ঢাকাবুধবার , ১৯ নভেম্বর ২০২৫
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বরিশাল নগরীতে কোচিং সেন্টারে তালা দিয়ে কর্তৃপক্ষ উধাও, বিপা‌কে শিক্ষর্থীরা

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
নভেম্বর ১৯, ২০২৫ ১:৫৫ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশাল নগরের ফকির বাড়ি রোডে একটি বহুতল ভবনে থাকা কোচিং সেন্টারের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে কর্তৃপক্ষ উধাও হয়ে গিয়েছে।

 

 

শিক্ষার্থীরা কোচিং কর্তৃপক্ষসহ শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ করতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন। সেই সাথে বাড়ির মালিকও কয়েকমাসের ভাড়া বকেয়া থাকায় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।

 

 

এ অবস্থায় কোচিং পরিচালনাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন বাড়ির মালিক আর ভুক্তভোগী অর্ধশত শিক্ষার্থী তাদের অর্থ ফেরত চাচ্ছেন।

 

 

এ লক্ষ্যে সোমবার (১৭ নভেম্বর) কোচিং সেন্টারের সামনে শিক্ষার্থীরা অভিভাবকদের নিয়ে জড়ো হন এবং কোচিং কর্তৃপক্ষের সন্ধান শুরু করেন। এ নিয়ে কোচিং সেন্টারের ভবন মালিক বিপাকে পড়লে শিক্ষার্থীরা তাদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন।

 

 

শিক্ষার্থীরা জানান, বরিশাল নগরের ফকিরবাড়ি রোডে অবস্থিত একটি বহুতল ভবনে মেডিএইম, রেটিনা প্লাস, ক্যাডেট কেয়ার ও আইকন নামের কোচিং সেন্টারের সাইনবোর্ড টানিয়ে গত কয়েক বছর ধরে বাণিজ্য করে আসছেন ইউসুফ নামের এক ব্যক্তি। বিএসসি নার্সিং এ ভর্তির জন্য সম্প্রতি সেই পরিচালকের আওতাধীন রেটিনা প্লাস কোচিং সেন্টারে তারা ভর্তি হন। শুরুতে কোচিং পরিচালক যে কথা দিয়েছিল সেই অনুযায়ী ক্লাশ কখনও পাওয়া যায়নি। সবশেষ গত একসপ্তাহ ধরে কোচিং এ তালা দিয়ে রাখা হয়েছে।

 

 

 

এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা কিছু অবগত না থাকায় তারা কোচিং পরিচালককে ফোন দিলে তিনি তা রিসিভ করছেন না, আর কোচিং এর পরিচালনার দায়িত্বে রিফাত নামে যে ছিলেন তাকেও পাওয়া যাচ্ছে। ফোন দিলে রিফাত শিক্ষার্থীদের নানানভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছে। এ বিষয়ের সুরাহার জন্য শিক্ষার্থীরা সোমবার ভবন মালিকের শরণাপন্ন হন।

 

 

এ বিষয়ে বাড়ির মালিকের ছেলে তৌফিক হামিদ চৌধুরি বলেন, প্রায় ৪ বছরের মতো সময় ধরে তাদের ভবনের দুটি ফ্লোর ভাড়া নিয়ে মেডিএইম, রেটিনা প্লাস, ক্যাডেট কেয়ার ও আইকন নামের কোচিং সেন্টার পরিচালনা করছেন আবু ইউসুফ। তার লেনদেন আগে থেকে খারাপ থাকায় বারবার সতর্ক করা হতো।

 

সবশেষ সে কৌশলে কাউকে কিছু না জানিয়ে তিনমাসের বাসা ভাড়া বকেয়া রেখে কোচিং সেন্টারে তালা মেরে সটকে পড়েছে। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীরাও প্রতিদিন আসছে কোচিং সেন্টারের খোঁজ নিতে কিন্তু কাউকে না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে।

 

তিনি বলেন, ভাড়ার বিষয়ে কল করা হলে আবু ইউসুফ তা ধরছেন না, হোয়াটস্ অ্যাপে ম্যাসেজ পাঠানো হলে সিন করলেও কোন উত্তর দিচ্ছে না। এ অবস্থায় আমরা চুক্তি অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা চিন্তা করছি।

 

শিক্ষার্থী ও ভবন মালিকের অভিযোগের বিষয়ে আবু ইউসুফের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে কল করা হলে প্রথমে তিনি তা রিসিভ করেননি। কিছুক্ষণ পরে ফিরতি কলে তিনি প্রশ্ন শুনে ব্যস্ত থাকার অযুহাতে এ বিষয়ে পরবর্তীতে জানাবেন বলে জানান। পরে রাতে ফোন দিয়ে আবু ইউসুফ বলেন, পর্যাপ্ত শিক্ষার্থী না পাওয়ায় তিনমাস পূর্বে আমার ম্যানেজার ও স্টাফদের সার্ভিস দিতে বলেছি। তবে সকল শিক্ষার্থীরা তাদের বকেয়া পরিশোধ করেনি দেখে সমস্যা হয়েছে। আমি শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সবার সাথে কথা বলেছি, এমনকি বাড়িওয়ালার সাথেও কথা বলেছি আশাকরি দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।

 

এ বিষয়ে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি স্যারের সাথে কথা বলেছেন এবং তাকে সার্ভিস দেয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত জানিয়ে বলেন, বর্তমান অবস্থায় প্রতিষ্ঠান ধরে রাখা খুবই কঠিন।

 

নানান কারণে স্টাফরা একটু দূরে রয়েছেন জানিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে বলেও জানান কোচিং সেন্টারের এই পরিচালক।

 

এদিকে কোচিং সেন্টার বন্ধের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে, তাই ব্যবস্থা না নিলে তাদের পড়ালেখায় বড়ো ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন অভিভাবকরা।