ঢাকাশনিবার , ২৪ মে ২০২৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার এক পুলিশ ক*র্ম*ক*র্তার বি*রু*দ্ধে ঘু*ষ নেওয়ার অ*ভি*যোগ

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
মে ২৪, ২০২৫ ১১:২৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতয়ালী মডেল থানার এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এদিকে ঘুষের টাকা নিয়ে ভুক্তভোগীদের মাঝে বিরোধের সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় চলছে।

অভিযুক্ত উপ-পরিদর্শক (এসআই) হুমায়ুন। তিনি চরমোনাই ইউনিয়নে বিট পুলিশিং অফিসার হিসেবে কর্মরত রয়েছে। তবে অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তিনি।

জানা গেছে- গত ১৫ মে বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের জসিম মাতুব্বরের ছেলে সানিম তার প্রেমিকাকে নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ১৬ মে ওই মেয়ের বাবা মোঃ জহির হোসেন কোতয়ালী মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। লিখিত অভিযোগ ও সানিমকে পালিয়ে যেতে সহায়তার অভিযোগে ১৭ মে দুপুরে তার বন্ধু রাফি ও তুষারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসেন এসআই হুমায়ুন। আনার পথে এসআই হুমায়ুন তাদের উত্তম-মধ্যমও দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এরপর নানাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সন্ধ্যায় রাফি ও তুষারের অভিবাবকরা থানায় আসলে গভীর পর্যন্ত তাদের বসিয়ে রেখে পাঠিয়ে দেন এসআই হুমায়ুন। পরদিন ১৮ মে রাফি ও তুষারের অভিবাবকরা পুনারায় থানায় আসলে ৭২ ঘন্টার মধ্যে সানিম ও তার প্রেমিকাকে হাজির করার শর্তে মুচলেকা নিয়ে রাফি ও তুষারকে ছেড়ে দেয়া হয়। এ সময় রাফি ও তুষারের বাবার কাছ থেকে ১৬ হাজার টাকা ঘুষ নেন এসআই হুমায়ুন। এরপর ২০ মে সানিমের প্রেমিকাকে খুঁজে বের করে থানায় নিয়ে যান তার বাবা জসিম মাতুব্বর। সেখানে দুই পক্ষকে ডেকে একটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রেখে মেয়েকে তার বাবা মোঃ জহির হোসেনের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়। এ সময় জসিম মাতুব্বরের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা ঘুষ নেন এসআই হুমায়ুন।

এদিকে সানিমের কারণে রাফির বাবার ৮ হাজার টাকা গচ্ছা যাওয়ায় সানিমের একটি বাইসাইকেল আটকে রেখেছে রাফির মা। তার দাবি- সানিমের জন্য তার ছেলে রাফিকে থানায় আটকে ৮ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়া হয়েছে। সেই টাকা ফেরত দিয়ে সানিম তার বাইসাইকেলটি ছাড়িয়ে নেবে।

রাফির মা বলেন- সানিমের জন্য তার ছেলে রাফি ও তুষারকে থানায় আটকে রাখা হয়েছিল। এবং তাদের কাছ থেকে ১৬ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন এসআই হুমায়ুন।

রাফির বাবা কামাল বলেন- রাফির আটকের খবর শুনে থানায় যাই। ওই দিন গভীর পর্যন্ত আমাদের থানা বসিয়ে রেখে পাঠিয়ে দেন এসআই হুমায়ুন। পরদিন আবার থানায় গেলে ৭২ ঘন্টার মধ্যে সানিম ও তার প্রেমিকাকে হাজির করার শর্তে মুচলেকা নিয়ে রাফি ও তুষারকে ছেড়ে দেয়া হয়। এ সময় আমার ও তুষারের বাবার কাছ থেকে ১৬ হাজার টাকা ঘুষ নেন এসআই হুমায়ুন।

রাফির চাচা চাঁন মিয়া বলেন- আমরা থানায় গেলে ৭২ ঘন্টার মধ্যে সানিম ও তার প্রেমিকাকে হাজির করার শর্তে মুচলেকা নিয়ে রাফি ও তুষারকে ছেড়ে দেয়া হয়। এ সময় আরিফ নামের এক লোককে দিয়ে রাফি ও তুষারের বাবার কাছ থেকে ১৬ হাজার টাকা ঘুষ নেন এসআই হুমায়ুন।

তুষারের মা বলেন- সানিম ও তার প্রেমিকাকে পালিয়ে যেতে সহায়তার অভিযোগে তুষার ও রাফিকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এর পরদিন ৮ হাজার টাকা করে দুই পরিবারের কাছ থেকে ১৬ হাজার টাকা নিয়ে শর্ত সাপেক্ষে ছেড়ে দেয়া হয়। এই টাকাটা অন্য লোক দিয়ে নিয়েছিলেন এসআই হুমায়ুন।

সানিমের বাবা জসিম মাতুব্বর বলেন- আমি শুনেছি রাফি ও তুষারের বাবার কাছ থেকে ১৬ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন এসআই হুমায়ুন। আমার কাছ থেকেও ৫ হাজার টাকা নিয়েছেন তিনি। এদিকে এসআই হুমায়ুন টাকা নেওয়ায় সানিমের একটি একটি বাইসাইকেল আটকে রেখেছে রাফির মা। তার দাবি- সানিমের জন্য তার ছেলে রাফিকে থানায় আটকে ৮ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়া হয়েছে। সেই টাকা ফেরত দিয়ে সানিম তার বাইসাইকেলটি ছাড়িয়ে নেবে।

সানিমের মা বলেন- রাফি ও তুষারকে নাকি থানায় আটকে রেখে ১৬ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন এসআই হুমায়ুন। সেজন্য রাফির মা সানিমের একটি বাইসাইকেল আটকে রেখেছে। টাকা না দিলে নাকি বাইসাইকেলটি ছাড়বেন না।

সানিম বলেন- আমার বাইসাইকেলটি রাফির বাসায় রাখাছিল। আমি সেটি আনতে গেলে রাফির মা বাইসাইকেলটি আটকে রাখেন। এবং বলেন তোমার জন্য আমার ছেলে রাফি ও তুষারের জন্য ১৬ হাজার টাকা পুলিশকে দিতে হয়েছে। এখন সেই টাকা দিয়ে বাইসাইকেল ফিরিয়ে আনতে হবে।

এসআই হুমায়ুন ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমি যথাযথ নিয়ম মেনে কাজ করেছি। আমি কোন টাকা-পয়সা নেইনি।

এ নিয়ে কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আপনার (প্রতিবেদক) কাছ থেকে শুনলাম। এই অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হবে।