নিউজ ডেস্ক :: আন্দোলনকারীদের মৃত্যুর জন্য দায়ী ফেসবুক: পলক
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার ফলে সারা দেশে ব্যাপক সংঘর্ষ ও প্রাণহানির মতো ঘটনা ঘটেছে। আন্দোলনকারীদের প্রাণহানির ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে দায়ী করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যে সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে তার পেছনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়ানোকে দায়ী করে প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক, এক্সের মতো প্ল্যাটফর্মগুলোর অফিস ও ডেটা সেন্টার যদি ঢাকায় থাকত, তাহলে যে কোনো ধরনের কনটেন্ট ও গুজবকে প্রতিহত করা বা ফ্ল্যাগ দিয়ে দেওয়া অথবা ব্লক করে দেওয়া সহজ হতো।
আজ বুধবার (১৭ জুলাই) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘সাইবার-সিকিউরিটি সিম্পোজিয়াম : বাংলাদেশ পাথ ফরওয়ার্ড’ বিষয়ে এক সেমিনারে আয়োজিত অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে সারা দেশে সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনায় সরকার উদ্বিগ্ন জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী পলক সাংবাদিকদের জানান, কোটা আন্দোলনে মিথ্যা গুজব ছড়ানো বন্ধ করতে সরকার পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ করলেও ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো কথা শুনছে না। তারা শুধু বাংলাদেশ থেকে তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থটাই দেখছে। এই দেশের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা, সামাজিক শৃঙ্খলা ও ধর্মীয় অনুভূতির ব্যাপারে তারা কোনো ধরনের শ্রদ্ধাবোধ দেখাচ্ছে না।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে তৃতীয় পক্ষের উসকানিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সহিংস পথ বেছে না নিয়ে তাদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো কিছু দেখে যাচাইবাছাই না করেই শিক্ষার্থীরা যেন কোনো সিদ্ধান্ত না নেন। আবেগের প্রকাশ যেন বিবেকের সঙ্গে করা হয়।’
অপরদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসমূহকে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ বলেন, আমরা ফেসবুক, এক্সসহ সবাইকে শেষ বারের মতো সর্তক করছি, তারা যদি বাংলাদেশের আইন, ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সামাজিক শৃঙ্খলার দিকে নজর না দেয়, তাহলে সরকার কঠোর পদক্ষেপ নেবে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা ও সংঘর্ষ প্রসঙ্গে জুনাইদ আহ্মেদ বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি শান্তিপূর্ণ ও অরাজনৈতিক আন্দোলন ছিল। সেখান থেকে স্বার্থান্বেষী মহল দুজনের মৃত্যুর খবরের গুজব ছড়ায়। অথচ সে সময় কোনো মৃত্যু ঘটেনি। কিন্তু এই গুজবের ওপর ভিত্তি করে আন্তর্জাতিক কিছু গণমাধ্যম ও কিছু রাষ্ট্রের মুখপাত্র স্বীকৃতি দিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে এই গুজবের ও উসকানির কারণে সারা দেশে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হলো। বিভিন্ন জায়গায় সংঘর্ষে ছয় থেকে সাতজনের জীবন চলে গেল। এর জন্য কি ওই প্ল্যাটফর্ম দায়ী নয়?
জুনাইদ আহমেদ বলেন, যেভাবেই হোক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রক্তাক্ত হয়েছে, সহিংসতা হয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে নাগরিক সমাজ বক্তব্য ও মন্তব্য দিচ্ছেন। তাদের প্রকাশিত মতামতের প্রতি সরকার শ্রদ্ধাশীল। তবে এ অবস্থায় নাগরিকদের নিরাপত্তার কথা যেন চিন্তা করা হয়।