জসিম জিয়া :: বরিশাল গণপূর্ত বিভাগের উপ সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন। সরকারি চাকরি পেয়েই কোটিপতি বনে গেছেন আওয়ামী লীগ পরিবারের এ সন্তান। গত ১৫ বছরে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। গাড়ী-বাড়ী, বিলাসবহুল হোটেল, মার্কেট ছাড়াও আছে কয়েক কোটি টাকার জমি। অথচ সরকারি এ কর্মকর্তা বর্তমানে মাসে সবমিলিয়ে বেতন তুলছেন সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা।
বর্তমান দ্রব্যমূল্যের বাজারে এ টাকা দিয়ে যেখানে সংসার চালানোই কষ্টকর সেখানে তিনি এত অর্থ-সম্পদের মালিক কিভাবে হলেন এমন প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক। এভাবে শুধু মামুনই নয় সরকারি এ দপ্তরের বেশিরভাগ কর্মকর্তারাই সুউচ্চ ভবনের মালিক। যাদের মধ্যে আছেন উপ সহকারী প্রকৌশলী বিধান চন্দ্র মজুমদার, ওবায়দুল হক, ইউসুফ আলী, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী কামাল হোসেন হাওলাদার, মনিরুল ইসলামসহ অনেকে।
আব্দুল্লাহ আল মামুন চাকরিতে যোগদান করেন ২০১০ সালে। সে হিসেবে তার বর্তমান চাকরির বয়স ১৫ বছর। এই সময়ে তিনি সবমিলিয়ে বেতন তুলেছেন ৯০ লাখ টাকারও কম। সংসার খরচের পর এ টাকা থেকে কিছু অবশিষ্ট থাকার কথা না। অথচ তিনি নগরীর বাংলাবাজার এলাকায় সাড়ে ৭শতাংশ জমির উপর গড়ে তুলেছেন ৬তলা বিশিষ্ট বিলাসবহুল বাড়ী। জমি কেনা এবং বাড়ী নির্মানে ব্যয় হয়েছে ১০ কোটি টাকার উপরে। এছাড়া গ্রামের বাড়ী বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার গুলিশাখালীতে তিনতলা বিশিষ্ট মার্কেট, কুয়াকাটায় করেছেন বিলাসবহুল হোটেল। এর বাইরে পটুয়াখালীর পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকায় কিনেছেন কয়েক কোটি টাকার জমি। স্ত্রী ও সন্তানরা চলেন ৩০ লাখ টাকা দামের গাড়ীতে। উপ সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুনের স্কুলশিক্ষক বাবা আব্দুল হক মিয়া আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত। তার আপন চাচা নুরুল হক গুলিশাখালী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য।
নগরীর ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত গাজী মিলনায়তের পাশে ৯ তলা ভবন করেছেন উপ সহকারী প্রকৌশলী বিধান চন্দ্র মজুমদার। জমি কেনা থেকে শুরু করে বাড়ী নির্মানে খরচ হয়েছে ১৫ কোটি টাকার বেশি। অথচ তিনি বর্তমানে সবমিলিয়ে মাসে বেতন পাচ্ছেন ৬০ হাজার টাকার কাছাকাছি।
নিজের নামে নগরীর ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউনিয়া বিসিক এলাকায় কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে ৫তলা ভবন করেছেন উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম। শ্বশুর ও স্ত্রীর নামে বিভিন্ন এলাকায় কোটি কোটি টাকার সম্পদ। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দীন সড়কে ৬ তলা ভবন করেছেন উপবিভাগীয় প্রকৌশলী কামাল হোসেন হাওলাদার। ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত লালার দিঘির পাড়ে ৫তলা বাড়ী করেছেন উপসহকারী প্রকৌশলী ওবায়দুল হক। রুপাতলী হাউজিং এ ৫ তলা ভবন আছে অপর উপ সহকারী প্রকৌশলী এইচএম ইউসুফের।
অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনকারী এসব কর্মকর্তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। একাধিকবার তাদের ব্যবহৃত মুঠোফোনে কল দেওয়া হয়। কিন্তু তারা রিসিভ করেননি। অফিসে গিয়ে কথা বলতে চাইলে সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর সটকে পড়েন।