স্টাফ রিপোর্টার :: বরিশালে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণের অভিযোগে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান রুহুল আমিন হাওলাদার ও তার স্ত্রী নাসরিন জাহান রত্না আমিনসহ ৩০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলাটি করেন মো. সুলতান খান নামে এক ব্যক্তি। ঘটনার প্রায় সাত মাসের মাথায় মামলাটি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে সুলতান হোসেন খান নিজেকে বৈষম্যবিরোধী সাংবাদিক ফোরামের আহ্বায়ক হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। তিনি নগরীর দক্ষিণ আলেকান্দা, সিঅ্যান্ডবি রোডের নম্বর পুল এলাকার বাসিন্দা ইসকান্দার আলী খানের ছেলে।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সকালে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান।
মামলায় পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামিম, বরিশাল-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ, বরিশাল-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও রুহুল আমিন হাওলাদারের স্ত্রী নাসরিন জাহান রত্না আমিন, বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ, সাবেক মেয়র আবুল খায়ের খোকন সেরনিয়াবাত ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা বলরাম পোদ্দার, মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক (বহিষ্কৃত) মাহমুদুল হক খান মামুন, সাবেক মেয়রপত্নী লুনা আবদুল্লাহসহ ১৫১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, আসামিরা গত বছরের ১৭ জুলাই বিকেল ৫টার দিকে নগরীর নথুল্লাবাদ জিয়া সড়ক ব্রিজের ঢালে রাস্তার ওপর পূর্বপরিকল্পিতভাবে রামদা, চাপাতি, লোহার রড, হকিস্টিক, পাইপগান, পিস্তল, শটগান, বন্দুক, রাইফেল, ককটেল, হাতবোমাসহ বিস্ফোরক দ্রব্যাদি নিয়ে আন্দোলনকারী ছাত্র ও জনতার ওপর আক্রমণ করে। হত্যার উদ্দেশ্যে তাদের হাতে থাকা অস্ত্র দিয়ে গুলিবর্ষণ করে। এতে ৩০০-৪০০ জন আহত হন। এ ছাড়া প্লাস্টিকের বোতল থেকে পেট্রোল ঢেলে বিভিন্ন দোকান ও অন্যান্য স্থানে আগুন দেয় এবং ছাত্র-জনতার ওপর ইটপাটকেল, ককটেল বোমা নিক্ষেপ করে। তাদের নিক্ষিপ্ত একটি বোমা বাদীর সামনে বিস্ফোরিত হলে তিনিসহ বেশ কয়েকজন আহত হন।
আসামিদের ভয়ে আহতরা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে স্থানীয় বিভিন্ন ফার্মেসি ও পল্লি চিকিৎসকের মাধ্যমে চিকিৎসা করান। মামলার ১ নম্বর সাক্ষী বাদীর ভাগনে রাকিবুল্লাহ আহসান গুরুতর হওয়ায় প্রথমে তাকে বরিশালের শেবাচিম হাসপাতালে, পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর ইস্পাহানী ইসলামি আই ইনস্টিটিউট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে চিকিৎসকের পরামর্শে বাসায় চিকিৎসাধীন আছেন। আহত রাকিবুল্লাহ আহসান চিকিৎসার জন্য ঢাকায় অবস্থান করায় মামলা দায়েরে বিলম্ব হয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, বাদীর এজাহারটি রেকর্ড করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আসামিদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনসহ হত্যাচেষ্টার ও জনমনে ভিতি সঞ্চয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে।