
নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশালে যুবলীগ কর্মীর রডের আঘাতে স্থানীয় এক ঠিকাদার গুরুতর আহত হয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে- ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও ওই যুবলীগ কর্মী এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।
রবিবার (১২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে নয়টার দিকে বরিশাল সদর উপজেলার রায়পাশা কড়াপুর ইউনিয়নের মোল্লার দোকান এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আহতের নাম সিদ্দিক হাওলাদার (৫০)। তিনি দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয়ভাবে ঠিকাদারি কাজে নিয়োজিত। সম্প্রতি যুবলীগ কর্মী রিপন হাওলাদারের (৪০) অনৈতিক কার্যকলাপে সম্মতি না দেওয়ায় তার ওপর ক্ষুব্ধ হন রিপন। ঘটনার দিন সকালে তিনি আকস্মিকভাবে লোহার রড দিয়ে সিদ্দিক হাওলাদারকে এলোপাতাড়ি পেটান। স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আহতের মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে গভীর ক্ষত রয়েছে, অবস্থা আশঙ্কাজনক।
জানাযায়, রিপন হাওলাদার বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাদিক আব্দুল্লাহ এবং রায়পাশা কড়াপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাহারিয়া বাবুর ঘনিষ্ঠ অনুসারী। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন সময় তিনি তাদের ছত্রছায়ায় থেকে ভূমি দখল, অর্থ আত্মসাৎ, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, তার নামে একাধিক মামলা থাকলেও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে তিনি সবসময় আইনের আওতার বাইরে ছিলেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা হারানোর পরও তার দাপট কমেনি বরং এখন তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, “ক্ষমতা হারানোর পরও এইসব যুবলীগ কর্মীরা এলাকায় সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে। রিপনের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও ফৌজদারি মামলা থাকলেও তাকে কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না—এ প্রশ্নের জবাব কেউ দিচ্ছে না। প্রশাসনের নীরবতা আমাদের হতবাক করেছে।”
অন্যদিকে আহতের পরিবারের সদস্যরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “রিপন হাওলাদারের ভয়ে এলাকার মানুষ আতঙ্কে থাকে। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে হয়রানি বা মারধরের শিকার হতে হয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন সে ছিল অপ্রতিরোধ্য, এখনো তেমনি।”
এ বিষয়ে রিপন হাওলাদারের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সংযোগটি বিচ্ছিন্ন পাওয়াযায়।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের বিমানবন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আল মামুন উল ইসলাম জানান, “লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”