
নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশাল কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) যেন অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রি-ডিপার্চার ওরিয়েন্টেশন কোর্স, হোস্টেল ভাড়া, রেস্ট হাউজ পরিচালনা, সরকারি প্রকল্পের অর্থ ব্যয় ও টেন্ডার প্রক্রিয়া—সবখানেই স্বজনপ্রীতি ও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এসব অনিয়মের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন বর্তমান অধ্যক্ষ গোলাম কবির।
অনুসন্ধান সূত্রে জানা যায়, বিদেশগামী কর্মীদের অস্থায়ী আবাসনের জন্য টিটিসির ছাত্র হোস্টেল ব্যবহার করা হলেও, প্রতিদিন ১০০ টাকা হারে অবৈধভাবে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। অথচ এসব হোস্টেল মূলত দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের ছাত্রদের জন্য নির্মিত হলেও বর্তমানে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে ভাড়া নেওয়া হলেও কোনো রকম সরকার নির্ধারিত রশিদ প্রদান করা হয় না।
একইভাবে টিটিসির রেস্ট হাউজেও অনিয়ম চলছে। প্রতিদিন পাঁচটি কক্ষ ভাড়া দেওয়া হলেও আয় হিসাবের খাতায় মাত্র একটি বা দুটি কক্ষের ভাড়া দেখানো হয়। এতে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে এবং প্রতিষ্ঠানের আর্থিক স্বচ্ছতা মারাত্মকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। অধ্যক্ষের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন ব্যক্তি এই অর্থনৈতিক লেনদেনের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে।
শুধু তাই নয়, টিটিসির ছোটখাটো মেরামত ও ক্রয়সংক্রান্ত কাজগুলোতেও অনিয়ম চলে আসছে। প্রকাশ্য টেন্ডার আহ্বান না করে অধ্যক্ষ নিজ পছন্দের কিছু লোকের নামে নামমাত্র লাইসেন্স দেখিয়ে কাজ করান। লাইসেন্সের নামে সামান্য অর্থ দেওয়া হলেও কাজের অধিকাংশ অর্থ আত্মসাৎ করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
তথ্যানুযায়ী, তিন মাস ও ছয় মাস মেয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের জন্য প্রতিটি ব্যাচে ৮৫ হাজার টাকা বরাদ্দ থাকে প্রশিক্ষণ উপকরণ ক্রয়ের জন্য। কিন্তু শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো উপকরণ না কিনে অধ্যক্ষ তার ঘনিষ্ঠ শিক্ষক ও আত্মীয়দের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে বরিশাল টিটিসির অধ্যক্ষ গোলাম কবির বলেন, “আমি এসব বিষয়ে কিছুই জানি না।”