
নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশালের বাকেরগঞ্জে জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে মৃত ব্যক্তির মরদেহ দাফনে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপি নেতা বাবুল মোল্লার বিরুদ্ধে। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার দূর্গাপাশা ইউনিয়নের চর লক্ষ্মীবর্ধন গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপে রাত ৯টার দিকে মরদেহ দাফন সম্পন্ন হয়।
মরহুম রহিম খান (৫৫)-এর ছেলে কামাল খান জানান, ২০১৯ সালে তার বাবা ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পদপ্রার্থী বাবুল মোল্লার কাছ থেকে জমি কেনার জন্য প্রতি শতক ১১ হাজার টাকা দরে ২০ শতক জমির চুক্তি করেন। এ জন্য নগদ ২ লাখ ২০ হাজার টাকা বাবুল মোল্লাকে দেওয়া হয় এবং সাক্ষীদের উপস্থিতিতে লিখিত স্ট্যাম্পেও তা লিপিবদ্ধ হয়।
এরপর রেজিস্ট্রির জন্য বাবুল মোল্লা আরও ৫০ হাজার টাকা অতিরিক্ত নেন। কিন্তু রেজিস্ট্রি করার দিন এলেও তিনি জমি হস্তান্তর না করে নানা টালবাহান শুরু করেন। অভিযোগ অনুযায়ী, চার মাস আগে রেজিস্ট্রি করতে বললে বাবুল মোল্লা অস্বীকার করেন এবং রহিম খানকে ডেকে নিয়ে ছাত্রদল নেতা প্রিন্স কাজীর বাড়িতে মারধর করে জোরপূর্বক ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন। ওই ঘটনার পর থেকেই রহিম খান অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার তিনি মারা যান।
কামাল খান আরও জানান, বাবার দাফনের জন্য কবর খনন শুরু করলে বাবুল মোল্লা ও তার ছেলে, দূর্গাপাশা ইউনিয়ন ছাত্রদল সভাপতি শাকিল মোল্লার নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়। এতে তার বোন জুলেখা গুরুতর আহত হন এবং বড় ভাইও লাঠির আঘাতে আহত হন।
৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রমজান গাজী বলেন, রহিম খানের সঙ্গে বাবুল মোল্লার লিখিত চুক্তি ছিল। জমি বিরোধের জের ধরেই মরদেহ দাফনে বাধা সৃষ্টি হয়েছিল। তবে পুলিশ উপস্থিত হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় এবং রাত ৯টার দিকে দাফন সম্পন্ন হয়।
দূর্গাপাশা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল শিকদার বলেন, আমি বর্তমানে ঢাকায় আছি, এ বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে বাবুল মোল্লা সাংগঠনিক সম্পাদক পদে প্রার্থী ছিলেন।
বাকেরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব কামরুজ্জামান মিজান জানান, আমাদের নেতা তারেক রহমান স্পষ্ট করেছেন—কোনও নেতাকর্মী অন্যায় করলে ছাড় পাবে না। এ অভিযোগ আমরা যাচাই করব এবং সত্য হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, মৃত রহিম খানের সঙ্গে জমি ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত বায়না চুক্তি ছিল। সেই চুক্তির টাকা ফেরত বা জমি হস্তান্তরের বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরেই দাফনে বাধা সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।