ঢাকাবুধবার , ২০ আগস্ট ২০২৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

সয়াবিন তেল ডিটারজেন্ট দিয়ে দুধ বানান কৃষকদল নেতা, ৭০০ লিটার ভেজাল দুধ জব্দ

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
আগস্ট ২০, ২০২৫ ১১:০০ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিউজ ডেস্ক :: পাবনার চাটমোহরে সয়াবিন তেল, ডিটারজেন্ট ও জেলি দিয়ে ভেজাল দুধ তৈরি করছিলেন এক কৃষকদল নেতা। সেগুলো সরবরাহ করছিলেন প্রাণ, ব্রাকসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের কোম্পানিতে। তার এ দীর্ঘদিনের কারবারের খবর পেয়ে গত সোমবার রাতে ইউএনও মুসা নাসের চৌধুরীর নেতৃত্বে সেখানে অভিযান চালায় উপজেলা প্রশাসন। এ সময় প্রায় ৭০০ লিটার ভেজাল দুধ ও এই পণ্য তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে।

জানা গেছে, উপজেলার বিলচলন ইউনিয়ন কৃষক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মমিন নটাবাড়িয়া বাজারে কারখানা খুলে অবৈধ দুধের কারবার করছিলেন। উপজেলা প্রশাসনের অভিযানের খবর পেয়ে তিনি আগেই সটকে পড়েন। এ কারণে তাকে ধরতে পারেননি অভিযানে অংশ নেওয়া কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা। তবে তার কারখানা থেকে ভেজাল দুধ ছাড়াও বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ, ডিটারজেন্ট গুঁড়া, তেল, ব্লেন্ডার মেশিন, গ্যাস সিলিন্ডার ও গ্যাসের চুলা উদ্ধার হয়েছে। জব্দ করা দুধ ও সরঞ্জাম থানায় নেওয়া হয়।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে কৃষকদল নেতা আবদুল মমিনের মোবাইল ফোনে কল দিলে রিসিভ করেই পরিচয় জানতে চান। এ সময় সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পরই তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এর পর একাধিকবার চেষ্টা করেও আর তাকে পাওয়া যায়নি।

অভিযুক্ত আবদুল মমিনের বিষয়ে জানতে ইউনিয়ন কৃষকদলের সভাপতি নজরুল ইসলামকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

তবে উপজেলা কৃষকদলের সভাপতি লিটন বিশ্বাস বলেন, ‘এমন ঘটনার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। খোঁজ নিচ্ছি, অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

শ্রমিক রায়হান আলী বলেন, আবদুল মমিনের দুধের কারখানা থেকে গুনাইগাছা ইউনিয়নের চরপাড়ায় ব্র্যাক, প্রাণ কোম্পানির চিলিং সেন্টারসহ বিভিন্ন জায়গায় পণ্য সরবরাহ করা হতো। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুধ নেয় ব্রাক।

এ ব্যাপারে প্রাণ ডেইরি হাব চাটমোহরের এরিয়া ম্যানেজার জামাল উদ্দিন বলেন, আবদুল মমিনের মিল থেকে আগে দুধ নেওয়া হতো। এখন তার কাছ থেকে কোনো পণ্য গ্রহণ করা হচ্ছে না।

ব্রাক চরপাড়া সেন্টারের ইনচার্জ নাজনীন আক্তার বলেন, ‘পরীক্ষা ছাড়া আমরা কোনো দুধ গ্রহণ করি না। টেস্ট রিপোর্টের মান দেখে সেন্টারে দুধ নেওয়া হয়।’

উপজেলা স্বাস্থ‍্য কমপ্লেক্সের স্যানিটারি ইন্সপেক্টর এস এম আসলাম হোসেন বলেন, কৃষকদল নেতা আবদুল মমিন জেলি, সয়াবিন তেল, ডিটারজেন্ট পাউডার দুধে দিয়ে ব্লেন্ড করে ভেজাল পণ্য তৈরি করতেন। এতে যে দুধ তৈরি হতো তাতে ফ্যাটের (চর্বি) পরিমাণও বাড়ত। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অধিক মুনাফা লাভের আশায় ভেজাল দুধ তৈরি করছেন, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য বিধ্বংসী, ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। এটা খাওয়ার পর ভোক্তারা ক্যানসারসহ বিভিন্ন মরণব্যাধিতে আক্রান্ত হতে পারেন।

অভিযান পরিচালনাকারী ইউএনও মুসা নাসের চৌধুরী বলেন, আসামি পলাতক থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে তাকে শাস্তি দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।