ঢাকাবৃহস্পতিবার , ৯ জানুয়ারি ২০২৫

বরিশালে ইউএনওর স্বাক্ষর জাল করে প্রধান শিক্ষকের ৩৪ লক্ষ টাকার বিল ভাউচার 

ক্রাইম টাইমস রিপোর্ট
জানুয়ারি ৯, ২০২৫ ১২:৪২ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিজস্ব প্রতিবেদক  :: বরিশালে ইউএনওর স্বাক্ষর জাল করে প্রধান শিক্ষকের ৩৪ লক্ষ টাকার বিল ভাউচার।

বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের পূর্ব ধামসার গ্রামের ঐতিহ্যবাহী সোনার বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় বিতর্কিত প্রধান শিক্ষক মোঃ নুরুল হক সর্দারের বিরুদ্ধে সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাখাওয়াত হোসেনের স্বাক্ষর জাল করে ৩৩ লক্ষ ৪০ হাজার ৯৫ টাকার বিল ভাউচার সাবমিট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আলী সুজা উজিরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাসনাত জাহান খান কে তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করেন।

অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ প্রধান শিক্ষক গত ২০১৬ সালে এক ছাত্রীর সাথে অসামাজিক ও অশ্লীল ভিডিও ভাইরাল হলে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝুমুর বালা তার বেতন ভাতা বন্ধ করে দেন। একই ঘটনায় তিনি ২০২৩ সালে সোনার বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর সাথে অসামাজিক ও অশ্লীল আচরণ করলে তার ভিডিও ভাইরাল হয়। এই প্রেক্ষিতে স্থানীয় জনতা ও স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। পরে তিনি ২০২৪ সালের মাঝামাঝি পুনরায় বিদ্যালয় যোগদান করেন। এরপরে নিজেই বিগত দিনের বেতন ভাতা সহ ৩৩ লক্ষ ৪০ হাজার ৯৫ টাকার একটা ভূতুরে বিল তৈরি করে রেজুলেশন করে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাখাওয়াত হোসেনের স্বাক্ষর টেম্পারিং এর মাধ্যমে জাল করে শিক্ষা অধিদপ্তরে সাবমিট করেন। এ বিষয়টি জানাজানি হলে সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান এত বড় বিলে তিনি স্বাক্ষর করেননি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন তিনি বর্তমানে পিরোজপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তিনি গত বছর ৫ নভেম্বর উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব অর্পণ করেন। সোনার বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও বিতর্কিত এই শিক্ষক তিন নভেম্বর স্বাক্ষর জাল করে সাবমিট করেন। টেম্পারিং এর মাধ্যমে স্বাক্ষর করার বিষয়ে প্রধান শিক্ষক বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেন।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান জানান, সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করার বিষয়টি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত। সোনার বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য আব্দুল লতিফ মোল্লা জানান, একজন প্রধান শিক্ষকের কাজ থেকে এ ধরনের দুর্নীতি ও জালিয়াতি কোনভাবেই মানা সম্ভব না এর বিচার হওয়া উচিত। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী সুজা জানান, সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাখাওয়াত হোসেনের স্বাক্ষর জালিয়াতি ও বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক হওয়ার ক্ষেত্রে নিঃশণাক্ত জালিয়াতি বিষয়ে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার ভূমি হাসনাত জাহান খান কে তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। বিষয়টি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।