ঢাকাশনিবার , ২ নভেম্বর ২০২৪

বরিশালে ভয়াবহ বিপর্যয়ে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা প্রতিদিন ৪-৬ ঘন্টারও বেশী অন্ধকারে থাকছেন দক্ষিণাঞ্চল বাসি,  ১১ লাখ শিক্ষার্থীর পড়ালেখায় বাধা

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
নভেম্বর ২, ২০২৪ ১০:৫২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশালে ভয়াবহ বিপর্যয়ে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা প্রতিদিন ৪-৬ ঘন্টারও বেশী অন্ধকারে থাকছেন দক্ষিণাঞ্চল বাসি,  ১১ লাখ শিক্ষার্থীর পড়ালেখায় বাধা

সাম্প্রতিককালের নজিরবিহীন বিদ্যুৎ ঘাটতিতে ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে বরিশালে। বিভাগীয় শহর থেকে শুরু করে পল্লী এলাকার প্রায় ৩০ লাখ বিদ্যুৎ গ্রাহকের দুর্ভোগের কোন শেষ নেই। সান্ধ্য পীক আওয়ারে প্রায় ৯শ মেগাওয়াট চাহিদার দক্ষিণাঞ্চলে গত কয়েকদিন ধরে সরবরাহ ৫শ মেগাওয়াটের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে। ভারতীয় আদানী এবং পায়রা, রামপাল মাতারবাড়ী সহ কয়লা ভিত্তিক বেশ কয়েকটি তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন হ্রাসের ফলে জাতীয় গ্রীডে সরবরাহ সংকটজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। ফলে সারা দেশের মত দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলার ৪২টি উপজেলায় সকাল থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত বিদ্যুৎ ঘাটতি মারাত্মক পরিস্থিতি ধারণ করেছে। স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার বার্ষিক পরিক্ষার আগে এ বিদ্যুৎ ঘাটতি দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় ১১ লাখ শিক্ষার্থীর লেখাপড়ায় ক্ষেত্রে বড় ধরণের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শিল্প ও ব্যবসা-বানিজ্যের অবস্থা ধীরে ধীরে নাজুক হচ্ছে। বেশীরভাগ শিল্প প্রতিষ্ঠানেই প্রতি শিফটে ২-৩ ঘন্টা পর্যন্ত উৎপাদন বন্ধ থাকলেও শ্রমিকদের বসিয়ে বেতন দিতে হচ্ছে। ফলে লোকসান ঝুঁকির মুখে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান। হেমন্তের অস্বাভাবিক তাপমাত্রার সাথে বিদ্যুৎ ঘাটতি জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলছে। শিল্প-বানিজ্যের পাশাপাশি অনিশ্চয়তা তৈরী করছে শিক্ষা ক্ষেত্রে। প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল ও মাদ্রাসাগুলোতে বার্ষিক পরিক্ষার আগের এ বিদ্যুৎ ঘাটতি দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় ১১ লাখ ছাত্র-ছাত্রীকে চরম অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিচ্ছে।

দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানী ‘ওজোপাডিকো’র প্রায় ৪ লাখ গ্রাহক ছাড়াও ৬টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আরো ২৪ লাখ গ্রাহকের মাধ্যমে এ অঞ্চলের পায় কোটি মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতাভুক্ত। এখন প্রতিদিন ৪-৬ ঘন্টারও বেশী অন্ধকারে থাকছেন সবাই। কবে এ সংকট থেকে উত্তরণ ঘটবে তা বলতে পারছেন না বিতরণ প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্বশীল মহল।
বরিশাল অঞ্চলে সরকারি-আধা সরকারি এবং বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে উৎপাদিত প্রায় আড়াই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রীডে সরবরাহ করা হলেও সেখানে থেকে এ অঞ্চলের চাহিদা মাফিক ডে-পীক আওয়ারে ৬শ মেগাওয়াট এবং পুরো পীক আওয়ারে ৯শ মেগাওয়াটের অর্ধেকের বেশী বিদ্যুৎ মিলছে না।

অপরদিকে, ভঙ্গুর বিতরণ ব্যবস্থার কারণেও বরিশাল মহানগরী সহ দক্ষিণাঞ্চলের সর্বত্রই গ্রাহকের ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছানো নিয়ে বিড়ম্বনার শেষ নেই। এ অঞ্চলে ওজোপাডিকো এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলো গ্রাহক সেবার বিষয়টি সুষ্ঠু বিবেচনায় নিয়ে বিতরণ ও সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নত করতে পারেনি। এখনো সুষ্ঠু রক্ষনাবেক্ষন ও মেরামত ব্যবস্থা সহ নিবিড় গ্রাহকসেবা গড়ে তুলতে পারেনি বিদ্যুৎ বিতরণ প্রতিষ্ঠানগুলো। পিডিবি থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া লাইন সহ বিদ্যুৎ স্থাপনা নিয়ে গঠিত হওয়ার প্রায় দুই দশক পরেও ওজোপাডিকো সুষ্ঠু বিতরণ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ বলে অভিযোগ গ্রাহকদের। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলো বিদ্যুৎ বিতরণে অতিরিক্ত টেকসই সহ ভিন্ন নকশায় লাইন ও সাব-স্টেশনসমূহ গড়ে তুললেও দীর্ঘ দিনে তারা সঠিক পেশাদারিত্বের পরিচয় দিতে পারেনি।