নিজস্ব প্রতিবেদক :: তালতলীতে প্রকাশ্যে সন্ত্রাসীদের অস্ত্র মহড়া
১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করে আদালতের নিষেধাজ্ঞাকৃত জমিতে ঘর তোলার চেষ্টা করে একদল ভাড়াটে সন্ত্রাসী। এসময় স্থানীয় বনি আমিন নামের একজন ঘর তুলতে বাঁধা দেওয়ায় লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে তার ডান পা ভেঙে দেয় ওই ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা। তবে এলাকাবাসীর প্রতিরোধের মূখে পিছু হটতে বাধ্য হয় তারা। ঘটনাটি বরগুনার তালতলী উপজেলার ৫নং বড়বগী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ছোট ভাইজোড়া গ্রামের।
ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, ১৯৯০ সালে ২৬৯০ নং মিস কেসের মাধ্যমে তৎকালীন আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতি সাপেক্ষে ১৯৯০ সালের ০৫ই জুন আমতলী সাব রেজিস্ট্রার অফিসের ৩২৯১,৩২৯২,৩২৯৩ নং দলিলের মাধ্যমে রেকর্ডীয় মালিক চাথোউ মাতুব্বর, নোমাফ্রু মগ্নি, মনথেন মগ, চুথিন, আফ্রুশে মগ্নি তালতলী উপজেলার ২৫৯ খতিয়ানের ৩৫৭৫, ৩৫৭৬, ৩৫৯৯, ৩৫৯৭, ৩৫৯৮, ৩৬০০, ৩৬০১ দাগে ২ একর ১০ শতাংশ ছোট ভাইজোড়া এলাকার জমি শাহ আলম মিস্ত্রি, জামাল হাং, রফিক, দুলাল, ইব্রাহিম, আম্বিয়ার নামে সব কবলা দিয়ে যান। কবলাদারগণ প্রায় ৩৩ বছর যাবৎ ভোগ দখল করে আসছিলো। বিরোধীয় জমিতে বরগুনা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি ১৪৪ ধারার মামলা চলমান আছে। বিরোধীয় জমিতে কোন পক্ষকে অবৈধ প্রবেশ করতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আদালত।
শুক্রবার (১০ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে হঠাৎ করে তালতলী পাড়া এলাকার মৃত ছোট ভাইজোড়া এলাকার মৃত অম্বাসিন মগের মেয়ে মাখেন ও তালুকদার পাড়া এলাকার লুফ্রু মগের মেয়ে তেজে ওরফে মাসেজেন উল্লেখিত খতিয়ানের জমি নিজেদের পৈত্রিক সম্পত্তি দাবী করে একটি টিনের ঘর তৈরি করতে আসে। এসময় কবলাদার শাহ আলম মিস্ত্রির ছেলে বনি আমিন এসে বাধা দিলে ছোট ভাইজোড়া এলাকার সেরাজ গাজীর ছেলে সোবাহান গাজীর নেতৃত্বে খবির তালুকদারের ছেলে হাসান তালুকদার, সোবাহান আকনের ছেলে মাসুম বিল্লাহ, মিরাজ, সোবাহান গাজীর ছেলে মোস্তফা, মেনাজ আকনের ছেলে সোবাহান আকন, খবির তালুকদারসহ প্রায় ১৪-১৫ ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে দিনের আলোতে বগি দাও, লোহার পাইপ, বাশের লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্রের মহরা দিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে বনি আমিনদের ডান পা ভেঙে দেয় সন্ত্রাসীরা।
এ সময় বনি আমিনের ডাক চিৎকারে এলাকার লোকজন ছুটে এসে ঔই সকল ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলে, এলাকাবাসীর তোপের মুখে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা।ঘটনার বিষয় মোবাইল ফোনে ঘটনার বিষয় তালতলী থানায় জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বাড়িতে গিয়ে অভিযুক্ত সোবাহান গাজীকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি, তবে তার স্ত্রী রিনা বেগম মারধরের কথা স্বীকার করে সোবহান গাজী আমতলীতে আছে বলে জানান।
অভিযুক্ত সোহাবান গাজী মোবাইল ফোনে ভাড়াটে সন্ত্রাসীর বিষয়ে মখেনা মগ্নির জানেন বলে জানান।
মারধর ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কথা অস্বীকার করে আদালতের নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে জানেন না তার বোন জানে বলে জানান মখেনা মগ্নী।
জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের কথা জানিয়ে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম মিলন।
দিনে দুপুরে প্রকাশ্যে এমন অস্ত্রের মহড়া ও মারধরের ঘটনায় আতঙ্কিত বলে জানিয়েছেন ছোট ভাইজোড়া গ্রামের সাধারণ মানুষ। এইসব দুর্ধর্ষ ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবী জানান তারা।