
রাজিব তাজ :: আমরা ভোট দিয়া মেম্বার চেয়ারম্যান বানাইছি, যাতে আমাগো রাস্তাঘাট কইররা দেয়, আমরা তো ভাত কাপুড় চাই না, আমরা চাই রাস্তাঘাট, তাও এই ১০ বছরে হইবো হইবো কইররা আর হইলো না। পাকা রাস্তা না দেইক্কা মনে হয় মরা লাগবো। এমন ভাবেই কথা গুলো বলছিলেন, বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ৯ নং জাঙ্গালীয়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড সিন্নিরচরের বাসিন্দা জয়নব বিবি।
জাঙ্গালীয়া ইউনিয়নের সিন্নিরচর ওয়ার্ডে প্রায় তিন হাজার পাঁচশো ভোটার, এবং ঘনবসতিপূর্ন এলাকা। কিন্তু এখানের রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা, যেনো দেখার কেউ নেই।
মেহেন্দিগঞ্জের পাতারহাট বন্দর থেকে সিন্নিরচর গ্রামের দূরত্ব হলো সাড়ে তিন কিলোমিটার, সিন্নিরচর থেকে পাতারহাট বাজারে যাওয়ার উপায় যেনো শুধুই মোটরসাইকেল, এছাড়া এই রাস্তায় তিন চাকার অটো রিকসা, রিকসা চলাচল করতে পারে না। ৬-৮ বছর পূর্বে ইটের সলিং দেওয়া হলেও ভারী যানবাহন, ইটের গাড়ি, গাছের গাড়ি, নসিমন, ভটভটি যাতায়াত করার কারনে ইট ভেঙ্গে রাস্তা উঁচুনিচু হয়ে গেছে, ফলে কোন ধরনের গাড়ি চলাচল করতে পারে না। ফলে শিশু, বৃদ্ধা, নারী, পুরুষ, সুস্থ ও অসুস্থ সবাই যাতায়াত করেন মোটরসাইকেলে।
এছাড়া হাওলাদার বাড়ির পুকুর পাড়ের অবস্থা আরো বেহাল দশা, পুকুর পাড়ে বেশ কয়েকবার চালের বস্তা সহ মোটরসাইকেল পরে যায় এবং যাত্রী সহ পুকুরে কয়েকবার হুন্ডা পরে যায়, ফলে যাত্রীদের দুর্ভোগের শেষ নেই।
বদরপুর হুন্ডা ড্রাইভার সমিতির সভাপতি মোঃ আলী বলেন, পাতারহাট বাজার থেকে সিন্নিরচর পর্যন্ত আমরা ড্রাইভার রা ভাড়া টানি, কিন্তু বদরপুর স্ট্যান্ড থেকে গুটিয়ার পোল অবদি মোটামুটি ভালো রাস্তা, কিন্তু গুটিয়ার পোল থেকে সিন্নিরচর বাজার, নামার বাজার অবদি রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ, গাড়ি সঠিক ভাবে চালানো মুশকিল, তাছাড়া সেদিন ৭ মাসের গর্ভবতী একজন মহিলা উঠছিলো গাড়িতে, তারে নিয়া চালাইতেও বেশ কষ্ট হয়, না জোড়ে চালানো যায়, না আস্তে চালানো যায়, তাই এই রাস্তাটা যদি পিচ ঢালাই হয়, তাহলে সিন্নিরচর ও ধূলিয়া মধ্যের চর এলাকার লোকদের জন্য ভালো হবে।
সিন্নিরচর থেকে পাতারহাট বন্দরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোন জরুরী রোগী নিয়ে যাওয়ার কোন উপায় নেই, এছাড়াও এই রাস্তায় এম্বুলেন্স ঢুকতে না পারার কারনে গর্ভবতী মায়েদের কষ্টের যেনো অন্ত নেই, সুচিকিৎসার জন্য তারা সচারাচর হাসপাতালে যেতে পারে না।
এ ব্যাপারে ৪ নং ওয়ার্ড ধূলিয়া মধ্যের চরের ইউপি সদস্য আমিনুল ইসলাম নবোরাজ বলেন, রাস্তাটির বেহাল দশা, তবে উক্ত রাস্তার কোন কোড খুঁজে পাওয়া যায় নি অনলাইনে, যার ফলে বিগত দিনে রাস্তাটির কোন উন্নয়ন হয় নি, তবে আশাবাদী শীগ্রই হবে ইনশাআল্লাহ।
সিন্নিরচর ওয়ার্ড মেম্বার রাজ্জাক মাল বলেন, সিন্নিরচর গ্রামটি বেশ জনবহুল, এখানকার জনগণ বিশেষ করে চিকিৎসা সেবা থেকে অনেক বঞ্চিত, এখানে কোন এম্বুলেন্স আসার সুযোগ নেই, কোন সিরিয়াস রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার কোন ব্যবস্থা নেই, ফলে চিকিৎসা সেবা ব্যহত হয়।
মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উপঃ সহকারী প্রকৌশলী মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, গুটিয়ার পোল থেকে সিন্নিরচর বাজার ও নামার বাজার অবদি রাস্তাটি মেপে স্টিমেট পাঠানো হয়েছে, আগামী নতুন বছর নাগাদ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।