
নিজস্ব প্রতিবেদক :: পৌষের শেষ দিকে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে জেঁকে বসেছে শীত। ঘন কুয়াশার সঙ্গে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে শীতজনিত রোগ-বালাই।
এদিকে ঠান্ডা, শ্বাসকষ্ট, অ্যালার্জি এবং চর্মরোগসহ শীতকালীন নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত রোগীদের ভিড় বাড়ছে বরিশালের হাসপাতালগুলোতে। রোগী বাড়লেও হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন রোগীরা। চিকিৎসকদের অবহেলা না থাকলেও পর্যাপ্ত জায়গা এবং শয্যা সংকটের কারণে হাসপাতালের মেঝেতেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে তাদের
চিকিৎসকরা বলছেন, ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্তদের মধ্যে শিশু এবং বৃদ্ধদের সংখ্যা বেশি। শীতে রোগমুক্ত থাকতে সাবধানতা অবলম্বনের পাশাপাশি পরিচ্ছন্ন গরম পোশাক পরিধানের পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
সরেজমিনে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ঘুরে দেখা যায়, সকাল ৮টা বাজতেই মেডিসিন এবং চর্ম বহিঃবিভাগে রোগীদের দীর্ঘ লাইন পড়ে যাচ্ছে। ভিড় লেগে থাকছে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত। এসব রোগীর মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত।
বহিঃবিভাগের চিকিৎসকদের দাবি, মেডিসিন ও চর্ম বহিঃবিভাগে প্রতিদিন গড়ে ৩ থেকে ৪শ রোগী আসছে। এদের মধ্যে বেশিরভাগ শ্বাসকষ্ট, এলার্জিং এবং চর্মরোগে আক্রান্ত। বৃদ্ধ এবং শিশু বয়সের রোগীরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে এসব রোগে। তাদের অন্যান্য ওষুধের সাথে চিকিৎসা হিসেবে ওয়েনমেন্ট, প্যারাসিটামল, হিস্টাসিন দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, শুধু বহিঃবিভাগেই নয়, হাসপাতালের মেডিসিন আন্তঃবিভাগেও শীতকালীন রোগে আক্রান্ত রোগীর চাপ বেড়েছে দ্বিগুণ। বিশেষ করে বয়ষ্ক শ্বাসকষ্টজনিত রোগীদের ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নগরীর রূপাতলী দপদপিয়া এলাকার বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব আসলাম হাওলাদার জানান, আগে থেকেই শ্বাসকষ্টে ভুগছেন তিনি। তবে গত তিন দিন ধরে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির সাথে সাথে তার শ্বাসকষ্টও বেড়ে যায়। নিয়মিত ওষুধে কাজ না হওয়ায় অসুস্থবোধ করায় সোমবার দুপুরে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। চিকিৎসাগ্রহণের পর এখন অনেকটা সুস্থ।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ডা. রবিন্দ্র নাথ বলেন, মূলত আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে বিভিন্ন বয়সের মানুষ শীতকালীন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বিশেষ করে শিশু রোগীদের চাপ এখন একটু বেশি।
তিনি আরও বলেন, পুরোনো শ্বাসকষ্টের রোগীরা সাবধানে না থাকলে তাদের অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকিটা বেশি থাকে। এছাড়া ঠান্ডা, কাঁশি, গলাব্যথা, শ্বাসকষ্ট এবং শিশুদের নিউমোনিয়ায় আক্রান্তের ঝুঁকি থাকে। তাই শীতকালীন রোগ প্রতিরোধে শীতকালীন পোশাক এবং ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে নিয়মিত মাস্ক পড়ার অভ্যাস করতে হবে। এ ছাড়া যাদের শ্বাসকষ্ট রয়েছে তারা ইনহেলার ব্যবহার করবেন। যাদের নাকে এলার্জির সমস্যা রয়েছে তারা নাকের স্প্রে নিতে পারেন। স্বাস্থ্য সচেতন হলে শীতকালীন রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব বলে জানান এই চিকিৎসক।