
নিজস্ব প্রতিবেদক :: মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২২ দালাল আটক, মোবাইল কোর্টে ১৫ দিনের কা*রাদ*ণ্ড।
রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী ভাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ২২ জন দালালকে আটক করে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত যৌথ বাহিনীর অভিযানে হাসপাতাল এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
জানা গেছে, আটককৃতদের মধ্যে পাঁচজন নারী রয়েছেন। অভিযান চলাকালে মোট ৩২ জনকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়। যাচাই-বাছাই শেষে ২২ জনের বিরুদ্ধে দালালির স্পষ্ট প্রমাণ মেলায় তাদের সাজা দেওয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
অভিযান পরিচালনায় অংশ নেয় সেনাবাহিনী, পুলিশ ও প্রশাসনের একটি যৌথ দল। পরে হাসপাতাল চত্বরে বসানো হয় ভ্রাম্যমাণ আদালত, যেখানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাৎক্ষণিকভাবে দণ্ড ঘোষণা করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হাসপাতাল কর্মকর্তা জানান, “হাসপাতালটিতে অনেকদিন ধরেই দালালদের দৌরাত্ম্য চলছিল। তারা মূলত স্থানীয় হওয়ায় কেউ সহজে মুখ খুলতে সাহস করত না। কিন্তু বর্তমান পরিচালক দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই নিয়মিতভাবে দালালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন।”
তিনি আরও বলেন, “পরিচালক নিজে তদারকি করছেন, এবং রোগী ও স্বজনদের অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়ে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিচ্ছেন। এ অভিযানে তার নেতৃত্বই বড় ভূমিকা রেখেছে।”
এদিকে হাসপাতালে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। অনেকেই জানান, দালালদের কারণে হাসপাতালে ঠিকমতো সেবা পাওয়া যায় না, বিভিন্ন পরীক্ষা ও ওষুধের জন্য বাইরে দৌড়াতে হয়।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ ধরনের অভিযান নিয়মিত চালানো হবে এবং হাসপাতাল এলাকা দালালমুক্ত রাখার জন্য কঠোর নজরদারি বজায় থাকবে।
জানা গেছে, ভোর থেকেই হাসপাতালে অভিযান শুরু করে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই), সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বিশেষ দল। তারা রোগীর ছদ্মবেশে অবস্থান করে সক্রিয় দালালদের চিহ্নিত করে। এরপর অভিযান চালিয়ে ২২ জনকে আটক করা হয়, যাদের মধ্যে ১৭ জন পুরুষ ও ৫ জন নারী।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল বিভাগের স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট মহিদুর রহমান পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত দুপুরে বসিয়ে তাদের সাজা ঘোষণা করেন।
তিনি জানান, আটককৃত দালালরা দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ মানুষকে নানা প্রলোভন দেখিয়ে পাশের বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যেত। তারা পরীক্ষার নামে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নিতো, ফলে রোগীরা যেমন আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতো, তেমনি প্রয়োজনীয় চিকিৎসাও পেতো না।
ম্যাজিস্ট্রেট আরও বলেন, হাসপাতালের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে এ ধরনের অভিযান নিয়মিত চলবে। দালালদের বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা নীতি অবলম্বন করা হয়েছে।