নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশালে চড়া নিত্যপণ্যের বাজার, দিশেহারা নিম্ন-মধ্যবিত্তরা
সরকার পদত্যাগের একদফা দাবি, সিনিয়র নেতাদের গ্রেপ্তার ও সমাবেশে হামলার প্রতিবাদে ফের বিরোধী জোটের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শুরু হয়েছে দেশব্যাপী। গত রোববার (৫ নভেম্বর) ভোর ৬টা থেকে মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) ভোর ৬টা পর্যন্ত সারাদেশে অবরোধ কর্মসূচি পালিত হবে। আর এই অবরোধ অজুহাতেই বরিশালের সকল নিত্য পণ্যের দাম চড়া। ইতিমধ্যে কাঁচাবাজারে শীতকালীন সবজি আসতে শুরু করলেও দাম যেন আকাশচুম্বী।
শিম, মুলা, ফুলকপি-বাঁধাকপিসহ শীতকালীন নানা সবজি উঠেছে কাঁচাবাজারে। রয়েছে গ্রীষ্মের সবজিও তবে দামে চড়া। গ্রীষ্মকালীন প্রায় সব সবজির দামই বেড়েছে কেজিতে ১৫ টাকা পর্যন্ত। আর সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা।
সরজমিনে বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক কেজি শিম কিনতে গুনতে হচ্ছে ১৮০ টাকা। মুলা ৪৫ আর টমেটোর কেজি ১২০ টাকা। ছোট ফুলকপি ৬০ টাকা ও বাঁধাকপির দাম ৫০ টাকার ওপরে। এছাড়া করলা ৬০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৬০ টাকা, পেঁপে ৩০টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, ঢেঁরস ১০০ টাকা, পটল ৫০ টাকা এবং লাউ প্রতি পিচ ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাড়তি এই দামের জন্য বিক্রেতারা অবরোধের কথা বললেও তা মানতে নারাজ ক্রেতারা।
বরিশাল পোর্টরোড বাজারের বিক্রেতারা বলছেন- অবরোধ জন্য কাঁচামালামাল কম আসছে যে কারনে দাম একটু বেশি।
পোর্ট রোডে কাঁচামাল পরিবহনের এক ট্রাক ড্রাইভার জানান, অবরোধ কারনে বরিশাল আসতে আমাদের সমস্যা হচ্ছে। অনেক ড্রাইভাররা তো আসতেই চায় না।
এদিকে অবরোধের অজুহাতে বরিশালে সব ধরনের চালের দাম প্রতি কেজিতে ১ থেকে ২ টাকা বেড়েছে। একই সাথে আলু কেজি প্রতি ৫০ টাকার,পিয়াজ ৯০ টাকা, রসুন ২০০ টাকা, মশুর ডাল ১০৫ টাকা এবং চিনি কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ১৩৫ টাকায় বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া লাল ডিম হালি প্রতি ৪৮ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে গত সপ্তাহের ১৭০ টাকার ব্রয়লার মুরগি বরিশাল বাজার রোডে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজি। লেয়ার মুরগি ৩৩০ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।তাছাড়া খাসি কেজি প্রতি ১১০০ টাকা এবং গরু ৮০০ টাকা।
তেমন কোন সুখবর পাওয়া যায়নি মাছের বাজারে। নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেও ইলিশের দাম এখন আকাশ ছোঁয়া। এছাড়া অন্যান্য মাছের দাম রয়েছে আগের মতোই।
ক্রেতারা জানান, সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়তি। মধ্যবিত্তরা ও নিম্নবিত্তদের অবস্থা খুবই খারাপ। সংসারের খরচ কমাতে কমাতে আর পারছি না। এরমধ্যে অবরোধের কারনে সকল নিত্যপন্যের দাম বাড়তি। বাজারের যে অবস্থা এখন হয়তো একবেলা না খেয়ে থাকবে হবে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বরিশালের বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক অপূর্ব অধিকারী বলেন, ‘আমাদের বাজার তদারকি অভিযান অব্যহত রয়েছে। অযথা কেউ মূল্যবৃদ্ধি করবে তা হবে না। ভোক্তা অধিকার ক্ষুন্ন হয় এমন কোন ঘটনা ঘটলে প্রমানসহ লিখিত অভিযোগে অবগত করুন বা ১৬১২১ নম্বরে যোগাযোগ করুন। অভিযোগ প্রমানিত হলে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
এদিকে নিত্যপণ্যের আকস্মিক মূল্য বৃদ্ধিতে অনেক ক্রেতাই দিশেহারা। এ পরিস্থিতিতে বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর প্রদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে সকল ক্রেতারা।