ঢাকাশুক্রবার , ১২ জুলাই ২০২৪
আজকের সর্বশেষ সবখবর

হবিগঞ্জের রাস্তা থেকে এক যুবককে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
জুলাই ১২, ২০২৪ ৫:১৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিজস্ব প্রতিবেদক ::  সিলেটের হবিগঞ্জের আরমান আহমেদ (২৫) নামক এক যুবককে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে দূর্বৃত্তদের আক্রমণে এমন নৃশংস অবস্থা হয়েছে তাঁর।

জানা যায়, আহত আরমান আহমেদ বৃহস্পতিবার রাতে সিলেট নগরীর জালালাবাদ মেইন পয়েন্ট এলাকায় হাঁটছিলেন। এসময় পথচারী আরমানের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে একদল সন্ত্রাসী বাহিনী। তাঁরা তাঁকে জোড় করে ধরে নিয়ে যায় জালালাবাদ এলাকার ভিতর সাইডের চিপাগলিতে। হাত ও পা দ্বারা আঘাত ছাড়াও বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র এবং লাঠিসোটা দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে তাঁর সাড়া শরীরে জখম ও রক্তাক্ত করা হয়। একপর্যায়ে আরমানের হুঁশ চলে যায়, কিন্তু তারপরও তাঁকে মারতে থাকে দুর্বৃত্তরা। তখনই হঠাৎ সেখানে রাস্তার পাশ দিয়ে যাওয়া এক ব্যবসায়ী দোকান থেকে বাড়ি ফেরার পথে বিষয়টি লক্ষ্য করেন ও আরও কিছু স্থানীয় মানুষ তাৎক্ষণিক জেগে উঠে, সকলে টর্চ লাইটের আলো মারতেই দূর্বৃত্তরা মাটিতে লুটিয়ে থাকা অচেতন আরমানকে পিঠানো বন্ধ করে দেয় এবং মোটর সাইকেল স্টার্ড দিয়ে উক্ত স্থান ত্যাগ করে। কিন্তু চলেযাওয়ার সময়ও তাঁদের মধ্যে একজন আরমানের শরীরে আরকয়েকয়েকটি লাথি দিয়ে বাইকে উঠে ও ঐখান থেকে চলেযায়। পরে স্থানীয় লোকেরা মিলে থানায় ফোন করেন ও গুরুতর আহত অবস্থায় ঐ যুবক আরমানকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। কর্তব্যরত ডাক্তাররা তাঁর অবস্থা শোচনীয় বলে জানিয়ে তাঁকে আইসিউতে প্রেরণ করেন।

আরমান আহমেদ হবিগঞ্জ সদর উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর বাবা মোঃ আব্দুল কুদ্দুস হবিগঞ্জ পৌরসভার একজন ছোটোখাটো ব্যবসায়ী।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসীরা বলেন, ঐ ছেলেটাকে মারতে দেখে তাঁরা ছুটে যান কিন্তু ছেলেটাকে নৃশংসভাবে মারার ধরণ ও হামলাকারীদের ভয়ংকর আচরণ দেখে কিছু বলার সাহস পাননি কেউই। ছেলেটা অজ্ঞান হয়ে পড়লেও তাঁরা তাঁকে মারতে থাকে। একপর্যায়ে লাইটের আলো ও জনসমাগম টের পেয়ে হামলাকারীরা ঐজায়গা ছেড়ে চলে যায়।

মুহুর্তের মধ্যেই ঘটনাটা নিয়ে এলাকায় প্রচন্ড আলোড়ন ও তোলপাড় দেখা দেয়। সবারই অনেক রহস্যজনক খটকা লাগছে এবিষয়টি। হামলাকারী দুর্বৃত্তদের মধ্যে কারও চেহারা কেউই বলতে না পারলেও। নাম বলতে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন মহিলা ও তাঁর স্বামী ক্রাইম নিউজ ২৪.নেট -কে জানান, যখন সন্ত্রাসীরা এলাকা ছেড়ে চলেযাচ্ছিলো তখন তাঁদেরকে পেছন থেকে স্পষ্ট দেখাগেলেও চেনার অবকাশ ছিলো না। তবে যখন তাঁরা বাইকে উঠছিলো তখন তাঁদের মধ্যে হেড যাকে বুঝাযাচ্ছিলো সেই একজনকে টেলিভিশন বা মোবাইলে দেখেছেন বলে মনেহয় ঐ মহিলার। তাঁরা আরও বলেন, এদের মধ্যে প্রায় সকলকেই রাজনীতি করা ছাত্রদের মতো লেগেছে। মহিলার স্বামীর ভাষ্যমতে, তাঁরা ৪টি মোটরসাইকেলে মোট ১১জন ছিলো আর ঐ ১১জনই লোকজনের সাড়া পেয়ে বাইকে উঠে পালিয়ে যায়। তাঁদের মধ্যে একজন যে হেড ছিলো সেই সম্ভবত যাবারকালেও আহত আরমানকে পা দিয়ে লাথি মারে।

সর্বপ্রথম এই ঘটনা চোখে পড়া মোদি দোকানদার ব্যক্তি নিজের পরিচয় গোপন রাখার শর্তে বলেন, যারা ছিলো তাঁরা তখন খুবই মারাত্মক উগ্র মেজাজে ছিলো বলে মনেহচ্ছিলো দেখে। তাঁরা ছেলেটাকে এমন নৃশংসভাবে মারছিলো যেন তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলতে চায়। এরা খুবই ভয়ংকর ছিলো। সবগুলোর চেহারা স্পষ্ট দেখা যায়নাই শুধু তিন-চারজন ব্যাতিত। যাদের চেহারা তিনি দেখেছেন তাঁদেরকে নাকি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান ও সিনিয়র সদস্য এ.জি জুবরান চৌধুরীর গ্রুপিংয়ের বয়’স (Boy’s) সিলেটের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মী ও ছেলেপুলেদের মতো লাগছিলো।

এবিষয়ে সিলেট কোতওয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন, অফিসার ইনচার্জ সাংবাদিকদের বলেন, আহত আরমান আহমেদ হবিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।সে সিলেট শহরস্থ জালালাবাদ এলাকার সড়ক পথে হেঁটেহেঁটে যাচ্ছিলো ঠিক তখনই তাঁর উপরে হামলা হয় এবং তাঁকে ভিতরের নির্জন এলাকায় নিয়ে এভাবে বাজেভাবে মারধর করা হয়। হাত-পা ও বিভিন্ন অস্ত্র এবং লাঠিসোটা দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করা হয়। তবে ভাগ্যভালো এরচেয়ে অকাম্য আরও খারাপ কোনোকিছু ঘটার আগেই ঘটনাস্থলে লোকজনের উপস্থিতি হয়েউঠে এবং তাঁরা পুলিশকে জানালে আমাদের সাব ইন্সপেক্টর আলী হায়দারের নেতৃত্ব একটি পুলিশ ফোর্স ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ছেলেটাকে অত্যন্ত মুমূর্ষু অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি। বর্তমানে সে ক্রিটিকাল অবস্থায় রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তাঁকে আইসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন মর্মে আমাদেরকে জানিয়েছেন। আহত আরমান ঐ এলাকায় পথচারী অবস্থায় এরকম নৃশংস হামলার স্বীকার হয়েছে এটার মূল ঘটনা কি এবং এর পেছনে কে বা কারা আছে, হামলাকারীরা কারা ছিলো এটা কোথাকার প্রভৃতি তদন্ত করা হচ্ছে। এতো গভীর রাতে এই ছেলেটিই বা ঐরাস্তা দিয়ে কোথায় যাচ্ছিলো, এটা কোনো চিম্তাই কারীদের অ্যাটাক নাকি তাঁর কোনো শত্রু অথবা অন্য কোনো রহস্য তা সবকিছুই খুবদ্রুত উদঘাটন করা হবে।