
নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে নিজ বসতঘরে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ পাওয়া গেছে। পুলিশ ও পরিবারের দাবি, গলায় ফাঁস দিয়ে তারা আত্মহত্যা করেছে। তবে কী কারণে তারা এমন পথ বেছে নিলেন- তা এখনো পরিষ্কার হয়নি।
রাঙ্গাবালী উপজেলার চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের উত্তর চালিতাবুনিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সকাল ৯টার দিকে বসতঘর থেকে রাকিব প্যাদা (৩০) ও তার স্ত্রী সোহাগী বেগমের (২৫) মরদেহ উদ্ধার করে রাঙ্গাবালী থানা পুলিশ।
এ সময় নিহত দম্পতির ঘর থেকে একটি ডায়েরি উদ্ধার করা হয়। ওই ডায়েরির দুইটি পাতায় স্বামী-স্ত্রীর স্বাক্ষরিত চিরকুট পাওয়া গেছে। ওই চিরকুটে লেখা “মানসম্মান সব গেছে। বাঁচ্ছা (বেঁচে) থাকার কি হবে? এই বাক্যটি ঘিরেই রহস্য তৈরি হয়েছে।
চিরকুটে লেখা ছিল ‘সোহাগীসহ ইচ্ছা মৃত্যুবরণ করবো।’ আমাদের লাশ যেন পোস্টমর্টেম (ময়নাতদন্ত) না করে। আমাদের কবর যেন ঘরের পশ্চিম পাশে দুইজনের লাশ একসাথে হয়। আমি নিরপরাধী। মানসম্মান সব গেছে। বাঁইচ্ছা (বেঁচে) থাইকা কি হবে। নিজের জীবন নিজে দিছি। আমার পোলার (ছেলের) দিকে খেয়াল রাখবেন সবাই। আমার পোলা মা-বাবা ছাড়া এতিম। আমাদের দু’জনকে সবাই মাফ করে দিয়েন। ১২ বছর বিয়ে হয়েছে। এরকম খারাপ এখন কেন।”
স্থানীয় লোকজন বলছেন, এই চিরকুটের লেখা প্রত্যেকটি লাইন এখন প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছে কী এমন সংকট তৈরি হয়েছিল যে শিশু সন্তান রেখে দু’জন একসঙ্গে মৃত্যুর পথ বেছে নিলেন? এলাকাবাসীর দাবি, তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার মূল রহস্য বের হয়ে আসুক।
জানা গেছে, সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাটি ঘটে বলে জানায় গ্রামবাসী। নিহত দম্পতির প্রতিবেশী এক আত্মীয় ঘরে ঢুকে তাদের ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান এবং চিৎকার করলে স্বজনরা এসে লাশ নামিয়ে ফেলেন। জানা গেছে, রাকিব-সোহাগী দম্পতির সাত বছর বয়সি মুজাহিদ নামের এক ছেলে সন্তান রয়েছে।
চালিতাবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ দফাদার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘দুইজনের গলায় ফাঁসের দাগ রয়েছে। আমরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই পরিবারের লোকজন ঝুলন্ত মরদেহ নিচে নামিয়ে রেখেছিল। স্থানীয়দের কাছে শুনেছি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলা ছিল। ১০-১২দিন আগেও ঝামেলা হয়েছিল নাকি।’
এ ব্যাপারে রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম হাওলাদার বলেন, ‘চিরকুটসহ সব আলামত জব্দ করা হয়েছে। দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হবে।’


