ঢাকাবুধবার , ১৩ নভেম্বর ২০২৪

বরিশাল নগরীতে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তথ্য নেই বিসিসির কাছে : ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
নভেম্বর ১৩, ২০২৪ ১০:৪৫ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিজস্ব প্রতিবেদক :: সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের পরিত্যক্ত ভবন শহীদ আলমগীর ছাত্রাবাসের ভিতর রাতের অন্ধকারে রীতিমতো বখাটেদের আড্ডাসহ অবৈধ কার্যকলাপের অভিযোগ স্থানীয়দের। দিনের আলোতে কিশোর-শিশুদের ছুটোছুটি প্রচন্ড ঝুকিপূর্ণ। যেকোনো সময় এই ভবন ধ্বসে পড়ে প্রাণহানির আশংকা রয়েছে। বধ্যভূমি সংলগ্ন ওয়াপদা কলোনির সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে আজো আতংকের মধ্যে পড়াশুনা চলছে। পলেস্তারা খসে পড়ার পরও ঝুকিপূর্ণ তালিকায় নেই এই ভবন। একইচিত্র কেবি হেমায়েতউদ্দিন সড়কের বেল ইসলামিয়া ছাত্রাবাস ভবনের। এখানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এখনো শিক্ষার্থী ও আশেপাশের দোকানের কর্মচারীদের বসবাস।

সরেজমিনে এই চিত্র দেখা গেছে ১১ নভেম্বর সোমবার নগরীঘুরে। বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকায় এরকম কতগুলো ভবন আছে জানতে নগরভবনে গিয়ে কোনো তথ্যই পাওয়া গেল না। সাধারণ শাখা থেকে পাঠানো হলো প্রকৌশল বিভাগে। প্রকৌশল বিভাগ আবার পাঠিয়ে দিলো সম্পত্তি শাখায়। সেখানে দায়িত্বরত শাকিল জানান, আগে এটি আমার কাছে থাকলেও বর্তমানে এটি প্রকৌশল বিভাগে রয়েছে। প্রকৌশল বিভাগের স্থপতি আবুল বাসার এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। প্লান শাখা হয়তো বলতে পারবে। এবার প্লান শাখার সাবেক কর্মকর্তা সানজিদ হোসেনকে ফোন করলে তিনি বলেন, আমিতো দায়িত্বে নেই এখন আর। তবে একটা তালিকা হয়েছিল এবং ৩০/৩৫টির মতো ঝুঁকিপূর্ণ ভবন রয়েছে। এটি ইঞ্জিনিয়ার বাসার সাহেবই ভালো বলতে পারবেন।

সবমিলিয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি বরিশাল সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের কাছে। তবে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ঘেঁটে ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৩ সালে বরিশাল সিটি করপোরেশন ৩৪টি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে। পরে ২০২৩ সালের ২৮ এপ্রিল নতুন আরও তিনটি ভবনকে চিহ্নিত করে । এ নিয়ে সর্বশেষ ৩৭টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা তৈরি করে সিটি করপোরেশন। তবে তারা শুধু ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করেই দায়িত্ব শেষ করছে। ঝুুঁকিপূর্ণ ভবন ভাঙ্গার হুমকি দিয়ে ব্যক্তি মালিকানা ভবন থেকে উপার্জনেরও অভিযোগ রয়েছে অনেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

বরিশাল সিটি করপোরেশন ২০১৩ সালে প্রথম ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা প্রস্তুত করে। এর মধ্যে রয়েছে, নগরীর কাউনিয়ায় জানুকিসিংহ রোডসংলগ্ন মতি লস্করের ভবন; পূর্ব বগুড়া রোডের কাজি অফিসের পেছনে রবীন্দ্রনাথ সেনের ভবন, আগরপুর রোডের মহিলা কলেজের দক্ষিণ পাশে দেব ভবন, ফজলুল হক এ্যাভিনিউর আবদুর রউফ হায়দারের ‘হোটেল বাহাদুর’ সার্কুলার রোডের সৈয়দ মনছুর আহমেদের ভবন, ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়কের (সদর রোড) ফাতেমা খাতুনের ‘শাকুর ম্যানশন, শ্বরবসু রোডের রাশদা আক্তার চম্পার ‘সৈয়দ মঞ্জিল, হাসপাতাল রোডের অমৃত লাল দে কলেজের দক্ষিণ পাশের মান্নান মৃধার ভবন, কালুশাহ সড়কের জালাল আহমেদের ভবন, মেজর এম এ জলিল সড়কের (নবগ্রাম রোড) হাতেম আলী কলেজ হোস্টেলের শহীদ আলমগীর ছাত্রাবাসের পুরাতন ভবন, তাজউদ্দিন সড়কের ‘ক্ষনিকা’ মেডিকেল কলেজ লেনের মো. ফরিদ উদ্দিনের ভবন, সরকারি বিএম কলেজের সুরেন্দ্র ভবন ছাত্রাবাস, ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়কের সালাম চেয়ারম্যানের পুরাতন ভবন, বেল ইসলামিয়া হোস্টেল।

নবগ্রাম রোডের ব্যবসায়ীদের দাবি, শহীদ আলমগীর ছাত্রাবাসটিতে একজন বাবুর্চি বসবাস করতো। প্রশাসন তাকে সরিয়ে নিয়েছে। কিন্তু এখানে এখন মাঝরাতে অবৈধ কার্যকলাপ হয়। বখাটেদের আড্ডা হয়। আবার দিনের বেলা শিশুরা খেলতে খেলতে ঐ ভবনে চলে যায় যা মারাত্মক ঝুকিপূর্ণ।

বিএম কলেজের সুরেন্দ্র ভবন ছাত্রাবাস যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন পর্যন্ত দাঁড়িয়ে আছে পরিত্যক্ত অবস্থায়।