নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশাল বিভাগের ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের চিকিৎসক বৈশাখী বড়ালের বিরুদ্ধে টেস্ট বাণিজ্য ও রোগী হয়রাণির অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী হয়রানির শিকার হয়ে ফেসবুক ভিত্তিক জনপ্রিয় গ্রুপ “ঝালকাঠি জেলা কল্যাণ সমিতি”তে পোস্ট করেন। পোস্টে ভুক্তভোগী সংগঠক আবিয়ান হাসান উল্লেখ করেন, ডাক্তার বৈশাখী বড়াল আপনাকে নিয়ে আজকে লিখতেই হলো – “তিন থেকে চার দিন যাবত আমার ছোট ভাইর হালকা জ্বর এবং খাবারে অরুচি এবং হালকা বমি আসে। খাবারের প্রতি রুচি নেইএই হচ্ছে ওর সমস্যা। এছাড়া কোনো সমস্যা নেই। তো ভালো কথা শনিবার সকালে হাসপাতালে গেল ডাক্তার দেখাতে। টিকিট পেল বৈশাখী ম্যামের (ডা. বৈশাখী বড়াল)।
তারপরে ধরিয়ে দিল ৫/৬ টা টেস্ট। তাও কিনা আবার মাথার একটা এক্সরে অথচ কিন্তু মাথায় কোন সমস্যা নেই । তাহলে এক্সরে কিসের ? তার সঙ্গে দিল ডায়াবেটিস টেস্ট। সেটাও বা কেন দিবে?
সিবিসি এবং টাইফয়েড টেস্ট টা ঠিক আছে । এছাড়া বাকি টেস্টগুলো কিসের জন্য ? আমার সাদা মনে একটা প্রশ্ন। ডাক্তারের চেম্বারে পাশেই দাড়ানো ছিল এক মহিলা। সে তাকে নিয়ে গেল মেডিনোভা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে টেস্ট এর জন্য । এরপরে আমাকে ফোন দেয় আমার বেয়াই নাঈম। সে বলে এই রকমের অবস্থা প্রায় তিন হাজার টাকার টেস্ট। তখন আমি বলছি টেস্ট করতে হবে না আমার কাছে চলে আয়।
আমার কাছে আসার পরে ওরে দেখেই বোঝা যাচ্ছিল ওর জন্ডিস হয়েছে এবং জ্বর নেই। শরীর আলহামদুলিল্লাহ ফিট। তাহলে কথা হচ্ছে এই যে ডায়াবেটিসের টেস্ট তারপরে এই যে মাথার এক্স রে এগুলো কিসের জন্য ? আরো সঙ্গে যেগুলো আছে। আমার মনে হচ্ছে এদের মাথায় সমস্যা আছে । এরপরে আমি ওরে নিয়ে একজন ভালো অভিজ্ঞ ডাক্তারের কাছে গেলে তিনি দেখেই বলছে ওর জন্ডিস হয়েছে এবং জন্ডিসের জন্য দুই একটা টেস্ট দিয়েছে এবং কিছু ওষুধ দিয়েছে এবং একটু বিশ্রামে থাকতে বলছে তাহলে ইনশাল্লাহ দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবে।
এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে এই যে এতগুলো করে টেস্ট দেয় মানুষকে শুধু শুধু। এরা কি হাসপাতালে বসে টেস্ট লিখতে? নাকি মানুষের সেবা করতে ? নাকি ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর সেবা করতে ?
আমার মনে হচ্ছে এরা ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর সেবা করে ! এভাবে প্রতিনিয়ত কত রুগী হয়রানি হচ্ছে ঠিক ধারণা করতে পারছেন ?” (পরিমার্জিত)
সাদিয়া সাবরিন মন্তব্য করেন, “ডাক্তার দেখাতে গেলেই একগাদা টেস্ট এই বিড়ম্বনায় প্রত্যেকটা রোগী ও তার পরিবার হয়রানি হচ্ছে। আর একজন রোগী ও তার পরিবারও যেহেতু উদ্বিগ্ন থাকে যার ফলে অপ্রয়োজনীয় বুঝেও এসব টেস্টের প্রতিবাদও ডাক্তারের উপরে গিয়ে করতে পারেনা। এর প্রতিকার আসলেই জানা নাই।”
আফনান খান মন্তব্য করেন, এরা এমনটাই করে, যেকোনো রোগী যেকোনো সমস্যা নিয়ে যাক না কেন সবাইকে টেস্ট দিয়া দেয়। যেন তারা টেস্ট রিপোর্ট ছাড়া চিকিৎসা করতে যানে না।
ডায়গনোস্টিক সেন্টার এর দেয়া ইন্টারেস্ট এর লোভে তারা এমন করে। এদের মত কষাই ডাক্তারের লাইসেন্স বাতিল করা উচিত।
এবিষয়ে ডাক্তার বৈশাখী বড়াল জানান, আমার কাছে রোগী আসলে আমি তার প্রয়োজনে টেস্ট দিয়েছি। রোগীরা যদি ডাক্তারের চেয়ে বেশি বুজে তাহলে ডাক্তারের কাছে আসার দরকার কি?
সিভিল সার্জন ডা. জহিরুল ইসলাম বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’