ঢাকামঙ্গলবার , ২৬ আগস্ট ২০২৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

দেশ মাটি ও মানুষের প্রতি অগাধ ভালোবাসার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত 

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
আগস্ট ২৬, ২০২৫ ৪:৪৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

জাহিদুল ইসলাম মামুন :: ‘অ’ তে অজগর; অজগরটি আসছে তেড়ে। কিংবা ‘ই’ তে ইক্ষু রস অতি মিষ্টি। মূলত এসব লেখা পড়েই বড় হয়েছে আমাদের জেনারেশনের বড় একটি অংশ। যা ছিল শিশুদের জন্য অনেকটা জটিল, অর্থ-ভিত্তিহীন ও দুর্বোধ্য। এসব বাক্যর পরিবর্তে সন্নিবেশ করানো হয়েছে নীতিকতার সব বাক্যর। যেমন ‘অ’ তে অসৎ সঙ্গ ভাল নয়, অহংকারীর পতন হয়। ‘ই’ তে ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়, এই কথা মিথ্যা নয়। শুধু আদর্শলিপির আদলে তৈরি করা বইটি নতুন করে প্রকাশ করেছে জাহিদুল ইসলাম মামুন। বইটির নাম হচ্ছে “বর্ণমালায় নীতিকথা”। টিআইবি ২০১৩ সালে পরীক্ষামূলক সংস্করণ করেন এরপর সম্প্রতি বরিশাল বিভাগ তথ্য গাইড প্রকাশনা পরিষদ বইটি প্রকাশ করে। তবে বিস্ময়ের বিষয় হচ্ছে প্রকাশক জাহিদুল ইসলাম মামুন বইটি বাজারজাত করার জন্য প্রকাশনা করেনি। আপাতত স্কুল স্কুলে গিয়ে বিনামূল্যের শিক্ষার্থীদের মাঝে বইগুলো বিতরণ করবেন তিনি। শিশুদের নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করাই তার একমাত্র লক্ষ্য। এই বইটির বাইরে ও মামুন রয়েছে বই প্রকাশনার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা। ইতিপূর্বে বরিশালের ডায়েরি, তথ্য গাইড বরিশাল, স্বপ্নের বরিশাল আমাদের বরিশাল বিভাগ নামে বেশ কয়েকটি বই প্রকাশনা করেছেন তিনি। সবগুলো বই জনস্বার্থে প্রকাশিত এবং বেশ সমাধৃত হয়েছে। ২০১৪ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে বরিশাল বিভাগের জনস্বার্থে বিজ্ঞাপন মুক্ত তথ্য গাইড প্রকাশ করে আসছে জাহিদুল ইসলাম মামুন। যা দেশ, বরিশাল বিভাগের জনস্বার্থে ধারাবাহিকভাবে তথ্য গাইড প্রকাশ করার পিছনের গল্প আজকের পরিবর্তনকে বলেছেন জাহিদুল ইসলাম মামুন। আগামী প্রজন্ম ও শিশুদের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই এই অজানা কথাগুলো পাঠকের সামনে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নেয় আজকের পরিবর্তন।

দেশ, মাতৃকার প্রতি অগাধ ভালোবাসা:

মামুনের কথা শুনে অনেকটা অবাক ও বিস্মিত হলাম। জনস্বার্থে তার ৭ টি গাইড বই প্রকাশ করার পিছনে রয়েছে শুধুই দেশমাতৃকার প্রতি অগাধ ভালোবাসা। জনস্বার্থে বিজ্ঞাপন মুক্ত ধারাবাহিকভাবে তথ্য গাইড প্রকাশে প্রমাণ করে মানুষের মাঝে দেশের সম্মান তুলে ধরার কত যে গভীর ভালোবাসা ও আপ্রাণ চেষ্টায় ব্রত জাহিদুল ইসলাম মামুন। তার প্রথম তিনটি গাইড বই বরিশাল বিভাগের সরকারি, বেসরকারি সাহিত্য শাসিত প্রতিষ্ঠান ও মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠান ফোন, মোবাইল ও ইমেইল ঠিকানা ছিল। মানুষের প্রয়োজনে প্রকাশিত বইগুলো খুবই জনপ্রিয়তা পায়। ২০২০ সালে করোনা কালীন সময় মানুষ যখন ঘরবন্দী ঠিক সে সময় ফেসবুকে নিজস্ব একাউন্ট থেকে ১৫০ জন গুণী মানুষের জীবন বৃত্তান্ত বর্ণনা করে পোস্ট করেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দক্ষিণ অঞ্চলে আলোচিত ছিল তাঁর নামটি।

সাদামাটা জীবন যাপন করতে ভালোবাসেন মামুন:

তথ্যভিত্তিক গাইড বইয়ের প্রকাশক ও সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম মামুন বলেন, বরিশাল বিভাগ ও জেলার জনস্বার্থে বিজ্ঞাপন মুক্ত সাতটি তথ্য ভিত্তিক প্রকাশিত গাইড বইগুলো বিভাগের ৬ জেলা ৪২ উপজেলার সব বয়সের পাঠকের মাঝে খুব স্বল্পমূল্যে ২০ হাজার কপি বই ইতিমধ্যে বিক্রি হয়েছে। তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে কোন রাজনৈতিক দলের কর্মী বা সমর্থক নই। কারণ হিসেবে মামুন বলেন, আমি সময় পেলে কোন বিষয়ে লেখালেখি করি। এটা আমার শখ। মামুন এর ভাষ্য, সাহসী কলম যোদ্ধাদের নিকট থেকে সংবাদ এর নিরপেক্ষতা শিখেছি। এজন্য নিজেকে রাজনীতি মুক্ত রাখতে চেষ্টা করেছি। সকলের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে সাদামাটা জীবন যাপন করতে ভালোবাসি। কতটা নিজে সফল হয়েছি বা কি পেয়েছি তা ভাবিনি কখনো তথ্যভিত্তিক গাইড বই প্রকাশ ও সম্পাদক মামুন বলেন, আমি যা-ই লেখি অন্তত কোনো পাঠক যাতে বলতে না পারে টাকা খেয়েছে অথবা এই লোক অমুক দলের কান্ডারী আমার একটি লেখা যদি কমপক্ষে দশজনে পরে আর যদি ছয়জনে মনে করে লেখাটি নিরপক্ষ সেটাই আমার অর্জন।

নিজের লেখা বই নিজেই প্রচার করেন মামুন:

বরিশাল বিভাগের সংক্ষিপ্ত তথ্যভিত্তিক ইতিহাস, ঐতিহ্য, গৌরবময় অর্জন, ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা আন্দোলন এবং বরেণ্য ব্যক্তিদের জীবনের উপর লেখা বইটি জাহিদুল ইসলাম মামুন নিজেই বরিশাল বিভাগের সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল, কলেজ সহ আরো বিভিন্ন স্থানে আট বছর ধরে ফেরি করে বিক্রি করে আসছেন। তিনি ২০১৪ সাল থেকে প্রতিবছর নতুন তথ্য সংযুক্ত করে নতুন নামে বরিশাল বিভাগের জনস্বার্থে তথ্যভিত্তিক গাইড বই প্রকাশ করেন তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা সাতটি। বিক্রির সংখ্যা ২০ হাজার কপি। নিজের লেখা বই নিজেই ফেরি করে বিক্রি করে আনন্দ পান মামন।

জাহিদুল ইসলাম মামুনের বাড়ি বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ৫ নং ওয়ার্ডের পলাশপুর এলাকা তার পিতা সনদবিহীন মুক্তিযোদ্ধা ও প্রখ্যাত শ্রমিক নেতা আব্দুল জব্বার হাওলাদার তিনি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে “পূর্ব বাংলার শ্রমিক আন্দোলনের” পেয়ারা বাগানে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ঘাট শ্রমিক, হোটেল শ্রমিক, হকার্স শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার ভূমিকায় শ্রমিক শ্রেণীর প্রতিনিধিত্ব করেন। তিনি একজন শ্রমজীবী মানুষের বিপ্লবী নেতা ছিলেন।

জাহিদুল ইসলাম মামুন :- সাহিত্যিক ও লেখক।