
নিজস্ব প্রতিবেদক :: যাত্রীদের স্মৃতিতে ভাসবে বিলাসিতা :কেটে ফেলা হচ্ছে ঢাকা-বরিশাল রুটের বিলাসবহুল লঞ্চ ‘এমভি অ্যাডভেঞ্চার-১’
ঢাকা-বরিশাল নৌপথের বিলাসবহুল যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি এ্যাডভেঞ্চার-১—এখন ইতিহাস। ২০১৭ সালে নিজাম শিপিং লাইন্সের প্রথম যাত্রীবাহী লঞ্চ হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও সম্প্রতি এটি স্ক্র্যাপিংয়ের (কেটে ফেলা) প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। হাসনাবাদের একটি ডগইয়ার্ডে লঞ্চটি ভাঙার কাজ চলছে, যা বর্তমানে শেষের পথে।
রেলওয়ের যাত্রীবাহী নৌযান থেকে বিলাসবহুল লঞ্চে রূপান্তর :
এ্যাডভেঞ্চার-১ এর যাত্রা শুরু হয় আরও আগে। ৮০’র দশকের প্রথম দিকে বাংলাদেশ রেলওয়ের যাত্রীবাহী নৌযান হিসেবে এটি যুক্ত হয়েছিল এমভি শের-ই-বাংলা নামে। দীর্ঘদিন ধরে এটি গাইবান্ধার বালাসী ঘাট থেকে জামালপুরের বাহাদুরাবাদ ঘাট পর্যন্ত যাত্রী পরিবহনে ব্যবহৃত হয়।
২০০৫ সালের ১৫ জুন রেলওয়ের বালাসী ঘাট-বাহাদুরাবাদ নৌ-রুট বন্ধ হয়ে গেলে এমভি শের-ই-বাংলা পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে দীর্ঘ এক দশক। পরে ২০১৫/১৬ সালে নৌযানটি নিজাম শিপিং লাইন্সের মালিকানায় আসে। আধুনিকায়ন ও রিবডি করার পর ২০১৭ সালে এটি নতুন রূপে যাত্রী সেবায় ফিরে আসে—এমভি এ্যাডভেঞ্চার-১ নামে।
স্বল্প সময়ে জনপ্রিয়তা :
ঢাকা-বরিশাল রুটে যাত্রা শুরুর পরপরই এ্যাডভেঞ্চার-১ দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন করে। উন্নত সুযোগ-সুবিধা, আধুনিক নকশা ও গতি সম্পন্ন সেবার কারণে এটি যাত্রীদের কাছে নির্ভরযোগ্য পরিবহন হয়ে ওঠে। প্রায় এক যুগ ধরে (২০১৭–২০২৫) বরিশাল রুটে সেবা দিয়ে এ্যাডভেঞ্চার-১ স্থান করে নেয় যাত্রীদের মনে।
বিদায় নিলো বরিশাল-ঢাকা রুটের জনপ্রিয় নৌযান এ্যাডভেঞ্চার-১
সমাপ্তির পথে এ্যাডভেঞ্চার-১ :
তবে যাত্রী সংকটে নয়, বরং দীর্ঘ ব্যবহারের পর লঞ্চটির কার্যকারিতা শেষ হয়ে যাওয়ায় এটি রুট থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি স্ক্র্যাপিংয়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, যা এখন প্রায় শেষের দিকে। অপরদিকে যাত্রী সংকটের কারনেও এটিকে রুট থেকে সরিয়ে নেওয়া হতে পারে বলে মনে করছেন কেউ কেউ।
দীর্ঘ বছরের স্মৃতি :
২০১৭ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ঢাকা-বরিশাল রুটে যাত্রী সেবা দেওয়ার পর এমভি এ্যাডভেঞ্চার-১ এর যাত্রা শেষ হতে যাচ্ছে। নৌযানটি ভাঙার প্রক্রিয়া শেষ হলে দেশের যাত্রীবাহী নৌ-পরিবহনের ইতিহাসে আরেকটি অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটবে।
উল্লেখ্য, এর আগে যাত্রী সংকট ও নৌযানের বয়সজনিত কারণে বরিশাল-ঢাকা রুটের বিলাসবহুল সুরভী-৯, কীর্তনখোলা-২ সহ দক্ষিণাঞ্চলের আরও কয়েকটি লঞ্চ কেটে ফেলা হয়েছে।