ঢাকামঙ্গলবার , ৪ নভেম্বর ২০২৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বরিশাল বিএম কলেজের অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থী কেয়ামনির উচ্চশিক্ষা নিয়ে সংশয়

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
নভেম্বর ৪, ২০২৫ ৬:৩২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশাল বিএম কলেজ সংবাদদাতা: অর্থের অভাবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালের ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী অদম্য মেধাবী মুখ কেয়ামনির উচ্চশিক্ষা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। বরিশালের ঐতিহ্যবাহী বিএম কলেজ থেকে ইংরেজি বিভাগের স্নাতক প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েও একমাত্র অর্থে অভাবে তৃতীয় বর্ষে এসে তার উচ্চশিক্ষা অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। মেধাবী এই শিক্ষার্থীর বাড়ি উপকূলীয় অঞ্চল বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলায়। এ যেন ভাঙ্গা ঘরে চাঁদের আলো। আর্থিক অনটন কেয়ামনিকে দমাতে পারেনি। দিনমজুর ভূমিহীন কৃষক বাবার উপার্জনের টাকায় সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরালেও লেখাপড়া চালিয়ে গেছেন নিয়মিত। সফলতাও পেয়েছেন। শিক্ষাজীবনের সকল শাখায় রয়েছে তার জিপিএ-৫।

বর্তমানে স্নাতক তৃতীয় বর্ষের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী কেয়ামনি। পিতা সাধারণ দিনমজুর কৃষক মোঃ নজরুল ইসলাম খোকন, মাতা গৃহিণী তাসলিমা বেগম। দুই বোনের মধ্যে সে সবার বড়। ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ায় বেশ মনযোগী। তার প্রমান পাওয়া যায় তার পিইসি, জেএসসি, এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে। আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিন রাওঘা গ্রামের ৪৪ নং দক্ষিন রাওঘা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ২০১৩ সালে পিইসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ- ৫ পান, ২০১৬ সালে দক্ষিন রাওঘা নূর আল-আমীন মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে জেএসসি তে জিপিএ-৫, একই বিদ্যালয় থেকে ২০১৯ সালে এসএসসি পরীক্ষায় মানবিক শাখা থেকে জিপিএ- ৫ এবং আমতলী বকুলনেছা মহিলা ডিগ্রি কলেজে থেকে এইচএসসি-২০২১ সালে জিপিএ- ৫ পেয়ে কৃতিত্বের সাথে পাশ করেন।

তার স্বপ্ন বড় হয়ে একজন বিসিএস প্রশাসনিক ক্যাডার হওয়া। এতদিন দারিদ্রতা তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি কিন্তু এখন বেশ ভোগাচ্ছে। বর্তমানে কেয়ামনি বরিশাল বিএম কলেজে ইংরেজি বিভাগের স্নাতক তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়ন করে আসলেও নানাবিধ অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে তার উচ্চশিক্ষা প্রায় বন্ধের মুখে। মূলত পারিবারিক অস্বচ্ছল কারণেই নিয়মিত ক্লাস করতে পারছে না মেধাবী এই শিক্ষার্থী।

তার গৃহিণী মা বলেন, ছোট থেকেই লেখাপড়ার প্রতি মেয়ের প্রবল ইচ্ছা ও ঝোঁক বেশি থাকায় পিছপা হইনি। সাধ্যমত চেষ্টা করেছি মেয়ের ভবিষ্যৎ স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে। আমি এবং ওর বাবা অনেক কষ্ট-ক্লেশ করে এবং স্কুল স্যারদের সাহায্য সহযোগিতা করায় আমার মেয়েটাকে এতদূর পর্যন্ত নিয়ে আসতে পেরেছি। এতদিন নিজ এলাকায় লেখাপড়ার সুযোগ থাকলেও উচ্চ শিক্ষায় সেই সুযোগ আর নেই। মেয়ে এখন বরিশাল বিএম কলেজে পড়ে। বরিশাল এর মত এতদূর শহরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খরচ বহন করা আমাদের মত দরিদ্র পরিবারের পক্ষে আর সম্ভব নয়।