ঢাকাবৃহস্পতিবার , ৪ জুলাই ২০২৪

প্রস্রাবের নাপাক থেকে সতর্ক না থাকার ভয়াবহ শাস্তি

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
জুলাই ৪, ২০২৪ ৬:১৮ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

ধর্ম ডেস্ক :: প্রস্রাবের নাপাক থেকে সতর্ক না থাকার ভয়াবহ শাস্তি

একজন মুসলমানের সর্বদা পবিত্র থাকতে হয়। কোনো ধরনের নাপাক বস্তু যেন শরীরে বা পরিধেয় জিনিসে না লেগে থাকে সে জন্য সজাগ দৃষ্টি রাখতে হয়। পবিত্রতা দুই প্রকার। এক. প্রকৃত পবিত্রতা। যেমন নাপাক বস্তু থেকে দূরে থাকা। কোথাও লেগে গেলে ধুয়ে ফেলা। দুই. আইনি পবিত্রতা। যেমন ওজু ও গোসল করা।আর শরীরে বা পরিধেয় জিনিসে নাপাক বস্তু লাগলে সাথে সাথে পবিত্র হওয়া উত্তম। নামাজের সময় হলে পবিত্র হওয়া আবশ্যক।

সাধারণত একজন মানুষ প্রস্রাবের কারণে বেশি অপবিত্র হয়। নিজের প্রস্রাব, ছোট সন্তানের প্রস্রাব, গবাদি পশুর প্রস্রাব। যা শরীরে লাগার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। এ ব্যাপারে সতর্ক না থাকলে শরীরে থেকে যায়।

মানুষের দুই কাঁধে দুই ফেরেশতা থাকেন। এছাড়া বিভিন্ন কারণে মানুষের পাশে ফেরেশতা আসেন। ফেরেশতারা নাপাক বস্তু পছন্দ করেন না। তাই সর্বদা পবিত্র অবস্থায় থাকা উত্তম।কেউ যদি প্রস্রাব থেকে দূরে থাকার জন্য সতর্ক না থাকে আর তার শরীরের প্রস্রাব থেকে যায় তাহলে তার কবরের আজাব হবে বলে হাদিসে জানা যায়। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিস আছে এ ব্যাপারে। তিনি বলেন,

রসুলুল্লাহ (সা.) একবার মদিনা বা মক্কার কোনো এক বাগানের কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি এমন দুই ব্যক্তির আওয়াজ পেলেন যাদের কবরে আজাব হচ্ছিল। তখন রসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, এদের দুজনকে আজাব দেয়া হচ্ছে, অথচ কোনো বড় গুনাহের জন্য এদের আজাব দেয়া হচ্ছে না। এরপর নবীজি বললেন, হ্যাঁ, এদের একজন তার প্রস্রাবের নাপাকি থেকে সতর্কতা অবলম্বন করতো না। আর একজন চোগলখুরি (কুৎসা বা ফ্যাসিবাদ সৃষ্টিকারী) করতো।

পরে রসুলুল্লাহ (সা.) একটি খেজুরের ডাল আনালেন এবং তা ভেঙে দুই খণ্ড করে প্রত্যেকের কবরের ওপর একখণ্ড রাখলেন। সাহাবিরা জানতে চাইলেন, ইয়া রসুলাল্লাহ, এরূপ কেন করলেন? জবাবে রসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, হয়ত তাদের আজাব কিছুটা লাঘব করা হবে, যতদিন পর্যন্ত এ দুটি (খেজুরের ডাল) না শুকায়। (বুখারি ২১৬, মুসলিম ৫৭০)

আবু হুরায়রাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেন, ‘তোমরা প্রস্রাব থেকে সতর্ক থাকো। কারণ, কবরের অধিকাংশ শাস্তি হয় তা থেকে।’ (মুসনাদে আহমাদ ২৫২, দারাকুতনি ৪৪৮)

প্রস্রাব থেকে ভালোভাবে পবিত্রতা অর্জন না করার মধ্যে এটিও যে, আপনি প্রস্রাব শেষেই দ্রুত উঠে গেলেন অথচ প্রস্রাবের কয়েক ফোটা এখনো থেকে গেছে যা পরবর্তীতে কাপড়কে নাপাক করে দিচ্ছে অথবা প্রস্রাবের পর পানি বা ঢিলা কিছুই ব্যবহার না করা

আর প্রস্রাব করার পর প্রত্যেকবার পবিত্রতা অর্জন করা জরুরি। রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আমি তোমাদের পিতার মতো। আমি তোমাদের সব কিছু শিক্ষা দিই। তোমরা বাথরুমে গেলে কিবলামুখী হয়ে বসবে না আবার কেবলাকে পেছনে রেখেও বসবে না। ডান হাতে ইস্তিনজা তথা পবিত্রতা অর্জন করবে না।’ রসুলুল্লাহ (সা.) তিনটি ঢিলা ব্যবহার করতে বলতেন এবং গোবর ও হাড্ডি দ্বারা ঢিলা ব্যবহার থেকে বারণ করতেন। (আবু দাউদ ৭)

আরেক হাদিসে আবু বকর ইবনে আবি শায়বা (রহ.) বর্ণনা করেন, মুআজা (রহ.) বলেন, আয়েশা (রা.) মহিলাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, তোমরা আপন স্বামীদের নির্দেশ দাও, তারা যেন (ঢিলা ব্যবহারের পর) পানি দ্বারা প্রস্রাব-পায়খানার বাকি চিহ্ন ধুয়ে ফেলে। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমনই করতেন। আমি তাদের (তোমাদের স্বামীদের) বলতে লজ্জাবোধ করছি। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা ১৬২৯, তিরমিজি ১৯, নাসায়ি ৪৬)

প্রস্রাব থেকে ভালোভাবে পবিত্রতা অর্জন না করাও কবিরা গুনাহের পর্যায়ভুক্ত। যা খ্রিষ্টানদের একান্ত বৈশিষ্ট্য এবং যে কারণে কবরে শাস্তি পেতে হয়।