ঢাকাশনিবার , ১২ জুলাই ২০২৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মায়ের পাশেই সমাহিত হলেন মিটফোর্ডের সামনে হ*ত্যা*র শি*কা*র সেই ব্যবসায়ী

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
জুলাই ১২, ২০২৫ ২:১৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিউজ ডেস্ক :: মাত্র সাত মাস বয়সে বজ্রপাতে বাবা হারানো বরগুনার ছেলে লাল চাঁদ ওরফে সোহাগের (৩৬) জীবন শেষ হলো আরও একটি নির্মম সহিংসতা দিয়ে। পেশায় ভাঙারি ব্যবসায়ী ছিলেন তিনি। রাজধানীর মিটফোর্ডে দোকানে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার পর ঢুকতে গেলে প্রকাশ্যে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয় তাকে। মাথা ও শরীরে ইট পাথরের আঘাতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনি। নিহতের স্ত্রী লাকি বেগম ও দুই সন্তান এখন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে।
এদিকে মৃত্যুর পর শুক্রবার (১১ জুলাই) সোহাগকে বরগুনার রায়ভোগ গ্রামে তার মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় বরগুনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

এ হত্যাকাণ্ড ঘিরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। নাগরিক সমাজ, মানবাধিকার সংস্থা ও রাজনৈতিক দলগুলো বিচারের দাবি তুলেছে।

শনিবার (১২ জুলাই) মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা করেছে বরগুনা প্রেস ক্লাব।

সোহাগের পরিবার জানায়, একটি চাঁদাবাজ চক্র দীর্ঘদিন ধরে সোহাগের কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করে আসছিল। রাজি না হওয়ায় গত ৯ জুলাই বিকেলে পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালানো হয়।
ঘটনার পর মামলা হলেও নিহতের পরিবারের অভিযোগ, মূল আসামিদের নাম বাদ দিয়ে মামলায় অন্যদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

শুধু ব্যবসায়ী নন সোহাগ ছিলেন রাজনৈতিকভাবে সক্রিয়। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের সামাজিক মাধ্যমে সোহাগের একটি পুরনো ছবি প্রকাশ করে দাবি করেছেন, সোহাগ বিএনপির সহযোগী সংগঠন যুবদলের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। গত বছরের ডিসেম্বরে যুবদলের এক কর্মীসভায় অংশও নিয়েছিলেন।
অভিযোগ উঠেছে, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর মিটফোর্ডে চাঁদা আদায়ের নিয়ন্ত্রণ নেয় বিএনপির ঢাকা-৭ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী ইসহাক সরকারের অনুসারীরা। যুবদল নেতা মহিনকে দায়িত্ব দেওয়া হয় চাঁদার পরিমাণ দ্বিগুণ করার। এতে সোহাগ প্রতিপক্ষ গ্রুপে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করেন।

এই বিরোধ থেকেই হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, হামলার পর নিথর দেহের ওপরও চালানো হয় আঘাত। কেউ পাথর ছুঁড়ছে, কেউ আবার মরদেহের উপর দাঁড়িয়ে উল্লাস করছে। শত শত মানুষ দাঁড়িয়ে থাকলেও কেউ এগিয়ে আসেননি।

ঢাকা মহানগর পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় যুবদল নেতা মহিন, রবিনসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজন রিমান্ডে রয়েছেন। বিএনপি যুবদল ও ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে এবং সংগঠনের সব পর্যায়ে জিরো টলারেন্স নীতির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে দলীয় নেতাদের কেউ কেউ বলেছেন, সোহাগ নিজেও দলের কর্মী হওয়ায় বিষয়টি আরও জটিল।