ঢাকাবৃহস্পতিবার , ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বরিশালে  প্ল্যান অনুমোদনে বিসিসিকে ৭ দিনের আল্টিমেটাম

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
ডিসেম্বর ১৯, ২০২৪ ১০:১৯ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশালে  প্ল্যান অনুমোদনে বিসিসিকে ৭ দিনের আল্টিমেটাম।

দীর্ঘদিন ধরে প্ল্যান অনুমোদন না করায় বরিশাল সিটি কর্পোরেশনকে ৭ দিনের আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে প্ল্যান অনুমোদন না দিলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার ঘোষনা দিয়ে ৫টি দাবি উত্থাপন করা হয়। দাবির মধ্যে রয়েছে : দ্রুত সময়ের মধ্যে ১২শ’ প্ল্যান অনুমোদন দেয়া, ইমারত বিধিমালা ২০২০ পুনর্বহাল করা, প্ল্যান জমাদানে হয়রানি বন্ধে ওয়ানস্টপ সার্ভিস চালু, মেয়াদোত্তীর্ণ মাস্টার প্ল্যান বাতিল এবং প্ল্যান অনুমোদনের দীর্ঘ সূত্রিতা বন্ধ করা। গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় বরিশাল নাগরিক অধিকার আন্দোলন এবং এসোসিয়েশন অব বিল্ডিং কনসালেটেন্টস এর উদ্যোগে সিটি কর্পোরেশনের সামনে মানববন্ধন থেকে এ আল্টিমেটাম দেন আন্দোলনকারীরা। গতকাল সকালে সিটি কর্পোরেশনের সামনে তিন মোড় এলাকা থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে সাধারন নগরবাসী থেকে শুরু করে জমির মালিক, ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানের মালিক-শ্রমিক, ইমারত নির্মান শ্রমিকসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করে এর সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন।
বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, একতলা থেকে ছয়তলা পর্যন্ত কিছু প্ল্যান অনুমোদন দেয়া হলেও বেশীরভাগ বহুতল ভবনের প্ল্যান অনুমোদন দেয়া হচ্ছে না। অনুমোদন আনতে গেলে সেখানে নানা ধরনের আইন দেখানো হয়। বিসিসির সাবেক মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর আমলে ঢাকার উত্তর সিটির আইন প্রণয়ন করায় মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। ওই সময় থেকেই শুরু হয় প্ল্যান অনুমোদন নিয়ে টালবাহানা। সেই টালবাহানা আজো চলছে। ধারনা করা হচ্ছিল পরবর্তী মেয়র দায়িত্ব গ্রহণ করলে সেই সমস্যা সমাধান হবে। কিন্তু উল্টো সমস্যা আরো বেগবান করা হয়েছে। ৫ আগস্টের পর বিভাগীয় কমিশনারকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। প্রথমে দায়িত্বে ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার শওকত আলী। তার সময় একাধিকবার মতবিনিময় করা হলেও তিনি ১৯৯৬ সালের আইনের মাধ্যমে প্ল্যান অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নেন। সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২৫ ফুট প্রশস্ত সড়কের পাশে ১০তলা এবং এর বেশী হলে সে ক্ষেত্রে সড়কের প্রশস্ততাও বেশী থাকতে হবে। এছাড়া মাস্টারপ্ল্যানের অজুহাত তুলে এলওসি দেয়ার ক্ষেত্রে রেডজোন, শিল্পাঞ্চল জোন, কৃষিজোন ও ইকোপার্ক দেখিয়ে প্ল্যান অনুমোদন দেয়া হচ্ছে না। অথচ যে সকল স্থানকে এভাবে বিভিন্ন জোন দেখানো হচ্ছে সেখানে অনেক বহুতল ভবন নির্মিত হয়েছে। এছাড়া ১৯৯৬ সালের সকল আইন তারা মানলেও প্ল্যান অনুমোদনের ক্ষেত্রে স্কোয়ার ফুট হিসেবে ইচ্ছেমত টাকা আদায় করছেন। সেখানে কিন্তু আইনে থাকছে না। তাছাড়া প্ল্যান অনুমোদনের জন্য টেবিলের নীচ থেকে টাকা দেয়া হলে সেখানেও আইন প্রয়োজন হয় না। যত আইন প্রয়োগ হচ্ছে বহুতল ভবনের ক্ষেত্রে।

তাদের দাবিকৃত টাকা না দেয়ায় এভাবে অনুমোদন ঝুলিয়ে রাখা হচ্ছে। তাছাড়া প্ল্যান বিভাগের সার্ভেয়ার থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী টাকার বিনিময়ে প্ল্যান অনুমোদন করিয়ে আনছেন। এখন তারা তাদের নির্ধারিত কাজের চেয়ে প্ল্যান অনুমোদনে বেশী ব্যস্ত সময় কাটায়। তাদের কাছ থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরেও এর ভাগ যাচ্ছে বলে একাধিক প্রমাণ রয়েছে। বিসিসির সাবেক মেয়র মজিবর রহমান সরোয়ার, শওকত হোসেন হিরন ও আহসান হাবিব কামালের আমলে প্ল্যান অনুমোদনে কোনো সমস্যা হয়নি। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে প্ল্যান অনুমোদন দেয়ায় ওই আমলে নগরীতে সবচেয়ে বেশী বহুতল ভবন নির্মিত হয়। তারা প্রচলিত আইন অনুযায়ী বহুতল ভবন নির্মানের অনুমোদন দেন। এ ক্ষেত্রে বিভাগীয় শহরের কিছুটা হলেও সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি পায়। প্ল্যান অনুমোদনের যাতাকলে দীর্ঘদিন ধরে বহুতল ভবন নির্মান করা যাচ্ছে না। এতে করে এর সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ডেভেলপাররা আর্থিকভাবে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। তাদের অফিস চালিয়ে রাখতে পারছেন না। এমনকি ভবনের সাথে জড়িত অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ী, নির্মান শ্রমিক, বিদ্যুত, স্যানিটারী শ্রমিকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ থেকে উত্তরণে ২০২০ সালের আইন প্রয়োগের দাবি জানান তারা। এদিকে দেড় বছর ধরে বিভিন্ন আইনে আটকে রাখা হয়েছে ১২শ’ প্ল্যান। ওই প্ল্যানের জন্য বারবার তাগিদ দেয়া হলেও নানা অজুহাত তুলে প্ল্যান পাশ করছে না সিটি কর্পোরেশন। এ কারনে প্ল্যান অনুমোদনে আন্দোলন শুরু করেছেন জমির মালিক থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক ও শ্রমিকরা।