ঢাকাশনিবার , ১৬ আগস্ট ২০২৫

বয়স বাড়িয়ে দশম শ্রেণীর ছাত্রীর বিয়ে, প ণ্ড করে দিল প্র*শা*স*ন

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
আগস্ট ১৬, ২০২৫ ১:১১ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিউজ ডেস্ক :: রাজবাড়ী সদর উপজেলায় দশম শ্রেণি পড়ুয়া এক ছাত্রীর নোটারী পাবলিক করে বয়স বাড়িয়ে বিয়ের পর কনের বাড়িতে অনুষ্ঠানের খবর পেয়ে ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালত।
আদালত এই বিয়ে আইনসম্মত নয় বলে ঘোষণা করেছেন; পাশাপাশি কনের পিতাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ২ হাজার টাকা জরিমানা এবং মেয়ের বয়স ১৮ বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেয়া যাবে না মর্মে মুচলেকা নিয়েছেন।

শুক্রবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে সদর উপজেলার আলিপুর ইউনিয়নের আলিপুর গ্রামে আনুষ্ঠানিক ভাবে মেয়েকে উঠিয়ে নেওয়ার জন্য বর পক্ষের আসার কথা ছিলো।পরে খবর পেয়ে মেয়ের বাড়িতে প্রশাসন উপস্থিত হয়ে বিয়ের অনুষ্ঠানটি পন্ড করে দেয়।
জানা গেছে, সম্প্রতি রাজবাড়ী বার এসোসিয়েশন থেকে নোটারী পাবলিক কার্যালয়ের মাধ্যমে বয়স বড়িয়ে সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নে আলীপুর গ্রামের মো. আক্তার হোসেনের দশম শ্রেণী পড়ুয়া মেয়ে সুমাইয়া (১৪)-এর সাথে বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের রামদিয়ার বারমল্লিকা গ্রামের ছিদ্দিক মিয়ার প্রবাসী ছেলে সজীব হোসেনের সঙ্গে বিয়ে দেয়া হয়। সুমাইয়ার পরিবার গত ১৩ আগস্ট রাজবাড়ী কোর্টে আইনজীবীর মাধ্যমে নোটারী পাবলিক করে বয়স ১৮ বছর বানিয়ে বিয়ে দিচ্ছিলেন বলেও জানা গেছে।

বিয়ে উপলক্ষ্যে শুক্রবার (১৫ আগস্ট) কনের বাড়িতে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।বরযাত্রীদের আপ্যায়নের জন্য আয়োজন করা হয় বাহারী খাবারদাবারের। এমন খবর পেয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার নির্দেশে কিশোর কিশোরী ক্লাবের জেন্ডার প্রোমটার গোলাম রব্বানী, গ্রাম পুলিশসহ স্থানীয় মেম্বার সকাল ১০ টায় মেয়ের বাসায় উপস্থিত হন।
এ সময় বাল্য বিবাহের নানা কুফল সম্পর্কে তাদের জানানো হয়।একপর্যায়ে মেয়ের বাবার নিকট থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়। তারা তাদের মেয়েকে ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত বিবাহ দেবেন না এবং মেয়ের পড়া লেখা চালিয়ে যাবেন বলে প্রতিশ্রুতিও দেন।

কিন্তু তারা কথা দিলেও ঘটনাস্থল থেকে চলে আসার পর তারা আবার বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেন। এই সংবাদ জানতে পেরে বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থলে যায়। পরে মেয়ের বাবাকে মোবাইল কোর্ট করে ২ হাজার টাকা জরিমান করা হয়। ঘটনাস্থলে বরের বাড়ীর লোক থাকলেও বর পলাতক ছিলো।

এ বিষয়ে রাজবাড়ী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মারিয়া হক বলেন, “সদর উপজেলার আলীপুরে বাল্য বিবাহ হচ্ছে এমন খবর পেয়ে সেখানে আমরা এসিল্যান্ড সহ অন্যান্যদের পাঠাই। ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা দেখতে পাই মেয়ের প্রকৃত বয়স ১৪ বছর। নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে তার বয়স ১৮ করা হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে আজকে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল।পরে মোবাইল কোর্ট করে কনের পিতাকে ২ হাজার টাকা জরিমানা ও ১৮ বছরের আগে বিয়ে দেবে না মর্মে মুচলেকা নেওয়া হয়।”

তিনি আরও বলেন, “বাল্যবিবাহের বিষয়ে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ে হয় না। নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে ছেলে ও মেয়ের অভিভাবকেরা আইনজীবীদের দিয়ে বয়স বাড়িয়ে নেয়। কিন্তু এটা আইনসম্মত নয়। এজন্য অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে।”

একটি সূত্রে জানা গেছে, আইনজীবীর মাধ্যমে নোটারী পাবলিক করে বয়স বাড়িয়ে প্রতিনিয়তই অহরহ বাল্যবিবাহ হচ্ছে রাজবাড়ী কোর্টে।কিন্তু এ বিষয়ে প্রশাসনের কোন নজর নেই।সচেতন মহলে এ নিয়ে আলোচনা সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে।