাসার মাঠ ভরাটের জন্য টিআর প্রকল্পে ৩ লাখ ৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও মাদ্রাসার সহকারী মৌলভি ফরিদউদ্দিন জানান, তাঁরা পেয়েছেন ৬০ হাজার টাকা। কিন্তু সেই টাকা দিয়ে এত দিন কোনো কাজ হয়নি।
জানতে চাইলে কাজের দায়িত্বে থাকা নুরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সুমন হাওলাদার বলেন, ‘সেখানে এত দিন বৃষ্টির কারণে কাজ করা সম্ভব হয়নি। এখন পাঁচ দিন ধরে মাঠে বালু ফেলা হচ্ছে।’
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কাগজে-কলমে শতভাগ কাজ দেখিয়ে প্রকল্পগুলোর বরাদ্দের অর্থ ও গম উত্তোলন করা হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বপ্রাপ্তরা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) সঙ্গে যোগসাজশে ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে টাকা তুলে নিয়েছেন। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পিআইও মো. অলিউল্লাহ।
যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসনা শারমিন মিথি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যেগুলোর কাজ হয়নি বা অনিয়ম রয়েছে, সেগুলোর কাজ হবে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে আমরা কিছুটা সময়ের জন্য কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছিলাম। আবহাওয়া ঠিক হলে কাজ আবার শুরু করা হবে। কাজ সমাপ্ত ছাড়া কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটিকে (সিপিসি) বিল দেওয়া হবে না।’