
নিজস্ব প্রতিবেদক :: এককেজি আলুর দাম ৭০ টাকা। লাউ ৭০ থেকে ১০০, বেগুন ৮০ পটল ৬৫/৭০ টাকা। গরিবের অতিথি আপ্যায়নের একমাত্র উপাদান ডিম এখন ৬৫ টাকা হালি। শাকপাতা যে খাব তারও উপায় নাই। কচু শাকও এখন ৩০ টাকার উপরে। মুলাশাক তাও ৩০-৪০টাকা। কি খাব, কিভাবে বাঁচবো বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন অসহায় গৃহিণী সুলতানা রহমান। খালি ব্যাগ হাতে বাজারে ঘুরছেন তিনি। জানালেন, তার স্বামীর মাসিক উপার্জন মাত্র ৬ হাজার টাকা। নগরীর একটি বইয়ের দোকানে কাজ করেন তিনি। ঘরভাড়া দিয়ে কিছুই থাকেনা আর। আমতলা মোড়ের ভাড়া বাড়িতে বসবাস। বিদ্যুৎ বিল, রান্নার গ্যাস অতবা লাকড়ি আরো কত কি প্রয়োজন? বহুকষ্টে ২০০ টাকা ধার করে বাজারে এসেছেন কিছু তরিতরকারি কিনতে। কিন্তু বাজারের দর প্রতিদিন বাড়ছে। বরিশালের পোর্ট রোড বাজারে এখন মাছ-মাংসের দোকানে খুব একটা ভিড় নেই। যত ভিড় সবটাই সড়কের পাশে বসা সবজির দোকানগুলোতে। আলু-পিঁয়াজ ডাল আর ডিম খুবই দরকারী। গরীবের জন্য একটু আলু ভর্তা আর ডাল হলেই যথেষ্ট। সেই আলু কেনার সামর্থ্য আমার নাই বলে পাশে এসে দাঁড়িয়ে হাহাকার করেন ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ নাজেম হাওলাদার। চরবাড়িয়া বেড়িবাঁধ এলাকার বাসিন্দা তিনি। বললেন, পলাশপুর সড়কে কয়দিন আগে ন্যায্যমূল্যের সবজি বিক্রি হতে দেখে আজ কিনতে এসে শুনি কেউ আর আসেনা এখন।
বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেল, কোনো কিছুই বিন্দুমাত্র পরিবর্তন হয়নি। শুধু হাতবদল হয়েছে নেতৃত্বের। নগরীর আমতলা মোড়ের মডেল মসজিদের সামনে বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে ন্যায্যমূল্যের সবজির দোকান বসেছে। কিন্তু ওদের কাছে যে পণ্য বা সবজি রয়েছে সবগুলোই মানহীন ও নিম্ন মানের। আমতলা মোড়ের ভ্যানের সাথে আজ আর ওদের পণ্যের মধ্যে দরেরও খুব একটা পার্থক্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাদের বাজারের দায়িত্বে থাকা এনামুল হক সজিব বলেন, নাহ ভাইয়া আমরা কারোই সহযোগিতা পাইনি। পাইকারি বাজারে আমাদের অনভিজ্ঞতার কারণে বারবার ঠকে যাচ্ছি। দাম কিছু কমিয়ে রেখে আমাদের নিম্ন মানের সবজি বস্তায় ভরে দিচ্ছে বারবার। আমরাও আর এটা চালাতে পারছিনা। কেউ আমাদের পাশে দাঁড়ায় না, সবাই শুধু সমালোচনাই করে।