ঢাকারবিবার , ১২ মে ২০২৪
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ইউসেপ বাংলাদেশ এর ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ইউসেপ বরিশালে সূবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠান

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
মে ১২, ২০২৪ ৮:৩১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিজস্ব প্রতিবেদক :: ইউসেপ বাংলাদেশ এর ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ইউসেপ বরিশালে সূবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠান।

ইউসেপ বরিশাল অঞ্চলের উদ্যোগে ইউসেপ বাংলাদেশ এর ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আজ ১১ মে এক সূবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠান এর আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের উল্লেখযোগ্য কর্মসূচীর মধ্যে ছিল বর্ণাঢ্য র‌্যালি, আলোচনা সভা, শিক্ষার্থীদের প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বরিশাল শিল্পকলা অডিটরিয়ামে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউসেপ বাংলাদেশ এর ভাইস চেয়ারপার্সন জনাব জাহিদা ইস্পাহানি পরিচালক, এম এম ইস্পাহানি লিমিটেড, ইস্পাহানি টি লিমিটেড এবং মাইডাস লি:। বরিশাল সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে সকাল ০৯:০০ ঘটিকায় এক বর্ণাঢ্য র‌্যালীর উদ্বোধন করা হয়। র‌্যালীটি বরিশাল শিল্পকলা একাডেমিতে এসে শেষ হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ড. মুহাম্মদ আবদুল মজিদ, সদস্য, ইউসেপ বাংলাদেশ বোর্ড অব গভর্ণস, সাবেক সচিব, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এবং সাবেক চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।
প্রায় সহস্রাধিক প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী ও কর্মীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠে ইউসেপ বরিশাল ক্যাম্পাস। অথিদের অনেকেই প্রাণের প্রতিষ্ঠানে এসে আবেগে আপ্লুত হয়ে ওঠে এবং দিনব্যাপী অনুষ্ঠান উপভোগ করে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মো: ইসরাইল হোসেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, বরিশাল সিটি কর্পোরেশন, বরিশাল, এছাড়াও জনাব রুম্পা সিকদার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা), বরিশাল, , জনাব জিতেন্দ্র লাল ভৌমিক, সদস্য, ইউসেপ এসোসিয়েশন, সদস্য, সাবেক ভাইস চেয়ারপারসন, ইউসেপ বাংলাদেশ বোর্ড অব গভর্ণস, ব্রিগ্রে. জেনা. আবু নোমান মো: শিব্বির আহমেদ, এডব্লিউসি, পিএসসি (অবসর) ও পরিচালক, পিপল এন্ড এডমিনিস্ট্রেশন, ইউসেপ বাংলাদেশ, প্রফেসর শাহ্ সাজেদা, শিক্ষাবিদ ও সাবেক সভাপতি, সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), টিআইবি, বরিশাল সহ সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইউসেপ খুলনা অঞ্চলের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনাব জাহিদা ইস্পাহানি কারিগরি শিক্ষার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন এবং তরুণ বয়স হতেই শিক্ষার্থীদের কঠোর পরিশ্রমি হওয়ার পরামর্শ প্রদান করেন।

সভাপতির বক্তব্যে ড. মুহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষা নিয়ে নিজেকে দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য পরামর্শ প্রদান করেন। দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে তরুণদের ভূমিকা ও দূর্নীতি মুক্ত সমাজ গড়ার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি ইউসেপ বাংলাদেশ এর প্রতিষ্ঠাতা জনাব লিন্ডসে এ্যালান চেইনির স্মৃতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন। ইউসেপ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত বেকার তরুণ তরুণী কারিগরি দক্ষতা নিয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা পালন করার সুযোগ পাচ্ছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপস্থিত জনাব মো: ইসরাইল হোসেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, বরিশাল সিটি কর্পোরেশন, বরিশাল বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে কারিগরি শিক্ষার প্রসারের উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি ইউসেপ বাংলাদেশের কারিগরি শিক্ষার গুণগত মানের ভূয়সি প্রশংসা করেন।

জনাব রুম্পা সিকদার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা), বরিশাল সরকারের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য কারিগরি দক্ষতা সম্পন্ন মানব সম্পদের বিকল্প নেই। ইউসেপ কারিগরি শিক্ষা নিয়ে যে কাজ করছে তা প্রশংসনীয়। তিনি শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষায় আরো বেশি মনোযোগি হওয়ার জন্য বলেন।

জনাব জিতেন্দ্র লাল ভৌমিক, সদস্য, ইউসেপ এসোসিয়েশন, সদস্য, সাবেক ভাইস চেয়ারপারসন, ইউসেপ বাংলাদেশ বোর্ড অব গভর্ণস বলেন দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির মাধ্যমে বাংলাদেশ আরো বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করার সুযোগ রয়েছে। তিনি শিক্ষার্থীদের মাঝে ইউসেপ বাংলাদেশ এর সফলতার ৫০ বছরেরর গল্প তুলে ধরেন। তিনি জীব-বৈচিত্রের ভারসাম্য রক্ষায় সবাইকে গাছ লাগানোর পরামর্শ প্রদান করেন। তিনি বঙ্গবন্ধূ শেখ মুজিবুর রহমান এর স্মৃতি বিজড়িত কিছু গল্প তুলে ধরেন।

ব্রিগ্রে. জেনা. আবু নোমান মো: শিব্বির আহমেদ, এডব্লিউসি, পিএসসি (অবসর) ও পরিচালক, পিপল এন্ড এডমিনিস্ট্রেশন, ইউসেপ বাংলাদেশ বলেন কারিগরি শিক্ষার প্রসারে সবাইকে সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে তরুণ ও অভিভাবকদের কারিগরি শিক্ষার প্রতি আরো বেশি আগ্রহী হতে হবে।

এছাড়াও বক্তব্য প্রদান করেন প্রফেসর শাহ্ সাজেদা, শিক্ষাবিদ ও সাবেক সভাপতি, সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), টিআইবি, অধ্যক্ষ গাজী জাহিদ হোসেন, সভাপতি, সনাক, বরিশাল।

অনুষ্ঠানে শিক্ষার্র্থীরা তাদের প্রশিক্ষণ ও ভবিষ্যত প্রত্যাশা নিয়ে প্রদর্শনীমূলক আলোচনায় অংশগ্রহন করেন।
উল্লেখ্য যে, ইউসেপ বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ডের নাগরিক লিন্ডসে এ্যালান চেইনীর উদ্যোগে একটি অলাভজনক বেসরকারি উন্নয়ন সংসথা হিসেবে ১৯৭২ সালে আত্মপ্রকাশ করে ।কার্যক্রম শুরুর দিন থেকে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত শিশু কিশোরদের কারিগরি ও কর্মমুখী শিক্ষার মাধ্যমে দক্ষ মানব সম্পদ তৈরী ও শোভন কর্মসংস্থান নিশ্চিত করে তাদের দারিদ্র বিমোচনে গুরত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করছে ইউসেপ বাংলাদেশ ।
মাত্র ৬০ জন ছাত্র/ছাত্রী নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যান ও গবেষণা ইন্সটিটিউট ইউসেপ এর কার্যক্রম শুরু হয়। এখন ইউসেপ বাংলাদেশের উদ্যেগে ৩৬টি টেকনিক্যাল স্কুল,১০টি টিভেট ইনস্টিটিউট, ০২ টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও ৩টি প্রফেসনাল ইনস্টিটিউট মাধ্যমে প্রতি বছর ৩৫ হাজার ছাত্রছাত্রী শিক্ষা গ্রহণ করে চলেছে এবং এর মধ্যে ৮০% শোভন কর্মসংস্থানের সুযোগ পাাচ্ছে ।
একটি দেশ গঠনের জন্য দক্ষ জনশক্তি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।ইউসেপ বাংলাদেশ সুদীর্ঘ ৫২ বছর ধরে দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে। সরকার জনশক্তিকে এমনভাবে গড়ে তুলতে চায়, যাতে তারা প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বের যেকোনো জায়গায় প্রতিযোগিতা করতে পারে। আমরা মনে করি ইউসেপ বাংলাদেশ বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষা শিক্ষার্থীদের কর্মের দক্ষতা বৃদ্ধি করে এবং একইসাথে চাকুরি বা কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করে। কারিগরি ও ভোকেশনাল শিক্ষা নিলে তরুণরা প্রশিক্ষিত দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত হওয়ার পাশাপাশি দ্রুত স্বাবলম্বী হবে। এতে আমরা জনমিতিক সুফল (Demographic Dividend) অর্জনে স্বক্ষম হবে।