ঢাকাশনিবার , ৮ জুন ২০২৪
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কোরবানি না দিয়ে টাকা দান করা কি ইসলামি শরিয়তে জায়েজ 

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
জুন ৮, ২০২৪ ২:১৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

ধর্ম ডেস্ক :: কোরবানি না দিয়ে টাকা দান করা কি ইসলামি শরিয়তে জায়েজ

ইসলামি শরিয়তের অন্যতম তাৎপর্যমণ্ডিত ও ফজিলতপূর্ণ একটি ইবাদত হলো কোরবানি। এতে আছে আত্মত্যাগের ঐতিহাসিক মহিমা। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো কোরবানি একটি স্বতন্ত্র ইবাদত।

কোরবানি শুরু হয়েছিল আদম (আ.) এর ২ ছেলে হাবিল ও কাবিল থেকে। পরবর্তীতে কোরবানির জন্য ইব্রারাহিম (আ.) ও তার শিশুপুত্র ইসমাইল (আ.) এর আত্মবিসর্জন কেয়ামত পর্যন্ত প্রতিটি মুমিনের জন্য অনন্য শিক্ষা ও প্রভুপ্রেমের পাথেয়।

নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় হিজরতের পর একবারের জন্যও কোরবানি করা বাদ দেননি। যার ওপর কোরবানি ওয়াজিব, তার জন্য কোরবানি না করে সেই টাকা কোনো দরিদ্র ব্যক্তিকে দান করে দেওয়া ইসলামি শরিয়তে জায়েজ নয়। এভাবে কোরবানি আদায় হবে না।

ইসলামে কোরবানির অর্থ হলো, আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি ও নৈকট্য অর্জনের জন্য শরিয়ত নির্দেশিত উপায়ে কোনো প্রিয় বস্তু মহান আল্লাহর দরবারে পেশ করা।

নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘কোরবানির দিন আল্লাহর কাছে কোরবানির পশুর রক্ত প্রবাহিত করার চেয়ে প্রিয় কোনো আমল নেই। কেয়ামতের দিন জবাইকৃত পশু শিং, পশম, ক্ষুরসহ আল্লাহর কাছে উপস্থিত হবে। কোরবানির পশুর রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই তা আল্লাহর কাছে বিশেষ মর্যাদায় পৌঁছে যায়। অতএব, তোমরা আনন্দিত মনে কোরবানি কর’। (তিরমিজি)

আরেক হাদিসে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কোরবানি করে না, সে যেন আমাদের ঈদগাহের ধারেকাছেও না আসে’। (ইবনে মাজাহ)

নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন, আল্লাহর কাছে কোরবানির দিনগুলোতে (জিলহজের ১০, ১১ ও ১২ তারিখ) কোরবানির চেয়ে বেশি পছন্দের কোনো আমল নেই’। (তিরমিজি: ১৪৯৩)

এ কারণে কোরবানির দিনগুলোতে নির্ধারিত পরিমাণ সম্পদের মালিকের ওপর পশু জবাই করা ওয়াজিব। তবে নির্ধারিত দিনে সামর্থ্যবান হওয়ার পরও কোরবানি না দিয়ে বিকল্প হিসেবে এর মূল্য দান করলে কোরবানি আদায় হবে না।

নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে একবার দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছিল। ঐ বছরও তিনি কোরবানি না করে দান-সদকা করতে বলেননি; বরং ওই বছর কোরবানি করে গোশত ৩ দিনের বেশি সংরক্ষণ করতে নিষেধ করেছিলেন। যদিও পরের বছর দুর্ভিক্ষ না থাকায় সংরক্ষণের অনুমতি দিয়েছেন। (বুখারি: ৫৫৬৯; মুসলিম: ১৯৭৪)

আমাদের জেনে রাখা উচিত, কোরবানি পৃথক ইবাদত আর দান-সদকা পৃথক ইবাদত। একটি অন্যটির পরিপূরক নয়। প্রতিটি ইবাদতের ভিন্ন ভিন্ন মাহাত্ম্য রয়েছে। যারা অসহায় মানুষদের দান করতে চায়, তারা তাদের নিজেদের কোরবানির পশু জবাই করে গোশতগুলো অসহায় মানুষের মাঝে বণ্টন করে দিতে পারেন।