নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশাল নগরী থেকে কোনভাবেই কাটছে না চাদর পার্টি আতংক। রীতিমত এ চক্রটি ঘাটি গেড়েছে নগরীতে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ এই চক্র ধরতে পুলিশ সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে না। এমনকি এ ঘটনায় মামলা দায়ের ও পরবর্তী তদন্ত কাজ নিয়েও প্রশ্নবিদ্ধ পুলিশের কর্মকান্ড।
সর্বশেষ গত ৩ নভেম্বর বাদ ফজর নগরীর প্রান কেন্দ্র গীর্জা মহল্লা এলাকায় অবস্থিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিদেশী ঘড়ির শো-রুম ‘টাইম জোন’ এর দোকানের তালা কেটে ডাতাকির চেষ্টা করে চাদর পার্টির সদস্যরা। নামাজ শেষে মুসুল্লিরা দেখে ২ সদস্যকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। প্রতিষ্ঠানটির মালিক হালিম ভূঁইয়া বলেন, চক্রটিতে ৭/৮ জন ছিলো। দুজন দোকানের সামনে চাদর মেলে ধরে দাঁড়িয়ে ছিলো আর একজন চাদরের আড়ালে থেকে তালা কাটতে ছিলো। ফজরের নামাজ শেষে লোকজন তাদেরকে ধরে পুলিশে দেয়। আমার দুজন স্টাফকে থানায় পাঠিয়েছিলাম বাদী হয়ে মামলা করার জন্য। কিন্তু পুলিশ আমার স্টাফদের বাদী হতে দেয়নি। আইনি জটিলতা রয়েছে জানিয়ে পুলিশই বাদী হয়ে মামলা করেছে। আমি মনে করি আমার প্রতিষ্ঠানে ডাকাতি চেষ্টা হয়েছে তাই আামি বা আমার কর্মচারী মামলার বাদী হওয়ার অধিকার রাখে। কিন্তু পুলিশ সেটা হতে দিলো না। এখানে পুলিশের কোন বিষয় রয়েছে। কারন তারাই বাদী আবার তারাই তদন্ত কর্মকর্তা। সুতরাং মামলার ভবিষ্যত নিয়ে এখানে প্রশ্ন থেকে যায়।
কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, ডাকাতি চেষ্টার ঘটনায় পুলিশ বাদী হবে এটাই আইন। এ জন্য অভিযোগকারীদের কাউকে বাদী করা হয়নি। অন্য কোন উদ্দেশ্য নেই।
পুলিশ কমিশনার মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, ওসি যে আইনি ব্যাখ্যা দিয়েছে সেটা পুরোপুরি সঠিক না। এমন ঘটনায় পুলিশই বেশীর ভাগ সময় বাদী হয়। যেহেতু ডাকাতি বা চুরি হয়নি চেষ্টা করে হাতে-নাতে ধৃত হয়েছে তাই প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ অযথা ঝামেলার কারনে বেশীভাগ সময় বাদী হতে চায় না। এ কারনে পুলিশকেই বাদী হতে হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ যদি বাদী হতে চায় তাহলে তাকে পুলিশ বাধা দিতে পারে না। ওসি ঠিক করেননি। চাদর পার্টির সদস্যদের ধরতে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশ্বাস দেন পুলিশ কমিশনার। বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি এ্যাড. আবুল কালাম আজাদ বলেন, সম্ভাব্য ক্ষতির সম্মুখীন ব্যক্তি বাদী হতে পারবে না এমন কোন আইন নেই। তবে এসব ক্ষেত্রে পুলিশই সব সময় বাদী হয়। এটা এক ধরনের নিয়মে পরিনত হয়েছে।
কয়েকমাস আগে নগরীর বগুরা রোডে অবস্থিত মোবাইলের দোকান ফোন ফর ইউ তে একই সময়ে (ফজরের সময়) একই স্টাইলে ডাকাতির চেষ্টা করে চাদর পার্টির সদস্যরা। তখনও জনতা দুইজনকে ধরে পুলিশে দেয় এবং তখনও বাদী হয়েছিলো পুলিশ। ওই ঘটনায় আর কোন সদস্যকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তবে সর্বশেষ ঘটনায় যারা আটক হয়েছে তারা আগের মামলারও আসামী বলে জানিয়েছে পুলিশ। মামলার বাদী নানী বুড়ি ফাড়ির ইনচার্জ সাইদুর রহমান বলেন, আটকৃতরা চাঁদপুরের বাসিন্দা। চক্রের সদস্যদের ধরতে চেষ্টা চলছে।