ঢাকাসোমবার , ৩০ অক্টোবর ২০২৩

বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুলের মুক্তি ও নির্বাচন নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবকে চিঠি।

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
অক্টোবর ৩০, ২০২৩ ১১:০৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিউজ ডেস্ক  :: জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের কাছে চিঠি লিখেছেন ব্রিটেনের বার্মিংহামের প্রতিষ্ঠান নিউ হোপ গ্লোবালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফয়েজ উদ্দিন এমবিই। চিঠিতে তিনি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে মুক্তি দিতে বাংলাদেশ সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন।

 

জাতিসংঘের মহাসচিব পাঠানো চিঠিতে তিনি মোট ৪টি বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানানোর কথা বলেছেন। ৪টি বিষয়ের মধ্যে রয়েছে, অবিলম্বে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সকল রাজনৈতিক বন্দির মুক্তি, ২০২৪ সালের আসন্ন নির্বাচন একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আয়োজন করা, বিরোধীদলের কর্মীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সৃষ্টি করে এমন সব সরকার-নেতৃত্বাধীন কর্মসূচি বন্ধ এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আইনিব্যবস্থার অপব্যবহারের সুষ্ঠু তদন্ত।

 

 

চিঠির শুরুতে বিরোধীদলীয় নেতা মির্জা ফখরুল ইসলামসহ অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানি বন্ধে হস্তক্ষেপ কামনা করে ফয়েজ উদ্দিন জাতিসংঘ মহাসচিবের উদ্দেশ্যে বলেন, আশা করি আপনি ভালো ও সুস্থ আছেন। ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের অবনতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অত্যন্ত জরুরি এবং উদ্বেগের কিছু বিষয় আপনার নজরে আনতে আমি এ চিঠিটি লিখছি।

 

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতা, ভীতিপ্রদর্শন এবং হয়রানি উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, অভিযোগ রয়েছে বিরোধী দল ও তাদের সদস্যদের দমন করার জন্য ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এসব করছে। সহিংসতা উসকে দেওয়ার লক্ষ্যে সরকার পরিচালিত কর্মসূচি ডাকা হচ্ছে। এসব কর্মসূচি বিরোধীকর্মীদের জন্য প্রতিকূল পরিবেশ তৈরি করছে।

 

আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠেছে যে তারা এ হিংসাত্মক কার্যকলাপে যুক্তদের আশ্রয় এবং সমর্থন দিচ্ছে। বিষয়টিকে অত্যন্ত দুঃখজনক বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

 

 

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এর চেয়েও খারাপ বিষয় হচ্ছে, সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তারা বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দায়ের করছে, রাজনৈতিক ভিন্নমত দমন করছে। আসন্ন নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষুণ্ন করতে আইনিব্যবস্থার অপব্যবহার করছে। এ কাজগুলো গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং আইনের শাসনের প্রধান নীতিগুলোকে স্পষ্টভাবে উপেক্ষা করে।

 

 

জাতিসংঘ মহাসচিবকে বাংলাদেশ সরকারের কাছে কয়েকটি বিষয়ে আহ্বান জানানোর অনুরোধ করে চিঠিতে বলা হয়, এমন অবস্থায় আমি আপনার (জাতিসংঘ মহাসচিব) কাছে জরুরিভাবে অনুরোধ জানাই, যাতে আপনি আপনার সম্মানজনক পদ ব্যবহার করে কয়েকটি বিষয়ে আহ্বান জানান।

 

 

বিষয়গুলো হচ্ছে- ১. অবিলম্বে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ রাজনৈতিক কারণে বন্দি অন্যান্য রাজনৈতিক নেতা ও কর্মীদের মুক্তি দিতে হবে।

 

 

২. তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। ২০২৪ সালের নির্বাচনে স্বচ্ছতা, ন্যায্যতা এবং সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিতে এ উদ্যোগ নেওয়ার নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

 

 

৩. বিরোধীদলের কর্মীদের হয়রানি এবং তাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উসকে দেয় এমন সকল সরকার-নেতৃত্বাধীন কর্মসূচি বন্ধ করতে হবে।

 

 

৪. রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলেন জন্য আইনিব্যবস্থার অপব্যবহার তদন্ত করতে হবে। বিরোধী নেতা ও কর্মীদের বিরুদ্ধে থাকা সব রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

 

 

একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে চিঠিতে জাতিসংঘ মহাসচিবের উদ্দেশ্যে বলা হয়, আপনার নেতৃত্বে থাকা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নীতি এবং মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

 

 

বাংলাদেশে একটি ন্যায্য ও ন্যায়সঙ্গত নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বলে চিঠির শেষে ফয়েজ উদ্দিন তার আশা ব্যক্ত করেন।